দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে হাইকোর্টের ১৬ পরামর্শ
বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়তে জাতীয় সংসদকে ১৬টি পরামর্শ দিয়েছেন হাইকোর্ট। আদালত আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেছেন, জাতীয় সংসদ পরামর্শগুলো গুরুত্ব সহকারে আমলে নিয়ে দ্রুত কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করলে দেশ ১০ বছরের মধ্যে দুর্নীতিমুক্ত রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবে। গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ ১৬টি পরামর্শ দিয়ে ৭৭ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করেন। ১৫ হাজার টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে করা মামলায় তিতাস গ্যাসের উপসহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান সরকার ও টেকনিশিয়ান আব্দুর রহিমের সাজা বাতিলের রায়ে এ পরামর্শ দেন আদালত। ২০২২ সালের ১৪ ডিসেম্বর হাইকোর্ট সংক্ষিপ্ত আকারে এ রায় ঘোষণা করেছিলেন।
পরামর্শগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে দুদকের জন্য স্বতন্ত্র ক্যাডার সার্ভিস গঠন। যে প্রক্রিয়ায় এবং যে প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অধস্তন আদালতের বিচারক নিয়োগ হয় সেভাবে দুদকের কর্মকর্তা নিয়োগ। দুদকের অন্যান্য কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রেও স্বতন্ত্র ও স্বাধীন নিয়োগ বোর্ড গঠন। দুদকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের যোগদানের সময় সম্পদের বিবরণ দাখিল এবং প্রতিবছর সম্পত্তির হিসাব দুদকের ওয়েবসাইটে প্রকাশ।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের মধ্য থেকে দুদকের চেয়ারম্যান এবং হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের মধ্য থেকে দুদকের সদস্য নির্বাচন। উচ্চ ও অধস্তন আদালতের জন্য পৃথক প্রসিকিউশন প্যানেল গঠন এবং ৩ বছর পর পর তা পুনর্গঠন।
দুদকের কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ দেওয়ার পর কমিশন সত্যতা না পেলে বা সত্যতা পেয়েও মামলার অনুমোদন না দিলে বা কমিশনের সিদ্ধান্তে অভিযোগকারী সংক্ষুব্ধ হলে অভিযোগ দাখিলের পরবর্তী ১৮০ দিন পর সংশ্লিষ্ট জেলার সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতে মামলা করতে পারবেন।
দুর্নীতি-সংক্রান্ত মামলা দ্রুত নিষ্পত্তিতে প্রয়োজনীয় বিশেষ জজ নিয়োগ। বিশেষ জজ আদালতকে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তিতে সক্ষম করে তোলার উদ্দেশ্যে ট্রাইব্যুনালে রূপান্তর করে ‘দুর্নীতি দমন ট্রাইব্যুনাল’ নামকরণ করা। দুদকের কর্মকর্তা-কর্মচারীর জন্য নির্ধারিত পদগুলোয় কমিশনের বাইরের কাউকে পদায়ন না করা। দুর্নীতিবাজ কোনো ব্যক্তির দুর্নীতির অভিযোগের তদন্তের ফলাফল বা তার সম্পত্তির তালিকা বাধ্যতামূলকভাবে কমিশন কর্তৃক জনগণকে অবহিত করা। দুর্নীতিবিষয়ক প্রতিটি অনুসন্ধান এবং তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসরণ। প্রাসঙ্গিক আইন ও বিধিসমূহে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনয়ন।