সরকারি শিশু পরিবার নেত্রকোণায় অনুষ্ঠিত হলো বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান

0

মেহেদী হাসান আকন্দ: সরকারি শিশু পরিবার নেত্রকোণায় অনুষ্ঠিত হলো বার্ষিক ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতা ও পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান।
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি খেলাধূলা ও সংস্কৃতি চর্চার সুসমন্বয় প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় সমাজ সেবা কার্যালয়ের পরিচালক (উপসচিব) তাহমিনা আক্তার। বৃহস্পতিবার ১১টায় নেত্রকোণার সরকারি শিশু পরিবারের আয়োজনে বার্ষিক ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগীতা ও পুরুস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তাহমিনা আক্তার বলেন, কেবল প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষা পূর্ণতা পায় না। এর সঙ্গে প্রয়োজন খেলাধূলা ও সংস্কৃতি চর্চার সুসমন্বয় ঘটানো। আর এর মাধ্যমেই একজন শিশু পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠতে পারে। পরিপূর্ণ মানুষ হিসেবে গড়ে ওঠার এসব উপাদানের সমন্বয় ঘটেছে দেশের অন্যতম নন্দিত মডেল নেত্রকোণা সরকারি শিশু পরিবার । উপ-তত্ত্বাবধায়ক তারেক হোসেনের নেতৃত্বে নেত্রকোণা সরকারি শিশু পরিবার সারাদেশে ৮৫টি সরকারি শিশু পরিবারের মধ্যে সফল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

বৃহস্পতিবার ১১টায় নেত্রকোণার সরকারি শিশু পরিবারের আয়োজনে জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো: আলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বিজয়ীদের মাঝে পুরুস্কার বিতরণ করেন, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সমাজ সেবা কার্যালয়ের পরিচালক (উপসচিব) তাহমিনা আক্তার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ। অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, বিভাগীয় সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ আলী হায়দার ভুঁইয়া, জেলা সমাজ সেবা সহকারী পরিচালক মোঃ মাহবুবুল আলম খাসনবীশ, সহকারী পরিচালক মোঃ রফিকুল ইসলাম।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বলেছেন, সু-নাগরিক হতে হলে লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলার কোন বিকল্প নেই। খেলাধুলা মানুষের মনকে সচেতন করে তুলে। খেলাধুলা সমাজের অপরাধ ম‚লক কর্মকান্ড থেকে দ‚রে রাখে। তাই সুস্থভাবে জীবন-যাপন করতে খেলাধুলার বিকল্প নেই। তিনি আরো বলেন, শিশুরা যদি লেখা পড়ার সাথে খেলাধুলায় মগ্ন থাকে তাহলে অনৈতিক কর্মকান্ড, সন্ত্রাস, মাদক তাদেরকে স্পর্শ করতে পারবে না। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা মানুষের মনকে সচেতন করে তুলে।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মোঃ আলাল উদ্দিন বলেন, শারীরিক, মানসিক ও আত্মিক সুস্থতার জন্য খেলাধুলা ও সুস্থ্য সাংস্কৃতিক বিনোদন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শরীর চর্চা-ক্রীড়া তাই জ্ঞানচর্চার অবিচ্ছেদ্য অংশ। এগুলো মনের দরজা-জানালা খুলে দেয়।

তিনি আরও বলেন, তোমাদের ভবিষ্যতের জন্যই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের আরও অনেক দূর যেতে হবে। সত্যিকারের জ্ঞান অর্জন করে ভালো মানুষ হিসেবে নিজেদের তৈরি করতে হবে। সততা, দেশপ্রেম, নৈতিকতা-এই বোধগুলো নিজেদের মধ্যে জাগ্রত করতে হবে। সোনার বাংলা গড়তে হলে আমাদের আরও সোনার মানুষ প্রয়োজন। তোমরা সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে নিজেদের সোনার মানুষ হিসাবে গড়ে তুলবে। শিশু পরিবারের সদস্যদেরকে জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে সুশিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে সন্ত্রাসমুক্ত, মাদকমুক্ত ও মানবিক সমাজ গঠনের তিনি আহবান জানান।

অনুষ্ঠানটি সার্বিক পরিচালনা করেন, সরকারি শিশু পরিবার (বালক) নেত্রকোণার উপ-তত্ত¡ধায়ক তারেক হোসেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন এবং মেধাভিত্তিক সাবেক ৬জন নিবাসীর হাতে প্রত্যেককে ১৫হাজার করে টাকার চেক তুলে দেন।
সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রনাধীন সমাজসেবা অধিদফতরের মাধ্যমে নেত্রকোণা জেলায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় দরিদ্র এতিম শিশুদের লালন পালনের একমাত্র প্রতিষ্ঠান নেত্রকোণা সরকারি শিশু পরিবার। দেশব্যাপী সরকারিভাবে পরিচালিত ৮৫টি সরকারি শিশু পরিবারের মধ্যে এটি একটি সেরা মডেল প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটি ১৯৭৩ সালে জেলা শহরের নিজামপুর এলাকায় প্রতিষ্ঠিত হলেও ২০০১ সালে ৫মে সরকারি শিশু পরিবারে রুপান্তরিত হয়ে সদর উপজেলার রৌহা ইউনিয়নের কুমড়ী এলাকায় স্থাপিত হয়। ৩একর জায়গায় মনোরম পরিবেশের এই প্রতিষ্ঠানটিতে বর্তমানে ১০০জন এতিম শিশু লালিত পালিত হচ্ছে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.