সিঙ্গাপুর থেকে ৮৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে এলএনজি কার্গো আমদানি হচ্ছে
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা মেটাতে আবার স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। চলতি বছরের ৫ মাসে ১২ কার্গো এলএনজি আমদানি করা হয়েছে। এবার ১৩তম কার্গো আমদানির উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। এক কার্গোতে ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ এলএনজি আমদানি করা হবে বলে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে। আর এ জন্য ব্যয় হবে ৮৮৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। সিঙ্গাপুরভিত্তিক ‘ভিটল এশিয়া’ এই এলএনজি সরবরাহ করবে। সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
সূত্র জানায়, ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন-২০১০ (সর্বশেষ ২০২১ সনের সংশোধনীসহ)’-এর আওতায় মাস্টার সেল অ্যান্ড পারচেজ অ্যাগ্রিমেন্ট (এমএসপিএ) স্বাক্ষরকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্য থেকে কোটেশন সংগ্রহ প্রক্রিয়ায় স্পট মার্কেট থেকে ২০২২ সালের জন্য ১৩তম কার্গো এলএনজি আমদানি হচ্ছে। এর আগে গত সপ্তাহে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ১২তম কার্গো আমদানির অনুমোদন দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ প্রতি মাসে গড়ে দুইটি করে কার্গো এলএনজি আমদানি করা হয়েছে।
জানা গেছে, দেশের ক্রমবর্ধমান গ্যাসের চাহিদা পূরণের জন্য কাতারগ্যাস এবং ওমান ট্রেডিং ইন্টারন্যাশনালের (ওটিকিউ) সাথে দু’টি দীর্ঘমেয়াদি চুক্তির মাধ্যমে এলএনজি আমদানির পাশাপাশি স্পট মার্কেট থেকেও এলএনজি কেনা হচ্ছে। স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনার লক্ষ্যে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এমএসপিএ প্রস্তুত করে আইন ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের ভেটিং নেয়া হয় এবং তা চূড়ান্ত করা হয়। পরে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নীতিগত অনুমোদনের ভিত্তিতে পেট্রোবাংলা এমএসপিএ অনুস্বাক্ষরকারী ১৬টি প্রতিষ্ঠানের সাথে চূড়ান্ত করা এমএসপিএ স্বাক্ষর করে।
সূত্র জানায়, কোভিড-১৯ এর জন্য সরাসরি অথবা কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দরপ্রস্তাব গ্রহণ না করে এলএনজি স্পট পারচেজ (এলএসপি) সফটওয়্যারের মাধ্যমে দরপত্র গ্রহণ করা হচ্ছে। ২০২২ সালে স্পট মার্কেট থেকে কার্গো গ্রহণের জন্য ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে এর আগে প্রথম দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হয়। ওই দরপ্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে পাওয়া দরপত্রগুলো কারিগরি ও আর্থিকভাবে নন রেসপন্সিভ হওয়ায় জানুয়ারি মাসের জন্য অনুমোদিত এক কার্গো এলএনজি আমদানি করা সম্ভব হয়নি।
উল্লেখ্য, ২০২০, ২০২১ ও ২০২২ সালে স্পট মার্কেট থেকে কার্গো গ্রহণের জন্য ওই সফটওয়্যারের মাধ্যমে (১+২১+১৩) ৩৫টি দরপ্রস্তাব আহ্বান করা হয়। এর মধ্যে ২৭টি কার্গো এলএনজি গ্রহণের জন্য সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন নেয়া হয়েছে।
দরপত্রে কারিগরি শর্ত দেয়া হয়েছিল, ১. এমএসপিএর শিডিউলে বর্ণিত এলএনজির গুণগত মান ও হিটিং ভ্যালু অনুযায়ী ৩১ লাখ থেকে ৩২ লাখ এমএমবিটিইউ এলএনজি সরবরাহ করতে হবে; ২০২২ সালের ১১-১২ জুনের মধ্যে এলএনজি সরবরাহ করতে হবে এবং সরবরাহতব্য এলএনজি কার্গোটি দেশে বিদ্যমান দু’টি ভাসমান এলএনজি টার্মিনালে সরবরাহের উপযোগী হতে হবে।
সূত্র জানায়, দরপ্রস্তাবে দু’টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়ে দু’টিই রেসপন্সিভ হয়। দরপত্রে অংশগ্রহণকারী সিঙ্গাপুরভিত্তিক ‘ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেড’ প্রতি এমএমবিটিইউর দাম ২৫.৭৫০০ ডলার উল্লেখ করে সর্বনিম্ন দরদাতা হয়। অন্য দিকে দরপত্রে অংশ নেয়া অপর প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক এক্সেলারেট এনার্জি এলপি প্রতি এমএমবিটিইউর দাম ২৬.৪৬০০ ডলার উল্লেখ করে। দরপত্র মূল্যায়ন কমিটি দরপত্রের সব কিছু অনুসরণ করে সর্বনিম্ন দরদাতা ভিটল এশিয়া প্রাইভেট লিমিটেডের কাছ থেকে এক কার্গো এলএনজি কেনার সুপারিশ করে।
সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদন পাওয়া গেলে চলতি মাসেই এলএনজি আমদানির কাজ শুরু করা হবে বলে সূত্র জানায়।