আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশের কল্যাণে প্রয়োজনীয় সবকিছুই করেছে

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার পুলিশের কল্যাণে যা যা প্রয়োজন সবকিছুই করেছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে আমরা প্রযুক্তিনির্ভর  পুলিশ সেবা বিস্তৃতকরণে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। মঙ্গলবার (৩ জানুয়ারি) ‘পুলিশ সপ্তাহ ২০২৩’ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে এই কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী  বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনীর সব সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

দৈনিক ইত্তেফাকের সর্বশেষ খবর পেতে Google News অনুসরণ করুন

বাংলাদেশ পুলিশের প্রত্যেক সদস্য মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে দায়িত্বপালন করবেন, এই প্রত্যাশা ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি বিশ্বাস করি, আপনারা সততা, নিষ্ঠা ও মানবিকতার সঙ্গে দায়িত্বপালনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের প্রত্যাশিত ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করবেন।

সরকারপ্রধান বলেন, আমরা ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর থেকে গত ১৪ বছরে পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন পদ সৃজন করে, জনবল নিয়োগ করেছি। এছাড়া ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, অ্যান্টি টেরোরিজম ও কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটসহ বেশ কয়েকটি রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন ইউনিট, সাইবার পুলিশ সেন্টার, ব্যাটালিয়ন, ইন-সার্ভিস ট্রেনিং সেন্টার, থানা, তদন্ত কেন্দ্র, ফাঁড়ি এবং জাতীয় জরুরি সেবায় ৯৯৯ ইউনিট গঠন করেছি।

আইজিপির র‌্যাংক ব্যাজ পুনপ্রবর্তন করাসহ নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক চালু, বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।এই তথ্য উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কোভিড-১৯ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় পুলিশ সদস্যগণ নিজেদের জীবন বিপন্ন করে জনসেবার ক্ষেত্রে নজিরবিহীন ভূমিকা রেখেছেন। তারা জঙ্গি-সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে অভিযানে সফলতা অর্জন করেছেন। তারা অব্যাহতভাবে মাদক নির্মূল, সাইবার ক্রাইম, গুজব, মানি লন্ডারিং, মানব পাচার রোধসহ নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত ও রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ, প্রশাসন ও অন্যান্য বাহিনীর সহায়তায় আমরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি অটুট রাখতে পেরেছি। দেশের গণ্ডি পেরিয়ে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনেও আমাদের পুলিশ সদস্যগণ ভূয়সী সম্মান ও মর্যাদা অর্জন করেছেন।

তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে পুলিশ সদস্যগণ ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মুক্তিযুদ্ধের প্রথম প্রহরে রাজারবাগ পুলিশ লাইন্সে ‘থ্রি-নট-থ্রি’ রাইফেল হাতে আধুনিক সমরাস্ত্রে সজ্জিত পাক হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। পাক হানাদার বাহিনী সারদা পুলিশ একাডেমিতে নিরস্ত্র পুলিশ সদস্যদের নির্বিচারে হত্যা করে। যে সব পুলিশ সদস্য মুক্তিকামী মানুষের সঙ্গে কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে দেশকে শত্রুমুক্ত করতে অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী  তাঁদের স্মৃতির প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার আগে ঘাতকদের দোতলায় উঠতে বাধাদানকারী পুলিশ কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমানকে প্রাণ বিসর্জন দিতে হয়েছিল। শুধু তাই নয়, বাঙালি জাতির সেই দুর্বিসহ রাতে মিন্টু রোডে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের সেজো বোনের বাড়িতে ঘাতকেরা নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালানোর পর, রমনা থানার পুলিশ সদস্যগণ সেই বাড়িতে আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসার ব্যবস্থা করায় অনেকেরই প্রাণ রক্ষা হয়েছিল। পুলিশ বাহিনীর সেই গর্বিত সদস্যগণের প্রতিও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি জনবান্ধব, আধুনিক, পেশাদার ও চৌকশ পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলার লক্ষ্যে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন। তিনি শূন্য হাতে একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ পরিচালনার দায়িত্বভার নিয়েও পুলিশের বেতন ২৫ টাকা করে বৃদ্ধি করেছিলেন। পরিপূর্ণভাবে ধ্বংসপ্রাপ্ত ৮২টি থানা পুনপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং বিভিন্ন স্থাপনা পুননির্মাণ করেছিলেন। ১৯৭৪ সালে তিনি প্রথম নারী পুলিশ নিয়োগ দিয়েছিলেন। জাতির পিতাকে হত্যার পর স্বৈরশাসকেরা পুলিশ বাহিনীর উন্নয়নে কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।

১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে, আওয়ামী লীগ সরকার এই বাহিনীর আধুনিকায়নে নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণ করে– একথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরাই প্রথম একজন নারী পুলিশ অফিসারকে জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ করেছিলাম। সে সময় আমরা পুলিশের বাজেট বৃদ্ধি করি, ঝুঁকি ভাতা চালু করি, দ্বিগুন রেশন প্রদান করি এবং প্রয়োজনীয় যানবাহন সংগ্রহ করি। আমরা ৫ কোটি টাকা সিড মানি দিয়ে পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করি। নতুন নতুন থানা, তদন্তকেন্দ্র, হাইওয়ে ফাঁড়ি, পুলিশ ক্যাম্প এবং ফাঁড়ি স্থাপন করি এবং প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ করি। ২০০০ সালে পুলিশ স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠা করে এর কার্যক্রম শুরু করি। কমিউনিটি পুলিশ গঠনের উদ্যোগ গ্রহণ করি।

প্রধানমন্ত্রী ‘পুলিশ সপ্তাহ’ উপলক্ষে আয়োজিত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন

 

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.