কাটছে ডলার সংকট ভোগ্যপণ্যের আমদানি বাড়ছে

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : সরকারি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে যাওয়া, বাজারে ডলার সংকট তীব্রতর হওয়ার প্রেক্ষাপটে গত বছরের শেষ তিনমাসে বাংলাদেশ ব্যাংক বিভিন্ন খাতে আমদানির এলসি খোলা কমিয়ে দেয়। এতে করে বিভিন্ন পণ্যের মতো ভোগ্যপণ্যের আমদানিও হ্রাস পায়। এ প্রেক্ষিতে বাজারে পণ্যের সরবরাহ সংকট সৃষ্টি হয়। ভোগ্যপণ্যের মধ্যে বিশেষ করে আগামী রমজানকে কেন্দ্র করে তেল, চিনি, ছোলাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়তে শুরু করে।

কিন্তু এখন বাজার পরিস্থিতি নিম্নমুখী হয়ে স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। ডলারের সংকট পুরোপুরি না হলেও অনেকাংশে কেটে গেছে। এতে করে ভোগ্যপণ্যের আমদানিও বেড়েছে। ফলশ্রুতিতে তেল, চিনি, ছোলাসহ বিভিন্ন পণ্যের দাম নিম্নমুখী হচ্ছে বলে জানিয়েছেন ভোগ্যপণ্যের একক বৃহত্তম বাজার চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা।

খাতুনগঞ্জের অন্যতম বৃহত্তম আমদানিকারক সংস্থা বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী মঙ্গলবার সন্ধ্যায় জনকণ্ঠকে জানান, তীব্র ডলার সংকটের যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তা এখন অনেকাংশে কেটে গেছে। গেল বছরের শেষদিক থেকে পণ্য আমদানিতে যে সংকট সৃষ্টি হয়ে বাজার পরিস্থিতি টালমাটাল হয়ে যায় তা এখন স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে রমজানে ব্যবহৃত বাড়তি ভোগ্যপণ্যের পুরোটাই এলসি হয়েছে এবং এর প্রায় অর্ধেক খালাস হয়ে গেছে। অবশিষ্ট পণ্য পাইপলাইনে রয়েছে।

অপরদিকে, বিভিন্ন ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, গেল জানুয়ারি মাসে পণ্য আমদানির প্রচুর এলসি হয়েছে। এসব এলসির পণ্য বাজারে এসে পৌঁছুলে রমজানে পণ্যের কোনো ঘাটতি যেমন হবে না, তেমনি মূল্য পরিস্থিতিও স্বাভাবিক হয়ে যাবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, জানুয়ারিতে সাড়ে ৫ লাখ টনেরও বেশি চিনির এলসি খোলা হয়েছে। এক বছর আগে যার পরিমাণ ছিল ৫ লাখ ১১ হাজার টন। এ বছর এক্ষেত্রে বাড়তি এলসি হয়েছে ৫৪ হাজার টনেরও বেশি। অনুরূপভাবে ভোজ্যতেলের এলসি হয়েছে প্রায় চারলাখ মেট্রিক টন, যা একই সময়ে গতবছর ছিল ৩ লাখ ৫২ হাজার টন। অপরদিকে, ছোলা আমদানির এলসি হয়েছে চাহিদার চেয়েও বেশি।

বাজার সূত্র জানিয়েছে, দেশে স্বাভাবিক চাহিদার সঙ্গে রমজান মাসে তা বাড়তে থাকে। সে হিসেবে এবারের রমজানসহ পুরো বছরে চাহিদা ধরা হয়েছে ১ লাখ ১০ হাজার টনেরও বেশি। ইতোমধ্যে প্রায় ৫০ লাখ টন ছোলা আমদানি হয়ে খালাস হয়েছে। অবশিষ্ট ছোলা পাইপলাইনে রয়েছে।
চিনির ক্ষেত্রে দেখা যায়, গত জানুয়ারি মাসে চিনি আমদানির জন্য এলসি হয়েছে সাড়ে ৫ লাখ টনেরও বেশি, যা এর আগের বছরে পরিমাণ ছিল প্রায় সোয়া ৫ লাখ টন। চিনির ক্ষেত্রেও ৫৫ হাজার মেট্রিক টনেরও বেশি এলসি হয়েছে।

ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রে দেখা যায়, গত তিন মাসে সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে প্রায় সোয়া ১ লাখ টন। এক্ষেত্রে সয়াবিন তেলের আমদানি কিছুটা কমেছে। পক্ষান্তরে, পাম তেল আমদানি বেড়েছে। বেসরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাম অয়েল আমদানির পরিমাণ প্রায় ৪ লাখ টনে উন্নীত হয়েছে। চিনির ক্ষেত্রে দেখা যায়, বছরে এর চাহিদা প্রায় ২৪ লাখ টন। রমজান এলে বেড়ে যায় আরও ৩ লাখ টন।

ইতোমধ্যে গত তিনমাসে চিনি আমদানি হয়েছে ৬ লাখ টনেরও বেশি। গত জানুয়ারি মাসে সাড়ে ৫ লাখ টনেরও বেশি চিনি আমদানির এলসি খোলা হয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকে। খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ডলার সংকট পরিস্থিতি হ্রাস পাওয়ায় এবং আমদানি পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় রমজানের আগেই বাজার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.