এক সেতুতে খুলছে কক্সবাজারের পর্যটন ও অর্থনীতির নতুন দুয়ার

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : বিশিষ্টজনরা বলছেন, উদ্বোধন হলে এই সেতু আর বাঁকখালী নদীর প্রকৃতি ঘিরে হবে কক্সবাজারের নতুন পর্যটন জোন। খুরুশকুলবাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন এখন দৃশ্যমান। কক্সবাজার শহর থেকে মাত্র তিন মিনিটের পথ। তারপরই চোখে পড়বে জেলার সবচেয়ে সুন্দর সেতু ও সড়ক। সেতু-সড়কের পাশেই বাঁকখালী নদী আর কয়েকটি জলাভুমি। যা ঘিরে পরিযায়ী পাখিদের বিচরণে মুখর পুরো এলাকা। পরিবেশগতভাবে অনেকটা হাওর অঞ্চলের মতো।

এলাকাটিকে আগামীর বাণিজ্যিক রাজধানী বলা হচ্ছে। সেতু নির্মিত হওয়ায় অর্থনীতিতে দারুণ সম্ভাবনা দেখছে সংশ্লিষ্টরা। বিশিষ্টজনরা বলছেন, উদ্বোধন হলে এই সেতু আর বাঁকখালী নদীর প্রকৃতি ঘিরে হবে কক্সবাজারের নতুন পর্যটন জোন।

পৌরসভার দীর্ঘদিনের আবর্জনার ভাগাড়ে ফুল ফুটিয়েছে এলজিইডি। বাঁকখালীর দুই পাড়ের মানুষের মেলবন্ধন করতে সহসাই দ্বার খুলছে সেতুটির।

আগামী ১১ নভেম্বর সেতুটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপরই সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করা হবে জেলার সর্বপ্রথম ব্যয়বহুল ও আধুনিক এই সেতু।

এ বিষয়ে কক্সবাজার নাগরিক আন্দোলনের মূখপাত্র এইচ এম নজরুল ইসলাম বলেন, ‘খুরুশকুলের সঙ্গে শহরের দুরত্ব এখন ৩০-৪০ মিনিটের। সেতু হলে সেটি কমে হবে মাত্র তিন মিনিট।’

তিনি বলেন, ‘সেতু ও তার আশপাশের এলাকা ঘিরে নতুন অর্থনৈতিক সম্ভাবনার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে এলাকাবাসী। এছাড়াও আশ্রয়ণ প্রকল্পসহ সরকারের বেশকিছু উন্নয়ন প্রকল্পও রয়েছে এ এলাকায়।’

কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাদ্দাম হোসেন বলেন, ‘জায়গাটিতে আগে ময়লা-আবর্জনা ছিল। সেখান থেকে সরকার উন্নয়ন করেছে। যে সেতুটি নির্মাণ করেছে তা দুই পাড়ের মানুষের যাতায়াতের সংযোগই শুধু ঘটাবে না, দুই পাড়ে তৈরি হবে পর্যটনের নতুন হাব। এছাড়াও এখানে খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্প হয়েছে। সেটিও একটি অর্থনৈতিক সম্ভাবনা।’

খুরুশকুল মনুপাড়ার বাসিন্দা নজরুল হুদা খোকন বলেন, ‘সেতুটি নির্মাণের ফলে দূরত্ব যেমন কমেছে, তেমনি এ অঞ্চলের শাক-সবজি, লবণ ও মাছসহ নানা জিনিস দ্রুত কক্সবাজার শহরে পৌঁছাতে পারবে। এছাড়াও পর্যটন বা অর্থনৈতিক অঞ্চলের যে স্বপ্ন দেখেছে খুরুশকুলবাসী, তা বাস্তবায়নের পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল বর্তমান সরকার।’

এলজিইডি বলছে, ২০১৯ সালে শুরু হওয়া এ প্রকল্পের কাজে বিঘ্নতা ঘটাতে পারেনি কোনো কিছুই৷ এখন কাজ প্রায় শেষ। তাই সময়সীমার আগেই চূড়ান্ত করে বুঝিয়ে দিতে পারবে বলে সন্তুষ প্রকাশ করেছেন এলজিইডি কর্মকর্তারা।

২ শ ৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ৫৯৫ মিটার দীর্ঘ এই সেতুতে ৩টি ৬৫ মিটার গভীর স্প্যান এবং ৫০ মিটারের ১০টি স্প্যান রয়েছে। এত দীর্ঘ সেতু এর আগে কখনও দেশীয় নকশায় তৈরি হয়নি বলে দাবি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানের।

এলজিইডি কক্সবাজারের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন খান বলেন, ‘এলজিইডি সেতুর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে নিরলসভাবে কাজ করেছে। তাই নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজটি বুঝিয়ে দিতে পারার আশা করছি। দুইপাড়ে আরও সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলমান।’

প্রসঙ্গত, কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীতকরণের উদ্যোগের ফলে পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের প্রায় সাড়ে ৪ হাজার পরিবারকে খুরুশকুল আশ্রয়ণ প্রকল্পে স্থানান্তরিত করছে সরকার। এই বৃহৎ জনগোষ্ঠীসহ খুরুশকুলবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে কস্তুরাঘাটস্থ বিআইডাব্লিউ ভবনের পশ্চিম পাশে নির্মিত হয়েছে খুরুশকুল সেতু। শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সবাই। সড়কবাতি আর রঙ পালিশের কাজ শেষ হলেই পূর্ণতা পাবে সেতুটি।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.