গৌরীপুরে শাহগঞ্জে হামলা-সংঘর্ষ, নিহত-১, আহত-৪, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ

0

মো. হুমায়ুন কবির, গৌরীপুর : ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার শাহগঞ্জ বাজারে অবস্থিত অচিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদে বৃহস্পতিবার ২ জুন রাতে হামলা-ভাংচুর, সংঘর্ষে ৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ৩ জনকে আশংকাজনক অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় খান্দার গ্রামের মৃত জাফর আলীর পুত্র আবুল কালাম (৬০) মারা যান। নিশ্চিত করেন গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মনিরুজ্জামান মজুমদার।

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গাগলা ও খান্দার গ্রামবাসীর মাঝে প্রায় দু’ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়াকে কেন্দ্র করে শাহগঞ্জ বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। বাজারে আসা লোকজন দিক-বেদিক ছুটাছুটি করে পালায় এবং বন্ধ হয়ে যায় সকল দোকানপাট। হামলাকারীরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কক্ষে প্রবেশ করে চেয়ারম্যানের সহযোগী মমতাজ উদ্দিন হিরাকে (২৭) উপর্যুপুরি কুপিয়ে গুরুত্বর আহত করে। এ সময় ইউনিয়ন পরিষদের অপর একটি কক্ষে অচিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জায়েদুর রহমান আশ্রয় নিলে সেখানে প্রায় দুই ঘন্টা অবরুদ্ধ ছিলেন। গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মনিরুজ্জামান মজুমদারের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

অচিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. জায়েদুর রহমান জানান, ইউনিয়ন পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের মেম্বার সুবুর মিয়া গাগলা গ্রামের বাসিন্দা কাঠমেস্ত্রী আব্দুর রাশিদের নিকট থেকে ‘খাট’ কিনেন। কাঠের দরদামকে কেন্দ্র করে দু’জনের মাঝে গত ৩০ মে হাতাহাতি হয়। সুবুর মেম্বারের লোক নয়নের নেতৃত্বে কয়েকজন গিয়ে কাঠমেন্ত্রী আব্দুর রাশিদকে ১জুন শাসিয়ে আসে। এ নিয়ে মারামারিও হয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার (১জুন) রাতে দু’পক্ষকে নিয়ে অমীমাংসিতভাবে সালিশ শেষ হয়। বৃহস্পতিবার ২জুন দুপুরে জোহরের নামাজের পর সালিশ হওয়ার সময় নির্ধারণ ছিলো। এ সময় প্রচন্ড বৃষ্টি হওয়ায় সালিশ বিলম্ব হয়। পরে সিদ্ধান্ত হয় আছরের নামাজের পর সালিশ অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে গাগলা গ্রামের চান মিয়ার পুত্র রাকিবুল ইসলাম (২৮) শাহগঞ্জ বাজারে আসলে খান্দারের লোকজন তাকে ধরে নিয়ে মারধর করে। এরপরেই খান্দার ও গাগলার কতিপয় লোকজন সংঘর্ষ-ধাওয়া, পাল্টা ধাওয়ায় লিপ্ত হন।

ইউনিয়ন পরিষদে ইট-পাথর নিক্ষেপ করে ও কুপিয়ে দরজা-জানালা ভাংচুর করে। পরিষদের অফিসকক্ষে ঢুকে গাগলা গ্রামের মমতাজ উদ্দিন হিরাকে কুপিয়ে পুরো অফিস রক্তাক্ত করেছে। গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (তদন্ত) মনিরুজ্জামান মজুমদার জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় খান্দার গ্রামের মৃত জাফর আলীর পুত্র আবুল কালাম (৬০) নিহত হন। এছাড়াও গাগলা গ্রামের চান মিয়ার পুত্র রাকিবুল ইসলাম (২৮), মহি উদ্দিন বাদশার পুত্র মমতাজ উদ্দিন হিরা (২৭), খান্দারের আব্দুর রাজ্জাকের পুত্র শেখ হালিম (৩৮) ও শাহজাহান (৩০) আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ দেয়নি। অপরদিকে মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে গেলে খান্দার গ্রামের লোকজন গাগলা গ্রামে এসে বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করেছে

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.