ষ্ট্রোকে মৃত্যুবরণ করলেও গোসল করাতেও যায়নি কেউ । সনম মাহবুব ও শিশির ইসলামের অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত ।

0

স্টাফ রিপোর্টার : ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে এক ব্যাক্তির মৃত্যুর পরে ভীত হয়ে তার মরদেহের গোসলও করাতে যায়নি কেউ । দীর্ঘ সময়ে লাশটি পড়ে ছিলো বাড়ির ঘড়ের ভেতরেই বিছানাতে। ভয়ে কেউ লাশটির কাছে পর্যন্ত যায়নি । এমনকি পরিবারের সদস্যরাও লাশটি ফেলে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেশ দুরে । এঘটনা পাবনা সদর থানার গয়েশপুরের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ধোপাদহ গ্রামের ।

গতকাল সকাল পৌনে আটটায় ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরন করেন স্থানীয় মরহুম রায়হান উদ্দিন খানের ছেলে নুরুজ্জামান নুরু খান (৫৫)। তিনি দীর্ঘদিন ডায়াবেটিকস ও উচ্চ রক্তচাপে ভুগছিলেন। তার মৃত্যু ও মরদেহের এমন পড়ে থাকার খবর জেনে সাংবাদিক ছিফাত রহমান সনমের আহবানে সাড়া দেয়ে ও তারই তত্বাবধায়নে সেখানে ছুটে যান তহুরা আজিজ ফাউন্ডেশনের পরিচালক সমাজকর্মী দেওয়ান মাহবুব এবং নাট্যকর্মী ও সমাজকর্মী শিশির ইসলাম। যাওয়ার সময়ে তাদেরকে সুরক্ষিত দুটি অত্যাধুনিক পিপিই পোশাকসহ সুরক্ষিত উপকরণ দিয়ে সহযোগিতা করেন জেলা যুবলীগের যুগ্ন আহ্বায়ক শিবলী সাদিক।

সে বাড়িতে গিয়ে বিছানা থেকে মরদেহ তুলে ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী লাশটি গোসল করান দেওয়ান মাহবুব ও শিশির ইসলাম । স্থানীয় কোন মানুষ এসময় তাদেরকে সহায়তা করতেও এগিয়ে আসেনি। স্থানীয় ইমাম সাহেবও গোসল করাতে আসেননি। তবে তিনি দুর থেকে দাড়িয়ে মাহবুব ও শিশিরকে সকল প্রক্রিয়া সম্পর্কে ধারনা দিয়ে সহযোগিতা করেন । এরপরে বিকাল চারটায় স্থানীয় মসজিদে স্বল্প কয়েকজনের উপস্থিতিতে জানাজা শেষে তাকে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয় । সমস্ত কাজ শেষ করে মাহবুব ও শিশির ঐ গ্রাম থেকে ফেরার সময়ে কোন মানুষ তাদের আশেপাশেও বা কাছেও ভেড়েনি। কোন ভ্যানচালক তাদেরকে ভ্যানে তোলেননি ভয়ে। এরপরে অনেক দুরে পায়ে হেটে তারা দুজন বিশ্বরোড অবধি এসে অটোবাইকে শহর পর্যন্ত আসেন। তারা বলেন, এটা কোন যুক্তির কথা হলো না। মানুষটা তো মারা গেছে ষ্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে। কিন্তু এমন অমানবিকতা কখনই কাম্য নয়। সকল মানুষকে মানুষের বিপদে আপদে পাশে থাকার আহবান জানান তারা। উল্লেখ্য, বিষয়টি জেলা পুলিশ ও স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করেই মরদেহের গোসল, জানাজা ও দাফন সম্পন্ন করা হয়।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.