মণিরামপুরে রঙ্গীন মাছ চাষে সফল নারী উদ্যোক্তা মনোয়ারা
যশোর প্রতিনিধি : মণিরামপুরে বাহারি মাছ চাষে সফল নারী উদ্যোক্তা মনোয়ারা পারভীন বৃষ্টি। এ থেকে তিনি তার ভাগ্য বদলের স্বপ্ন দেখছেন। প্রতি মাসে শুধু রেনু বিক্রি করে লাখ টাকা আয়ের প্রত্যাশা রয়েছে তার। বাহারী (অর্নামেন্টাল) বা রঙ্গীন মাছ হিসেবে পরিচিত এ মাছ অধিকাংশই বিদেশী জাতের হয়ে থাকে।
দেশ-বিদেশের অভিজাত শপিং মল, অফিস কিংবা বাসা বাড়িতে অ্যাকুরিয়ামে শোভাবর্ধনে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। প্রবাসী স্বামীর অনুপ্রেরনায় এ মাছ চাষে উদ্যোগী হয়েছেন মনোয়ারা।
মনোয়ারা পারভিন বৃষ্টি উপজেলার সালামতপুর গ্রামের আব্দুল আহাদের স্ত্রী। ২০০৫ সালে ভাগ্য বদলের আশায় স্বামীর সাথে মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমান তিনি। সেখানে ৫ বছর থেকে কন্যা সন্তানের জন্মের পর ২০১৩ সালে দেশে চলে আসেন। মেয়ে নূর হাবিবা রিনি (১০) এবং বাধন (৬) নামের ছেলে সন্তান রয়েছে তাদের। নিজের ইচ্ছা শক্তি আর প্রবাসী স্বামীর উৎসাহে মূলত: কর্মের মধ্যে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে মনোয়ারা এ কাজে নামেন।
তার বাড়িতে ছাদের ওপর কাঠ আর পলিথিন দিয়ে হাউজ বানিয়ে এ বাহারি রঙ্গীন মাছ চাষ করছেন। জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে ফিরে স্বামীর বাড়িতে ছাদে ফলদ, বনজ, ঔষধিসহ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ লাগান। এরপর পার্শ্ববর্তী ঝিকরগাছা উপজেলায় ১০ বিঘা জমিতে নার্সারী গড়ে তোলেন। সেখানে সফল হন তিনি। এরপর বাজারে চাহিদা রয়েছে এমন কিছু করার ইচ্ছা পেয়ে বসে তাকে।
পরিচিতি একজনের পরামর্শে স্বল্প পুঁজি বিনিয়োগ করে অধিক মুনাফার প্রত্যাশায় মাস পাঁচেক আগে বিভিন্ন জায়গা থেকে বাহারি মাছ সংগ্রহ করে এ মাছ চাষে নেমে পড়ে। পাপ্পি, অটোবিট, গোল্ডেন ফিস, কৈকার্প, কমেট,টিউলিফ-এর ২০ প্রজাতির বাহারি মাছ চাষ রয়েছে তার খামারে। বাহারি মাছ কিনতে দেশ-বিদেশ অর্ডার পেয়েছেন বলে জানান তিনি। বাজারে চাহিদা থাকায় ইতোমধ্যে তিনি ২০ বিঘা জমি লীজ নিয়ে ছোট ছোট পুকুর বানিয়ে এ বাহারি মাছ চাষ সম্প্রসারনের প্রকল্প হাতে নিয়েছেন।
এ মাছের রেনু উৎপাদনে হ্যাচারী করারও উদ্যোগ নিয়েছেন। উপজেলা মৎস্য অফিস তার এ কাজে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছেন বলে তিনি জানান। তিনি বাহারি মাছের পোনা বিক্রি করে মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা উপার্জনের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা রিপন কুমার ঘোষ বলেন, আসলেই মনোয়ারা পারভীন বৃষ্টি একজন উদ্যোমি নারী। বাহারি মাছ চাষ করে ভাগ্য বদলে তাকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাবে বলে তার প্রত্যাশা। তিনি নিজেও সেখানে গেছেন। মনোয়ারর বাহারি মাছ চাষে সব ধরনের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান তিনি।