বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের ৫১তম বার্ষিকী আজ ১০ জানুয়ারি। তিনি ১৯৭২ সালের আজকের দিনে পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে সদ্যঃস্বাধীন বাংলাদেশে ফিরে আসেন। 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘ সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় এ দেশের মানুষকে স্বাধীনতার পথে নিয়ে যান। বন্দিদশা থেকে মুক্ত হয়ে তাঁর দেশে ফেরার দিনটি তাই বিশেষ তাত্পর্যপূর্ণ।

নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে আজ ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ এবং এর সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলো বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উদযাপন করবে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশেষ বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে বলেন, ৯ মাস ১৪ দিন পাকিস্তানের কারাগারে বন্দিজীবন শেষে ১৯৭২ সালের এই দিনে জাতির পিতা স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন করেন। সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত হলেও ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে পূর্ণতা পেয়েছিল বাংলার বিজয়। তাই দিনটি বাঙালি জাতির জীবনে অত্যন্ত আনন্দের ও গর্বের।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর বাণীতে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্ন ছিল একদিন এ দেশের মানুষ নিজেদের ভাগ্য নিজেরাই নির্ধারণ করবে। সে লক্ষ্যেই তিনি গোটা জাতিকে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন এবং সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিয়ে স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদনের সুযোগ সৃষ্টি করেছেন। ভিনদেশি শক্তির কাছে মাথা নত করে নয়, জাতির পিতার স্বাধীন বাংলাদেশের মানুষ আজ বিশ্বের বুকে গর্বের সঙ্গে মাথা উঁচু করে চলছে, সেটাই আওয়ামী লীগ সরকারের পরম পাওয়া।’

দুই দশকের ধারাবাহিক আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জাতিকে স্বাধীনতার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ করেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তত্কালীন পাকিস্তানে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও ক্ষমতায় যেতে দেওয়া হয়নি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু লাখো মানুষের সমাবেশে ভাষণ দেন—‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। 

১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর নির্বিচারে গণহত্যা শুরু করলে ২৬শে মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এরপরই তাঁকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানে নিয়ে গিয়ে বন্দি করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী হওয়ার পরও বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের কারাগারে বন্দি রাখা হয়। ২৯০ দিন বন্দি থাকার পর আন্তর্জাতিক মহলের চাপে বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি তিনি দেশে ফেরেন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশে ফিরে আসার দিনটিতে লাখো মানুষ বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানায়। ঢাকার রাজপথ মিছিলে- স্লোগানে প্রকম্পিত হয়। দেশের মানুষের কাছে ফিরেই বঙ্গবন্ধু ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গিয়ে আবেগঘন ভাষণ দেন।

আওয়ামী লীগের কর্মসূচি : ভোর সাড়ে ৬টায় সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, বঙ্গবন্ধু ভবন ও সারা দেশে সংগঠনের সব কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে। সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন দলের কেন্দ্রীয় নেতারা।

সকাল ১১টায় টুঙ্গিপাড়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করবে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধিদল। বিকেল ৩টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। এতে সভাপতিত্ব করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের প্রতিটি জেলা, মহানগর, উপজেলা, থানা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসূচির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ কর্মসূচি পালন করবে।

গতকাল এক বিজ্ঞপ্তিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের সব কর্মসূচি যথাযথ স্বাস্থ্য সুরক্ষা বিধি মেনে পালনের জন্য আওয়ামী লীগ এবং সব সহযোগী ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সর্বস্তরের নেতাকর্মীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.