মর্মের মর্মর । মুহম্মদ নূরুল হুদা

0

মর্মের মর্মর
মুহম্মদ নূরুল হুদা

সময়সন্তান তুমি সর্বসঙ্গী জননীজনক
নিয়ত নিষিক্তচিত্ত বিবর্তিত ধমনী ধনুক,
শুরু থেকে শুরু আর শেষ থেকে শেষ
দৃশ্যের অদৃশ্যে তুমি বিদ্ধ করো অসঙ্গের বুক;

যেতে যেতে পেতে চাও
কোনোকালে পাবে না যা আর,
সন্ন্যাসে মেলে না মুক্তি, না-মুক্তি সংসার;
পঞ্চভূতে মুক্ত হয়ে সর্বভূতে আত্মপরিত্রাণ,
আদিবিস্ফোরণে যুক্ত পূতপদ্মঘ্রাণ—
সময়সন্তান তুমি সর্বসঙ্গী জননীজনক
দৃশ্যের অদৃশ্যে তুমি বিদ্ধ করো অসঙ্গের বুক।

সুসঙ্গের সঙ্গে সন্ধি, নিজেই নিজের সঙ্গী,
নৈসঙ্গের আলো জ্বেলে পেতেছো তমসা;
আয়ত্ত করেছো তুমি উদয়াস্ত ঊষাভঙ্গি,
ত্রিভুবনে আলো আর আঁধার ভরসা।
কে কার আগে বা পরে, কে যে বেশি ভালো,
এ নিয়ে করে না তর্ক তমসা বা আলো।
যখন যাকেই পাও, তাই দিয়ে জ্বালো,
ত্রিজগৎ সলতে করে আপনাকে জ্বালো।
আঁধারে আঁধার ঘষো, আলোকে আলোক,
আলোকে আঁধার মিশে শুধু আলো হোক।

আঁধার আলোকে ডাকে, আলোকে আঁধার
এই নিয়ে তরঙ্গের অঙ্গে অঙ্গে অনঙ্গ সংসার,
একার ভিতরে দেখা কুহু আর কেকা,
জীবাজীবে স্বর্গে-মর্ত্যে
সময়ের সঙ্গে শুধু সময়ের দেখা।
সময়সন্তান তুমি সর্বসঙ্গী জননীজনক
দৃশ্যের অদৃশ্যে তুমি বিদ্ধ করো অসঙ্গের বুক।

মুখাপেক্ষী সকলের, সর্বসিদ্ধ সকলের চোখে,
মুহূর্তেই বিনিময় কালান্তরে লোক থেকে লোকে;
নিজের ভেতরে ঢুকে দেখে ফেলো অন্যের লালন,
বিজিতের বুকে চেপে কার আজ বৃথা আস্ফালন?
কে অর্জুন, আলী হায়দর, কে প্রমিথিউস,
কে আছে সমুদ্রখাজা, ওলিম্পীয় অজেয় জিউস?
জয় দিয়ে পরাজয় মাপা আর যায় না সহজে,
সৃষ্টি যদি স্বরক্ষিত, সৃষ্টির গরজে;
তোমার সমান তুমি, তার চেয়ে বড় নেই কেউ,
সমুদ্র বিশাল বড়, ছোট নয় সমুদ্রের ঢেউ।

সতৃষ্ণ তরঙ্গে তুমি ধাবমান তরঙ্গসমান
সময়সমুদ্রে জাগি তুমি-আমি, সর্বভূতে সর্বপরিত্রাণ।
সময়ের সঙ্গে আছো, সময়ের সঙ্গে থাকো সুরক্ষাসন্তান
মর্মের মর্মরে তুমি জীবাজীবে সর্বঘ্রাণ, অভিন্নপরাণ।
১০.১১.২০২০

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.