বর্ষিয়ান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি ও তার রাজনৈতিক জীবন

0

স্টাফ রিপোর্টারঃ আর মাত্র ১ দিন পরেই পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। সম্মেলন কে ঘিরে অলিতে গলিতে চায়ের দোকানে জমে উঠেছে গল্পের মেলা, কে হচ্ছে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। এদিকে ঈশ্বরদী সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় ঘুরে ঈশ্বরদী-আটঘরিয়ার সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাসের নাম আলোনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস এমপি ঈশ্বরদী আটঘরিয়ার গণমানুষের আস্থার আশ্রয়স্থল। ঈশ্বরদীর দিধাবিভক্তির টালমাটাল রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে তিনি তার অসামান্য রাজনৈতিক মেধা, মনন, উদার ও প্রজ্ঞা দিয়ে সুদক্ষতার সাথে সামাল দিয়ে চলেছেন।ব্যাক্তিগত জীবনে তিনি অন্যান্য,সৎ ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের অধিকারী।

সাবেক ভূমিমন্ত্রী ও ৫ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য শামসুর রহমান শরীর ডিলু সাহেবের মৃত্যুর পর গণতন্ত্রের মানসকন্যা, মানবতার মা, দেশনেত্রী শেখ হাসিনা এ অঞ্চলের দ্বায়িত্বভার তুলে দেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাসের হাতে। সাড়ে ষোল কোটি মানুষের আস্থার শেষ আশ্রয়স্থল জননেত্রী শেখ হাসিনা তার অতুলনীয় প্রজ্ঞারই পরিচয় দিয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস কে এ অঞ্চলের দ্বায়িত্বভার দিয়ে।২০১৬ সালে ঈশ্বরদীতে অভ্যান্তরীন কোন্দল নিয়ে ঈশ্বরদীর আওয়ামী লীগের রাজনীতির বিভক্ত হয়ে পড়ে।এ-র পড়ে কালক্রমে ঈশ্বরদীর রাজনীতিতে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন অস্থীরতা দেখা দেয়।ক্রমে ক্রমে ঈশ্বরদীর রাজনীতি ঘোলা হয়ে উঠে।২০২০ সালে বর্ষিয়ান রাজনীতিবিদ প্রয়াত শামসুর রহমান শরীফ ডিলু এমপি মৃত্যুবরন করলে জননেত্রী শেখ হাসিনার ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া উপনির্বাচনে এ অঞ্চলের মুজিব বাহিনীর প্রধান বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস কে নৌকা মনোনীত করেন।উপনির্বাচনে নিকটতম প্রতিদ্বন্দী হাবিবুর রহমান হাবিব কে ২ লক্ষ ৩৪ হাজার ভোটে পরাজিত করেন।

পাবনা-৪ আসনের উপনির্বাচন পূর্ববর্তী সময়ে ঈশ্বরদী-আটঘরিয়ার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ছিল আতংকের। এ অঞ্চলের সাধারণ মানুষ ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা সংকায় ছিলেন যে কার হাতে নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী? দলীয় ক্রন্দল ও ঐক্য না থাকায় অনেকে এমন সংকায় ছিলেন যে এখানে রক্তপাত সৃষ্টি হতে পারে।কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস কে জননেত্রী শেখ হাসিনা মনোনীত করার পর সাথেই সাথেই এ অঞ্চলের মানুষের মাঝে সংকার পরিবর্তে স্বস্তি নেমে আসে। গণমানুষের ঢল নামে তার বাড়িতে। সকল মতভেদ ভুলে সবাই তাকে স্বাগত জানায়। জনসাধারণ তাকে বিপুল পরিমাণ ভোট দিয়ে বিজয়ী করেন।সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর তিনি ঈশ্বরদী-আটঘরিয়ার আওয়ামী লীগ কে ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন।তার নেতৃত্বে ঈশ্বরদী-আটঘরিয়া আওয়ামীলীগ সুসংগঠিত হতে শুরু করে। এরপর তিনি সফলতার সাথে ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ মনোনিত প্রার্থীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করেন। পরবর্তীতে ঈশ্বরদী পৌর নির্বাচনেও আওয়ামীলীগ মনোনিত নৌকা প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করেন।

এরপর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনকে কেন্দ্র করে আবার রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাল হয়। আবার নেতাকর্মীদের মনে রক্তপাতের আশংকা তৈরি হয়। এবারও তিনি তার প্রজ্ঞা ও দক্ষতার পরিচয় দেন। এ অঞ্চলের নেতাকর্মীর ভাষ্যমতে এমন সুষ্ঠু সুন্দর সম্মেলন তারা তাদের রাজনৈতিক জীবনে কখনও দেখেননি বলে অনেকে মন্তব্য করেন। নেতাকর্মীদের এমন সুষ্ঠু সুন্দর সম্মেলন উপহার দেওয়ার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস এর ভূয়সী প্রশংসা করেন।

এরপর তিনি ঈশ্বরদী উপজেলার ৭ টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি আসনে আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থীর বিজয়ী করতে সফলতা অর্জন করেন। তার আটঘরিয়া পৌর ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও তিনি আওয়ামী লীগ মনোনিত প্রার্থীদের বিজিত করতে সফলতা লাভ করে। তিনি ছাত্র জীবন থেকে রাজনীতি শুরু করে সবসময়ই সফলতার পরিচয় দিয়েছে।

বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাস ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের বড়ইচরা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম খোরশেদ আলী বিশ্বাস এবং মাতার নাম তহুরুন নেছা। ছেলেবেলায় তিনি দুরন্ত প্রকৃতির ছিলেন।

শিক্ষা জীবন শুরু করেন বড়ইচরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। দুরন্তপনার কারনে পরবর্তীতে তাকে তার নানির বাড়ির নিকটস্থ মানিকনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন। সেখানেও সে বেশিদিন টিকতে পারেননি। পরবর্তীতে ১নং বাঘইল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন। সেখান থেকে টিসি নিয়ে পুনরায় বড়ইচরা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করে দেন। বড়ইচরা প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকেই তিনি নিম্ন মাধ্যমিকে শিক্ষা জীবন সম্পন্ন করেন।

এরপর তিনি ঈশ্বরদী সাড়া মাড়োয়ারি উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। এই সাড়া মাড়োয়ারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকেই তার রাজনৈতিক জীবনের শুরু। মাত্র ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র অবস্থায় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে যুক্ত হন। এবং প্রতিষ্ঠাকালীন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হন।

সেসময় তারা বাশ ও কাগজ দিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করতেন এবং শহীদ মিনারে ফুল দিতেন। পরবর্তীতে তিনি তার সহপাঠীদের সাথে নিয়ে অস্থায়ী শহীদ মিনারের পরিবর্তে স্থায়ী শহিদ মিনার প্রতিষ্ঠা করেন। তখন পূর্ব পাকিস্তানের কোন স্কুলে শহিদ মিনার ছিলো না।

এরই মাঝে ততকালীন সরকার হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন করে ফলে দেশব্যাপী আন্দোলন শুরু হয়। তারই ধারাবাহিকতায় নুরুজ্জামান বিশ্বাস সেই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ছাত্র আন্দোলনের ফলে সেই শিক্ষা কমিশন বাতিল করতে বাধ্য হয় পাকিস্তান সরকার। তখন ঈশ্বরদীতে কোন কলেজ ছিলো না, ঈশ্বরদীর মশুড়িয়া পাড়ায় কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ছাত্রলীগ কর্মী হিসেবে চাঁদা সংগ্রহ করেন।

ছাত্রাবস্থায় তিনি দুরন্তপনার পাশাপাশি রাজনীতি, খেলাধুলা, অভিনয়ও করেন। ১৯৬৪ সালের নির্বাচন উপলক্ষে স্বৈরাচার পাকিস্তানি শাসক আইয়ুব খান ঈশ্বরদী সাড়া মাড়োয়ারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ প্রাঙ্গণে জনসভার আয়োজন করে। সেই সময় নুরুজ্জামান বিশ্বাস ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সাথে নিয়ে সেই জনসভা পন্ড করে দেন। সেই থেকে বঙ্গবন্ধু নুরুজ্জামান বিশ্বাসকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন।

১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু ৬ দফা বাস্তবায়নের দাবি তুললে ৬ দফা প্রতিষ্ঠার লক্ষে ঈশ্বরদী থেকে প্রথম আন্দোলনে যোগদান করেন নুরুজ্জামান বিশ্বাস। সেসময় মুসলীমলীগের গুন্ডা ছাত্র সংগঠন এনএসএফ ও পুলিশ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও হামলা করে নির্যাতন করতেন। ১৯৬৬ সালের ১১ ডিসেম্বর ছাত্রলীগ নেতা নবাব আলীকে হত্যা করে এনএসএফ বাহিনী। নুরুজ্জামান বিশ্বাস এসময় সকল মিথ্যা মামলার ১ নম্বর আসামী হতেন। সেসময় ঈশ্বরদীতে ছাত্রলীগ অনেক জেলার থেকেও শক্তিশালী ছিলো।

ঈশ্বরদী সাড়া মাড়োয়ারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে ঈশ্বরদী জিন্নাহ কলেজে(বর্তমানে ঈশ্বরদী সরকারি কলেজ) ভর্তি হন। এসময় তিনি ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে কলেজ সংসদের এজিএস নির্বাচিত হন।
বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আগড়তলা ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেফতার হন। সেসময় ১১ দফা দাবি পেশ করে বঙ্গবন্ধুর মুক্তির জন্য গণআন্দোলন করেন এই বর্ষীয়ান নেতা।

১৯৬৯ এ গণআন্দোলন তুঙ্গে ওঠে, আইয়ুব খানের পতন হয় এবং ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় আসে। ইয়াহিয়া খান ক্ষমতায় এসে দেশে নির্বাচন দেবেন, গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা তুলে দেবেন প্রতিশ্রুতি দেন। আন্দোলনের চাপে পাকিস্তান সরকার ১৯৭০ এ নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়। এসময় কলেজ সংসদে ছাত্রলীগ প্যানেল থেকে তিনি জিএস নির্বাচিত হন।

৭০ এর নির্বাচনে ঈশ্বরদী আটঘরিয়া থেকে আওয়ামী লীগ থেকে প্রাদেশিক প্রার্থী হন আমিনউদ্দীন উকিল আর জাতীয় সংসদে প্রার্থী হন আমজাদ হোসেন। নুরজ্জামান বিশ্বাস এ নির্বাচনে আওয়ামী প্রার্থীর বিজয়ের লক্ষ্যে নির্বাচনী কাজ করে। উভয়ই আওয়ামী লীগ প্রার্থীই এ নির্বাচনে জয়লাভ করেন।

যখন ৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামীলীগ নিরংকুশ বিজয় লাভ করে তখন ইয়াহিয়া খান গণতান্ত্রিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে টালবাহানা শুরু করে। হত্যা করে নিরীহ ছাত্রদের, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের। ৭১ এর ২১ ফেব্রুয়ারিতে প্রভাতফেরী উপর হামলা চালায় ইয়াহিয়া খান। বঙ্গবন্ধুকে সংসদ অধিবেশনে যোগদানের আহবান করে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বলেন আমার ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত হয়েছে রাজপথ। আমি এই রক্তের সাথে বেইমানি করে ক্ষমতায় আসীন হতে পারি না।

মার্চ মাসে সারাদেশ আন্দোলনে উত্তাল হয়ে ওঠে। বঙ্গবন্ধু রেসকোর্স ময়দানে জনসভার ডাক দেন। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ৭ মার্চে রেসকোর্স ময়দানে যান নুরুজ্জামান বিশ্বাস এবং অবলোকন করেন বঙ্গবন্ধুর সেই ঐতিহাসিক ভাষণ।

ঢাকা থেকে ফিরে এসে সংগঠিত হওয়ার চেষ্টা করতে থাকে। এরই মাঝে ২৫শে মার্চের কালো রাতে পাকহানাদার বাহিনী নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালীদের নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়। পাক হানাদারদের এমন নৃশংস কর্মকান্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে নুরুজ্জামান বিশ্বাস এ অঞ্চলের তরুদের সাথে নিয়ে ঈশ্বরদী মিলিটারি ফার্মে আক্রমণ করে পাক সেনা দের বন্দি করে।

এরপর ভারতের দেরাদূনে আর্মি স্পেশাল ট্রেনিং ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নেয় বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে মহান মুক্তিযুদ্ধে ঈশ্বরদী অঞ্চলে গড়ে তোলেন গেরিলা বাহিনী। তার নেতৃত্বে এ অঞ্চলে মুক্তিযুদ্ধ সংগঠিত হয়। মহান মুক্তিযুদ্ধে তাকে মুজিব বাহিনীর আঞ্চলিক কমান্ডার করা হয়।

দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধুর নির্দেশক্রমে অস্ত্র জমা দিয়ে দেশ গঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করেন এবং ঈশ্বরদী কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি ও জেলা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন।

পরবর্তীতে তিনি আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস এ কর্মে যোগ দেন এবং জাতীয় শ্রমিক লীগের রাজনীতির সাথে তিনি যুক্ত হন। এসময় তিনি আলহাজ্ব টেক্সটাইল মিলস এ প্রথমে সিবিএ’র সভাপতি পরে সিবিএ’র সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন এবং শ্রমিক লীগ ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। সেইসাথে জাতীয় শ্রমিক লীগ পাবনা জেলা শাখার সহ-সভাপতি হন।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ গঠন ও রাজনৈতিক সংগঠন পরিচালনার কাজ তিনি সমানভাবে করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ঘোর অমানিশা নেমে আশে তার জীবনে। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্ট জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। তখন অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসা সামরিক শাসক তাকে আটক করে অমানুষিক, নির্মমভাবে নির্যাতন চালায়। মিথ্যা ও বানোয়াট মামলায় কারাদন্ড দেয় অবৈধ সামরিক সরকার।

জেলে থাকা অবস্থাতেই তিনি জাতীয় শ্রমিক লীগ কেন্দ্রিয় কমিটি ও পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য পদ লাভ করেন।

দীর্ঘ চার বছর তিনি মিথ্যা মামলায় কারাভোগ করেন। জেল থেকে বের হওয়ার পর তিনি পুনরায় সংগঠনের কাজে আত্মনিয়োগ করেন। জেল থেকে ফেরার পর তিনি শ্রমিক লীগ ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার সভাপতি হন। জেলে যাওয়ার পূর্ব থেকে তিনি শ্রমিক লীগ ঈশ্বরদী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি জাতীয় তাঁত শ্রমিক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৭৯ সালে তিনি ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পান। ৪ বছর নিষ্ঠা ও দক্ষতার সাথে সাংগঠনিক সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পরে তিনি ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক নির্বাচিত হন। দীর্ঘ ২১ বছর তিনি দক্ষতার সাথে এ দায়িত্ব পালন করেছেন। এরপর তিনি জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক হন। দীর্ঘ ১০ বছর এ দায়িত্ব পালনের পর তিনি জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি হন। এখনও তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।

রাজনৈতিক জীবনে তিনি যেমন সফল, জনপ্রতিনিধি হিসেবেও তিনি একজন সফল ব্যক্তিত্ব। তিনি ১৯৯০ সালে প্রথম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন, এরপর ২০০৯ সালে তিনি পুনরায় উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত এবং ২০১৯ সালে তিনি তৃতীয়বার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

  1. এরপর পাবনা-৪ আসনের প্রয়াত সাংসদ বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব শামসুর রহমান শরীফ ডিলু মৃত্যু বরণ করলে আসনটি শুন্য হয়। এ আসনে তিনি উপনির্বাচনে অংশগ্রহন করে জনগনের বিপুল ভোটে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বর্তমানে তিনি ঈশ্বরদী-আটঘরিয়ার গনমানুষের পাশে থেকে সংসদ সদস্যের দায়িত্ব পালন করছেন। শুধু তাই নয় তিনি একজন অপরাজেয় ব্যক্তি, কখনও কোন নির্বাচনে পরাজিত হননি। দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে তিনি নানা বাধা-বিপত্তির, ঘাত-প্রতিঘাতের সম্মুখীন হয়েছেন। সেসকল প্রতিকুলতাকে তিনি ধৈর্য ও প্রজ্ঞার সাথে মোকাবেলা করে সফল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন।জীবন সংগ্রামে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অটুট ছিলেন,কোন লোভ লালসা তাঁকে কখনো ছুয়ে দেখতে পারেনি।তার কখনো লাঠিয়াল বাহিনী ছিলো,সৎ ও উদার মনের ব্যাক্তিটি দেশ ও নৌকার জন্য সংগ্রাম করে গেছেন।জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর সময়কালে রাজনীতি করা এই নেতা জীবনের পুরো সময়ই কাটিয়েছেন রাজনীতির সাথে। তিনি বিভিন্ন চক্রান্তে জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন।কখনো আওয়ামীলীগের আদর্শ থেকে পদচ্যূত হননি। তিনবারের নির্বাচিত ঈশ্বরদী উপজেলা পরিষদের সফল চেয়ারম্যান সর্বশেষ অলঙ্কৃত করেছেন পাবনা-৪ আসনের সংসদ পদ। দায়িত্বের অল্পদিনের মধ্যেই তিনি ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়ায় রাস্তা-ঘাটসহ অবকাঠামোগত উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করছেন। তাকে জেলার দায়িত্ব দিলে দলের অভ্যন্তরীন কোন্দলসহ সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন অনেকেই। উল্লেখ্য যে, পাবনার জেলার অন্যান্য উপজেলার থেকে ঈশ্বরদী উপজেলার সাতটি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাঁর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় নৌকার বিদ্রোহীপ্রার্থী ছিল নগন্য ও উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নেই নৌকার প্রার্থী বিজয়ী হন। এ দাবির প্রতি একমত পোষণ করে ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহক আলী মালিথা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নুরুজ্জামান বিশ্বাসকে দলের জেলা সভাপতি’র দায়িত্ব দিলে তিনি সেখানে সফলতার স্বাক্ষর রাখবেন। ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা নায়েব আলী বিশ্বাস বলেন , ‘সাংসদ নুরুজ্জামান বিশ্বাস তো আমাদের ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়ার নয়নমণি, ত্যাগী, মেধাবী, এক কথায় অনন্যা। যোগ্যতম এই মানবকে আমরা আবারও দেখতে চাই জনবান্ধব সরকারের একজন পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে।’ উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের ২০ ডিসেম্বর পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে নুরুজ্জামান বিশ্বাসকে সহ-সভাপতি করা হয়।জননেত্রী শেখ হাসিনা তাকে নৌকা প্রতিক মনোনীর করার পর সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তিনি অভ্যান্তরীন কোন্দল ও ভঙ্গুর রাজনীতিকে ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন।গত দের বছরে ঈশ্বরদীতে কোন সহিংসতা সৃষ্টি হয়নি যা ঈশ্বরদীতে শান্তি ও সুবাতাস বলে মনে করেন ঈশ্বরদী বাসী।কোন সহিংসতা ছাড়া ঈশ্বরদী-আটঘরিয়ার আওয়ামীলীগ সুসংগঠিত হয়েছে।পাবনা জেলা সহ উত্তরবঙ্গের রাজনীতিতে তার ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.