ঈশ্বরদী উপজেলায় গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে লিচুর সোনালী মুকুল
মোঃ রিমন হোসেন, স্টাফ রিপোর্টার : বছরঘুরে এসেছে বসন্ত। প্রকৃতিতে তাই লেগেছে রংয়ের ছোঁয়া। বসন্তের আগমনে শীত বিদায়ের লগ্নে প্রকৃতি সেজেছে নতুন সাজে। হিমেল পরশে বিবর্ণ প্রকৃতিতে জেগে উঠছে নবীন জীবনের ঢেউ। নীল আকাশে সোনা ঝরা আলোকের মতই হৃদয় আন্দোলিত ।চারদিকে সবুজের সমাহার। ঋতু বদলের সঙ্গে সঙ্গে পাবনার ঈশ্বরদীতে সবুজ পাতার ফাঁকে প্রতিটি লিচুর বাগানে গাছে গাছে উঁকি দিচ্ছে নাক ফুলের মতো লিচুর সোনালি মুকুল। এরইমধ্যে ভালো ফলন পাওয়ার আশায় কৃষকরা লিচু গাছের পরিচর্যায় ব্যস্ত রয়েছেন। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের ঘুরে এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে।
আবহাওয়া অনুকূল, উর্বর মাটির কারণে পাবনা জেলার ঈশ্বরদী উপজেলা কৃষিতে বেশ সমৃদ্ধ। লিচু উৎপাদনের জন্য প্রসিদ্ধ লাভ করায় এ উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নের মানুষ এখন লিচু চাষের দিকে ঝুঁকেছে। মাঘ মাসের শেষ থেকে ফাল্গুনের মাঝামাঝি সময়ে লিচুর মুকুল আসতে শুরু করে। ফাল্গুনের শেষে লিচুর সোনারঙা এসব মুকুল ফোটে। চৈত্রের শুরুতে ফুলগুলো কুঁড়িতে রূপ ধারণ করে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে জৈষ্ঠ্যমাসের শুরুতে এসব গাছে গাছে টকটকে লাল লিচুর দেখা মিলবে। উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে বর্তমানে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে প্রায় ৩১০০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের লিচু চাষ হয়ে থাকে।
সরজমিনে ঘুরে দেখা যায়, বাগানগুলোতে লিচুর মুকুল আসার আগে থেকে লিচু চাষিরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। গাছের গোড়ায় ড্রেন করা, পানি দেওয়া, স্প্রে করা সহ লিচু গাছের পরিচর্যা শুরু হয়ে গেছে। কিছুদিন পর ফুল ফুটবে এবং পরে তা থেকে লিচুর গুটি বের হবে। তখন কীটনাশকসহ বিভিন্ন ভিটামিন স্প্রে করবে কৃষকরা। এছাড়াও লিচু মোটা জাতকরনে মাটিতে জৈব সার, হরমোনসহ বিভিন্ন রাসায়নিক সার প্রয়োগ করবেন তারা।
ঈশ্বরদী উপজেলার লিচু চাষিরা জানান, এ বছরে লিচুর মুকুল আসার সময় হালকা বৃষ্টি হওয়ার কারণে পূর্ণাঙ্গ মুকুল বের হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এসব মুকুল ফুটতে শুরু করবে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর লিচুর বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা, মিতা সরকার জানান, ফাল্গুনের শুরুতে লিচুর মুকুল বের হতে শুরু করেছে। গতবছরের তুলনায় এ বছর লিচু ফলন বেশি হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রতি বছরই লিচু গাছে মুকুল আসার আগে ও পরে রোগ বালাই দমন ও পরিচর্যা সম্পর্কে কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়। এবারও মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সর্বক্ষণ পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে কৃষকরা আশানুরূপ ফলন পাবে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।