অনন্তলোক! জসিম মল্লিক
মা বলত তুমি একটা পাখি। এই দেখি, এই দেখি নাই। তারপর মা কাঁদত। পাখি কি কখনও খাঁচায় ফেরে? ছোটবেলায় আমার মেঝভাই কবুতর পুষত। বারান্দার ওপরে লটকানো কাঠের বাক্সের ঘরে রোজ ফিরে আসত কবুতরেরা। গৃহি পাখি। মানুষকে পুষল কে? মানুষ নিজেই কি নয়? সে ঘর বানাল, কপাট বানাল, নিজেকে পুরল তার মধ্যে। কিন্তু গৃহের মধ্যে কী আশা করে মানুষ? নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা, স্বস্তি, নির্ভরতা, স্নেহ? আবার এই তার নিজস্ব ঘর তাকে পৃথিবী থেকে খানিকটা আলাদাও করে দেয় না?
মানুষ কি ভাবতে শেখে না, এই ঘর আমার, এই বাড়ি আমার, অন্য ঘর-বাড়িগুলো আমার নয়? অন্য ঘরবাড়ি উডুক, পুরুক, আমারটা থাকলেই হল। মানুষ এইভাবেই কি ক্রমে উদাসীন হয়ে যায় ঘরের বাইরের পৃথিবীর প্রতি? অন্য সকলের প্রতি? ঘর বাড়ি, দালান কোঠা নিয়ে আমার কোনো অবসেশন নাই। কবুতরের ঘর ছিল আমার কোনো ঘর বাড়ি নাই। সর্বত্র্য অস্থায়ী ঠিকানা আমার। বরিশাল থেকে ঢাকা, তারপর টরন্টো। ঘুর্ণায়মান এক জীবন। একদিন আবার ঠিকানা বদল হবে, একদিন অনন্তলোকে হবে চিরস্থায়ী ঠিকানা।
বৱিশাল ২১ জানুয়াৱি ২০২২