ফেরা। মুহাম্মদ নূরুল হুদা

0

ফেরা
মুহম্মদ নূরুল হুদা

এই ফেরা ঘরে ফেরা,
অনন্তকালের ফেরা,
এই ফেরা ফিরে এসে ফিরে যাওয়া নয়,
ত্রিভুবন ঘুরে ফিরে অবশেষে নিজনীড়ে
ফিরে এসে ভিন্ন নীড়ে ফিরে যাওয়া নয়;

নীড় সে তো জন্ম-নীড়,
বঙ্গভুমি পদ্মাতীর
মধুমতি বাগিয়ার তীরে টুঙ্গিপাড়া;
চিরবিজয়ীর ফেরা, প্রাণে প্রাণে জাগে সাড়া,
মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ের চূড়ান্ত নাকাড়া।

কে কাকে করছে বন্দি,
বাঙালি করে না সন্ধি,
জাতিপিতা মুজিবের প্রমুক্ত তর্জনী;
যুদ্ধে যুদ্ধে নয় মাস, শত্রুদের সর্বনাশ,
স্বাধীনতা বাঙালির অনন্ত অর্জনী।

পঁচিশে মার্চের রাতে
কে যে বন্দি কার হাতে,
কখনো বোঝেনি কোনো হানাদার সেনা,
তাঁরা ছিল তাবেদার, দালাল বা রাজাকার,
তারা ছিল স্বৈরাচারী ইয়াহিয়ার কেনা।

দখলপ্রভুরা ভাবে
এভাবেই দিন যাবে
চিরকাল দখলকার পেয়ে যাবে পার;
বাঙালি বিচ্ছুর হাতে, মার খেয়ে দিনে রাতে
পেলো নাতো তারা আর পথ পালাবার।

নিয়াজির খাকি ঘাঁটি
চেয়েছিলো পোড়ামাটি,
এ বাংলায় হোক সব বাঙালি খতম;
‘মুক্তি’র মারের চোটে
মুখে কথা নাহি ফোটে
বন্ধ হয় জেনারেল নিয়াজীর দম।

রেসকোর্সে হেরে রেস
পাকসেনাবাজি শেষ,
করজোড়ে সমর্পণ বাঙালির কাছে;
বন্দির কাছেই বন্দি
ইয়াহিয়া মাগে সন্ধি —
মারের পরেও ঠিক শেষ মারে আছে।

জগৎ দেখলো সব
মুক্তপক্ষ কলরব
জাতিপিতা মুজিবের সমুন্নত শির,
মিথ্যা নিত্য মিথ্যা রয়
সত্য নিত্য সত্য হয়
মুজিব সত্যের সাক্ষী, চিরজয়ী বীর।

কবর তো খোঁড়া ছিল,
কে কাকে কবর দিল,
জগৎ অবাক চোখে নিলো সেই পাঠ;
বিলাত ও দিল্লি ছুঁয়ে
নামলো নিজের ভুঁয়ে
বহতা বাঙ্গাল ঘাটে বাঙ্গাল সম্রাট।

আবার বাঙ্গাল মাঠে
দাঁড়ালো বাঙ্গাল ঠাটে
বাঙালির চিরজয়ী জনক মুজিব,
এ বাংলার সব নদী
বয় নিত্য নিরবধি
মাঠে মাঠে ফসলেরা ফলন্ত সজীব।

ধানের গানের দেশ,
বিমূর্ত মূর্তের দেশ,
এই দেশে সব ঘর মিলে এক ঘর;
মাটিঘর জাতিঘর
বাঙালির বাতিঘর
নিজেই নিজের ঘরে এখন মুজিব।
নিজেই নিজের ঘরে এখন মুজিব।
নিজেই নিজের ঘরে এখন মুজিব।

এই ফেরা
ঘরে ফেরা
অনন্তকালের ফেরা,
এই ফেরা ফিরে এসে ফিরে যাওয়া নয়;
ঘর মানে পরিবার,
সংবিধান সরকার,
জয় হোক সমতার
জয় হোক মমতার
জয় হোক
জয় হোক
জয় হোক
জয়।

[১০ জানুয়ারি ২০২১]

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.