রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মাইল ফলক অগ্রগতি রবিবার স্থাপিত হচ্ছে ‘রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল’

0

রফিকুল ইসলাম সুইট: রবিবার স্থাপিত হচ্ছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ ‘রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল’। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিদ্যুৎকেন্দ্রের ইউনিট ১-এ এই রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপনের কাজ উদ্বোধন করবেন। এটি পারমাণবিক বিদ্যুকেন্দ্রের প্রধান অংশ। এর মাধ্যমে প্রকল্পের মাইল ফলক অগ্রগতি সাধিত হতে যাচ্ছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান রোসাটমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এলেক্সে লিখাচেভ, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. নুরুজ্জামান বিশ্বাস এম.পি, সচিব জিয়াউল হাসান, প্রকল্প পরিচালক ড. মো. শৌকত আকবর।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, ‘নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল স্থাপন একটি ঐতিহাসিক বিষয়। এটি রূপপুর বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের জন্য বসানো হচ্ছে।’ ‘নিউক্লিয়ার রিঅ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল এ প্রকল্পের খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। চলতি বছরের মধ্যে আমরা প্রকল্পের ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন করবো। আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিটের কাজ সম্পন্ন করতে পারবো এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে যাবো।

গত ২০১৭ সালের নভেম্বরে এই প্রকল্পের রিয়্যাক্টর ভবনের কংক্রিট ঢালাইয়ের মধ্য দিয়ে মূল কাজ শুরু হয়। এই কাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তখন থেকে এই প্রকল্পে প্রতিদিন প্রায় ২৫ হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক, প্রকৌশলী, বিশেষজ্ঞ কাজ করছেন। এর পরের বছর জুনে প্রকল্পের দ্বিতীয় ইউনিটের কংক্রিট ঢালাই উদ্বোধন করা হয়। ওই সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ রাশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এর পর থেকে পর্যায়ক্রমে প্রকল্পটির কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প রুশ নকশা অনুযায়ী নির্মিত হচ্ছে। প্রকল্পের দুটি ইউনিটেই তৃতীয় প্রযুক্তির বা ‘থ্রি প্লাস’ প্রজন্মের সর্বাধুনিক ‘ভিভিইআর-১২০০ রিঅ্যাক্টর’ স্থাপিত হবে।

বিদ্যুৎকেন্দ্রটি স্থাপনে ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে রাশিয়া ৯০ শতাংশ দিচ্ছে ঋণ হিসেবে, যা প্রকল্পটি বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরুর পরবর্তী ২৮ বছরে পরিশোধ করা যাবে। প্রকল্প ব্যয়ের অবশিষ্ট ১০ শতাংশ অর্থ জোগান দেবে বাংলাদেশ। রূপপুর দুটি ইউনিট থেকে ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে। ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট থেকে ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে সমপরিমাণ বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে। কেন্দ্রটির সব যন্ত্রপাতি তৈরি, সরবরাহ ও নির্মাণে কাজ করছে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান রোসাটম। পরমাণকি বিদ্যুৎকেন্দ্রের যে যন্ত্রে নিউক্লিয়ার ফুয়েল (পারমাণবিক জ্বালানি) বা ইউরেনিয়াম থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হয়, তার মূল কাঠামো হচ্ছে রিয়্যাক্টর। এটিই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রাণ।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.