ধামরাই উপজেলায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ‘‘একীভূত শিক্ষা বাস্তবায়নে শিক্ষক মন্ডলীর ভুমিকা’’শীর্ষক দু’টি ভার্চুয়াল কর্মশালা অনুষ্ঠিত

0

নিজস্ব প্রতিনিধি : অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর আয়োজনে এবং মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও ইউকেএইড এর অর্থায়নে “ইনক্লুশনঅবপারসন্স উইথ ডিজএ্যাবিলিটি থ্রু কমিউনিটি বেইজ্ডইনিসিয়েটিভ (আইপিডি-সিআই)”প্রকল্পের আওতায় ঢাকা জেলার ধামরাই উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫০ জন শিক্ষকের সঙ্গে ‘‘একীভূত শিক্ষা বাস্তবায়নে শিক্ষক মন্ডলীর ভুমিকা’’শীর্ষক দুইটি ভার্চুয়াল কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। কর্মশালার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং অ্যাকসেস বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা প্রদান করেন আয়োজক সংস্থার নির্বাহী পরিচালক আলবার্ট মোল্লা।

কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইনডিপেন্ডেন্ট কনসাল্টটেন্ট মোঃ মনোয়ারুল ইসলাম মামুন। তিনি বাংলাদেশে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তির অধিকার ও সুরক্ষা আইন, ২০১৩ এর আলোকে প্রতিবন্ধিতার সংজ্ঞা, প্রতিবন্ধিতার ধরণ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ভর্তি সংক্রান্ত বৈষম্যের প্রতিকার, বৈষম্য নিষিদ্ধকরণ ও ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং অপরাধ ও দন্ড বিষয়ে উদহারণসহ ব্যখ্যা দেন। এছাড়াও নিউরো – ডেভেলপমেন্টাল প্রতিবন্ধী সুরক্ষা ট্রাষ্ট আইন-২০১৩ ও জাতিসংঘ ঘোষিত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার সনদ (ইউএনসিআরপিডি) তে উল্লেখিত একীভূত শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, একীভূত শিক্ষা ব্যবস্থা হলো যেখানে প্রতিবন্ধী ও অপ্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীরা একসাথে লেখাপড়া করে। পরবর্তীতে এসডিজিতে উল্লেখিত শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে এসডিজি এর প্রেক্ষাপট ও শিক্ষার লক্ষ্য নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং জাতীয় কর্ম পরিকল্পনায় উল্লেখিত প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের শিক্ষা, শিক্ষা নীতিমালা-২০১০ সহ সরকারের বিভিন্ন পরিপত্র নিয়ে আলোচনা করা হয়।
উন্মুক্ত আলোচনায় উপস্থিত শিক্ষকদের মধ্যে বক্তব্য দেন মোঃ সোলায়মান হোসেন, মো: আশরাফুল আলম, মোঃ উসমান গণি, মোঃ নূরুজ্জামানসহ প্রমুখ। তাদের আলোচনায় একীভূত শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়নে কিছু প্রতিন্ধকতা উঠে আসে – শিক্ষকদের যথাযথ প্রশিক্ষণের অভাব, শিক্ষকদের প্রতিবন্ধী ব্যক্তি সম্পর্কে যথাযথ ধারণার অভাব, বিদ্যালয়ে র‌্যাম্প না থাকা আবার র‌্যাম্প থাকলেও সঠিক মাপে না থাকা, টয়েলেট প্রতিবন্ধী ব্যক্তিবান্ধব না হওয়া, বিদ্যালয়ে ইশারা ভাষায় প্রশিক্ষিত শিক্ষক না থাকা, দৃষ্টি প্রতিবন্ধী ছাত্র/ছাত্রীদের ব্রেইল বই, ডিজিটাল মাল্টিমিডিয়া বই,এক্সেসিবল ই- বুক সরবরাহ না থাকা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের সচেতনতার অভাব, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ব্যঙ্গ নামে ডাকা, স্কুলের সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া ও বিনোদন কর্মকান্ডে প্রতিবন্ধী ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহন না করানো ইত্যাদি।
সমস্যা সমাধানে যেসব সুপারিশ উঠে আসে – প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সামনের সারিতে বসতে দেওয়া, শ্রেণিকক্ষে তার প্রয়োজনমত আলোর ব্যবস্থা করা বা জানালার কাছাকাছি বসতে দেওয়া, বোর্ডে কিছু লেখার সময় আংশিক দৃষ্টিসম্পন্ন শিক্ষার্থীর দেখতে সুবিধা হয় এমন আকারের বড় বড় অক্ষরে লেখা এবং একই সাথে মুখে উচ্চারণ করা; জটিল ও দুর্বোধ্য বিষয়ে বেশি সময় দেওয়া ও প্রয়োজনে বারবার বুঝিয়ে দেওয়া, পাঠদান চলাকালীন সময়ে প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী যাতে অস্পষ্ট বিষয়ে পাশের সহপাঠীর মাধ্যমে জানতে পারে তার অনুমতি থাকা ও এ লক্ষ্যে অন্যান্য সহপাঠীদের বুঝিয়ে দেওয়া এবং উৎসাহিত করা, স্কুলের দরজা প্রশস্ত করা, সঠিক পদ্ধতিতে র‌্যাম্প তৈরি করা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী মনে কষ্ট পায় অথবা তাদের ক্ষেত্রে ব্যঙ্গ বিদ্রুপমূলক কোন গল্প, অভিজ্ঞতা, কৌতুক ইত্যাদি হতে বিরত থাকা ইত্যাদি । কর্মশালা দুইটি সমাপনি ঘোষনা করেন অ্যাকসেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশন এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা মহুয়া পাল এবং সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন প্রকল্প সমন্বয়কারী এস, এম, সাইফুর রহমান।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.