নতুন অর্থবছরে কমবে ভর্তুকি, প্রণোদনাও

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : কোভিড-১৯ মহামারী এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে প্রণোদনা ও ভর্তুকির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি সচল রাখার চেষ্টা করছে সরকার। অর্থনীতির গতি ধরে রাখতে বিদেশি উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতাও নিতে হচ্ছে সরকারকে। তবে উন্নয়ন সহযোগীদের শর্ত মানতে গিয়ে সরকারকে প্রণোদনা ও ভর্তুকিতে রাস টানতে হচ্ছে। এরই মধ্যে জ্বালানি পণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে কয়েক দফায়। বলা হচ্ছে, আগামী ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রণোদনা ও ভর্তুকির বরাদ্দ আরও কমানো হবে।

জানা গেছে, আগামী বাজেটে ভর্তুকির অঙ্ক এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার নিচে রাখতে চায় সরকার। প্রাথমিকভাবে ভর্তুকির প্রাক্কলন করা হয়েছিল এক লাখ ১৪ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু এখন ভর্তুকির পরিমাণ চার হাজার কোটি টাকা কমানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বিভিন্ন খাতে প্রণোদনার পরিমাণ বাজেটে কমিয়ে দেওয়ার চেষ্টা চলছে।

অর্থবিভাগের একটি সূত্র জানায়, চলতি (২০২২-২৩) অর্থবছরে বাজেটে ভর্তুকি, প্রণোদনা ও নগদ ঋণ খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৮১ হাজার ৪৯০ কোটি টাকা। কিন্তু বছর শেষে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় থেকে অতিরিক্ত চাহিদার কারণে ভর্তুকির পরিমাণ ২০ হাজার ৫১০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। ফলে সংশোধিত বাজেটে ভর্তুকির পরিমাণ গিয়ে ঠেকেছে এক লাখ দুই হাজার কোটি টাকায়। এখন আগামী অর্থবছরের ভর্তুকি বরাদ্দ নিরূপণ করতে গিয়ে অর্থবিভাগের সংশ্লিষ্টরা এখাতে বরাদ্দ সহনীয় করার চেষ্টা করছেন।

চলতি অর্থবছরে সবচেয়ে বেশি ভর্তুকি রয়েছে বিদ্যুৎ খাতে (১৭ হাজার কোটি টাকা)। গত অর্থবছরে ছিল ১১ হাজার ৯৬৩ কোটি টাকা। চলতি বছরে এলএনজি (আমদানিকৃত তরল প্রাকৃতিক গ্যাস) খাতে বরাদ্দ রয়েছে ৬ হাজার কোটি টাকা (গত অর্থবছরে একই পরিমাণ ছিল)। এ ছাড়া খাদ্যে ভর্তুকি রয়েছে ৫ হাজার ৯৬৫ কোটি টাকা (গত অর্থবছর ছিল ৪ হাজার ৬৪১ কোটি টাকা)। কৃষি খাতে ভর্তুকি ১৬ হাজার কোটি টাকা (গত অর্থবছরে ছিল ১৫ হাজার ১৭৩ কোটি টাকা)। টিসিবি ও অন্যান্য খাতে ভর্তুকি বরাদ্দ ১১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। আর প্রণোদনা (রপ্তানি ও রেমিট্যান্স) ১৫ হাজার ২২৫ কোটি টাকা (গত অর্থবছরে ছিল ১৩ হাজার ২০০ কোটি টাকা)। নগদ ঋণ খাতে এবার ভর্তুকি রয়েছে ১০ হাজার টাকা।

অর্থবিভাগের একটি সূত্র জানায়, গত ২০ ডিসেম্বর অর্থমন্ত্রীর সভাপতিত্বে বাজেট সম্পর্কিত সম্পদ কমিটির বৈঠক হয়েছে। সেখানে বলা হয়েছে, বিদ্যমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে ভর্তুকির এত চাপ অর্থনীতি সহ্য করতে পারবে না। সরকারের উচ্চপর্যায় থেকে বিদ্যুৎ ও পানির দাম বৃদ্ধির বিষয়ে ইতিবাচক মনোভাব দেখানো হলেও এই মুহূর্তে সারের দাম বাড়ানো সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুতের দাম বাড়ানো ও প্রণোদনা খাতে ব্যয় বরাদ্দ কমিয়ে ‘ভর্তুকি রাস’ টেনে ধরা হবে।

উল্লেখ্য, প্রতি বছরই ভর্তুকির পরিমাণ বাড়ছে। ২০২০-২১ অর্থবছরে ভর্তুকি খাতে বরাদ্দ ছিল ৪৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ছিল ৪২ হাজার ১০০ কোটি টাকা; ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ৩৭ হাজার ৮০০ কোটি; ২০১৭-১৮ বাজেটে ভর্তুকি ছিল ২৮ হাজার ৪৫ কোটি টাকা।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.