অভয়নগরে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা নিয়ে এনজিও-শিক্ষা অফিস মুখোমুখি
যশোর প্রতিনিধি : অভয়নগরে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ১শ’ ২৪ জন। আউট-অব-স্কুল চিল্ড্রেন কর্মসূচি, ২০২০ সালে এ প্রতিবেদন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এর উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো জমা দিয়েছে। অথচ এ প্রতিবেদন স্বীকার করতে নারাজ উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস।
এ প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ২০২১ সালে ওই ঝরে যাওয়া ২ হাজার ১শ’ ২৪ জন শিক্ষার্থীর ওপর জরিপ করে মাত্র ৩২ জন শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার তথ্য পূণরায় জমা দিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে বলে জানা যায়। আউট-অব-স্কুল চিল্ড্রেন কর্মসূচি এর প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০২০ সালে বুইকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৪ জন শিক্ষার্থী, নওয়াপাড়া মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৯০জন শিক্ষার্থী, পূর্ব বুইকরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী।
আমডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী, নওয়াপাড়া ইনস্টিটিউট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৯৯ জন শিক্ষার্থী, সিরাজকাটি দূর্গাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী, আহম্মদ আলী সরদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৪৪ জন শিক্ষার্থী। একতারপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী। রাজটেক্সটাইল মিল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী, ধোপাদী উত্তরপাাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী।ভূলাপাতা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, বেদভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, বারান্দী ফকিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ২৮ জন শিক্ষার্থী, কোটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, সমশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী।
আন্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, বাগদা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩২ জন শিক্ষার্থী, চলিশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী, ঘোড়াদাইড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩২ জন শিক্ষার্থী, দত্তগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৫ জন শিক্ষার্থী, পায়রা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, কালিসাকুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, কোদলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, পাইকপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৯৩ জন শিক্ষার্থী, পাচুড়িয়ায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৬১ জন শিক্ষার্থী, শংকরপাশা শাহিনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী, দক্ষিণ দেয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, দিঘিরপাড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, শ্রীধরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, মথুরাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, বাঘুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৬৭ জন শিক্ষার্থী, ধোপাদী দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৬ জন শিক্ষার্থী।
প্রেমবাগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৬৬ জন শিক্ষার্থী, আরজী বাহিরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, সুন্দলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩২ জন শিক্ষার্থী, বাহিরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী, জিয়াডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩১ জন শিক্ষার্থী, মালোপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়¬ এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী, পাকেরগাতি পালপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩১ জন শিক্ষার্থী।
পুড়াটাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী, রাজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, ডহরমশিয়াহাটী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী, রামসরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, বনগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, ইছামতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩২ জন শিক্ষার্থী।
নাউলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩৩ জন শিক্ষার্থী, রানাগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, ধুলগ্রাম চন্দনগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩১ জন শিক্ষার্থী, চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, লেবুগাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৭৭ জন শিক্ষার্থী, ধুলগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৯০ জন শিক্ষার্থী, গোপিনাথপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩০ জন শিক্ষার্থী, শুভরাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৫০ জন শিক্ষার্থী, সিদ্দিপাশা জিয়েলতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ৩২ জন শিক্ষার্থীসহ মোট ২ হাজার ১শ’ ২৪জন শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। অপরদিকে অভয়নগর উপজেলা প্রথমিক শিক্ষা অফিস ওই ঝরে পড়া ২ হাজার ১শ’ ২৪ জন শিক্ষার্থীর উপর জরিপ করে গতকাল বুধবার (২৯-০৯-২০২১) একটি প্রতিবেদনে মাত্র ৩২ জন শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদ করিম জানায়।
তিনি বলেন, ৫টি ক্যাচমেন্ট এলাকা ধরে আমরা ১শ’ ১৭টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের সম্বন্বয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদনে জানা যায়, একতারপুর ক্যাচমেন্ট এলাকার ১৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১১জন শিক্ষার্থী, ধুলগ্রাম ক্যাচমেন্ট এলাকার ১০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ১০জন শিক্ষার্থী, বুইকরা ক্যাচমেন্ট এলাকার ১০টি বিদ্যালয় থেকে ৩জন শিক্ষার্থী, কোদলা ক্যাচমেন্ট এলাকার ১০টি বিদ্যালয় থেকে ৭ জন শিক্ষার্থী, প্রেমবাগ ক্যাচমেন্ট এলাকার ১২টি বিদ্যালয় থেকে ০ জন শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গুরুচাদ মন্ডল শিক্ষকের ছেলে অয়ন মন্ডল ও তারক মন্ডল এর ছেলে রুদ্র মন্ডল সমশপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণিতে লেখা পড়া করছে।
অথচ আউট-অব-স্কুল চিল্ড্রেন কর্মসূচি প্রতিবেদনে এ শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া হিসাবে দেখানো হয়েছে। এব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা আউট-অব-স্কুল চিল্ড্রেন কর্মসূচি’র প্রোগ্রাম অফিসার সঞ্জয় বিশ্বাস জানান, ২০২০ সালে যে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। তাতে কিছুটা ভুলভ্রান্তি আছে। আমরা ২০২১ সালে আবার জরিপ করে প্রতিবেদন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেব।
এব্যাপারে অভয়নগর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মাসুদ করিম বলেন, তাদের প্রতিবেদন ভুল। আমরা সরেজমিনে ঘুরে দেখেছি তারা যে সব শিক্ষার্থী ঝরে পড়া দেখিয়েছে সেগুলো বর্তমান নিয়মিত স্কুলে ক্লাস করছে। এমনকি তারা উপবৃত্তিও পায়। তাহলে তাদের প্রতিবেদন কতটা সঠিক?