সেবাখাতে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বর্তমান সরকারের আমলে সারাদেশের হাসপাতালগুলোতে নার্সদের ঘাটতি পূরণের জন্য প্রায় ৩৩ হাজারেরও বেশি নার্স ইতিমধ্যে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ১০ হাজার নার্সের পদ সৃজনসহ ৫ হাজার ৭৫ জন সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ এবং শূন্যপদসহ ৮ হাজার ২৮৮ জন নার্সের পদায়ন সম্পন্ন করেছেন। দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ৫ হাজার মিডওয়াইফের পদ সৃজন ও ১ হাজার ৪০১ জনের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।

পেশাগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে প্রায় ৩ হাজার নার্সকে ফাউন্ডেশন প্রশিক্ষণ এবং ৮০০ নার্সকে প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোলসহ আরও অন্যান্য বিষয়ের উপরে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। ২০২১-২২ অর্থবছরে অপারেশনাল প্ল্যানের অধীনে আইসিইউ, আইপিসি, পেডিয়াট্রিক নার্সিং, জেরিয়াট্রিক নার্সিং, ফাউন্ডেশন, ইংরেজি ভাষা, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ, অর্থ ব্যবস্থাপনা প্রশিক্ষণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে এবং প্রশিক্ষণ সারাদেশব্যাপী চলমান। প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নার্সিং কর্মকর্তাদের আরও দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সেবা বিভাগের আওতাধীন নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর।

সম্প্রতি, একজন নার্স কর্মকর্তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেওয়া স্ট্যাটস নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের দৃষ্টিগোচর হলে তাৎক্ষণিকভাবে ২০১৩ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত নার্সদের ওরিয়েন্টেশন ট্রেনিংয়ের বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশে যে কয়টি প্রতিষ্ঠান দিন-রাত পরিশ্রম করে জনগণের স্বাস্থ্য সেবার মান অক্ষুণ্ণ ও নিরবচ্ছিন্ন রেখেছে সেগুলোর মধ্যে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর। এমনকি ২০১৩সালে নার্সদের বয়স প্ররিমার্জন করে বিপুল সংখ্যক নার্সদের নিয়োগ প্রদান করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নার্স-দরদী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চেয়ে ছিলেন বাংলাদেশের নার্সদের চাহিদা কিছুটা পূরণ হলে নার্সরা বিশ্বের বিভিন্নদেশে গিয়ে একজন দক্ষ কর্মী হিসেবে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন। ইতোমধ্যে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ নার্সদের মধ্যপ্রাচ্যসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে প্রেরণ করার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে সারা বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর অবস্থা যখন নাজুক সে সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঠিক দিক-নির্দেশনায় আমরা সব বাঁধা জয় করতে সক্ষম হয়েছি। কোভিড-১৯ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে। আমাদের নার্স ও মিডওয়াইফগণ নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সেবায় নির্ভীক সৈনিক হিসেবে নিজেদের সর্বদা নিয়োজিত রেখেছেন। এটা আনন্দের বিষয় যে, মুজিববর্ষে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি খাতে ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বাংলাদেশে বিশ্বমানের নার্স ও মিডওয়াইফ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নার্সিং ও মিডওয়াফারি অধিদপ্তরের গৃহীত ও বাস্তবায়িত কার্যক্রম সমূহ সর্বস্তরে প্রশংসিত হয়েছে। দেশের জনগণের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিতকরণে তথা মাতৃ-মৃত্যু হার ও শিশু-মৃত্যু হার কমানোর ক্ষেত্রে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের গৃহীত কার্যক্রমের ভূয়সী প্রশংসা করেন।

নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার বলেন, নার্সিং পেশা দেশ-বিদেশে সমাদৃত। বিদেশে নার্সদের চাহিদা ও গুরুত্ব অনেক। এটি একটি সম্ভাবনাময় খাত। আমাদের দেশে নার্সিং শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রতিবছর প্রায় ৩২ হাজার নার্স পাস করে বের হয়। এই বিশাল সংখ্যক নার্স দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশে নার্সদের কাজের সুযোগ তৈরি করা এখন সময়ের দাবি। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর এ বিষয়ে অনেক আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

এ বিষয়ে কথা হয় বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ঢামেক হাসপাতাল শাখার সভাপতি মোহাম্মদ কামাল হোসেন পাটওয়ারীর বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের সকল পর্যায়ে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ও সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সরকার নিরলসভাবে কাজ করছে। সারাদেশে হাসপাতালগুলোতে নার্সদের ঘাটতি পূরণের জন্য বর্তমান সরকারের আমলে প্রায় ৩৩ হাজার নার্স নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তার নির্দেশনায় নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তর এগিয়ে যাচ্ছে। এই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার, পরিচালক এবং কর্মকর্তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের নার্সিং শিক্ষা ও সেবা খাতে আমূল পরিবর্তন করে আধুনিক ও ডিজিটাল গড়ে তুলেছেন।

স্বাধীনতা নার্সেস পরিষদ (স্বানাপ) এর মহাসচিব মো. ইকবাল হোসেন সবুজ বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারই বাংলাদেশের নার্সদের একমাত্র আপনজন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন নার্সদের উন্নতি হতেই থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন অগ্রযাত্রা এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টপ্রশাসন অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তার নার্সদের উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) সিলেট এম.এ. জি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল শাখার সাধারণ সম্পাদক ইসরাইল আলী সাদেক বলেন, বর্তমান সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী চিন্তায় নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরকে আধুনিক ও যুগোপযোগী করার কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে অধিদপ্তরের বর্তমান মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সিদ্দিকা আক্তার নিরলসভাবে কাজ করছেন। প্রশিক্ষণ বিকেন্দ্রীকরণসহ, দালালমুক্ত বদলি কার্যক্রমসহ নার্সিংবান্ধব নানা কার্যক্রমের জন্য তিনি দেশের নার্সিং সমাজের কাছে প্রশংসিত হচ্ছেন। এতে অধিদপ্তরের সেবার মানও বৃদ্ধি পেয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জান্নাত আরা শিমুল বলেন, বর্তমান সরকার নার্স বান্ধব সরকার এ সরকারের আমলে নার্সদের উন্নয়ন সম্ভব। আমি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বাস্থ্য মন্ত্রী জাহিদ মালেক এমপি, ও নার্সিং ও মিডওয়াইফারি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সিদ্দিকা আক্তারকে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.