ভাঙ্গা ঘরে আলো ফোটানো ভ্যান চালকের মুন্নীর গল্প

0

নিজস্ব প্রতিবেদক : ভাঙ্গা ঘরে আলো ফোটানো মুন্নীর সাফল্য ।  ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস কোর্সের প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রমে ৩১১০তম হয়ে এম আব্দুর রহিম মেডিকেল কলেজ দিনাজপুরে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন সুজানগরের হতদরিদ্র ভ্যানচালকের মেয়ে মোছা. জান্নাতুম মৌমিতা মুন্নী। তিনি পাবনা মেডিকেল কলেজ কেন্দ্র থেকে পরীক্ষায় অংশ নেন।

ভর্তি পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের মধ্যে তিনি পেয়েছেন ৬৯.৭৫ নম্বর। শিক্ষা জীবনজুড়েই আর্থিক দুশ্চিন্তা ছিল মুন্নীর নিত্যসঙ্গী। মেধার জোরে সব বাধা জয় করে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেলেও আবার সেই আর্থিক দুশ্চিন্তাই তাকে ঘিরে ধরেছে।

ভর্তির সুযোগ পেলেও বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। কোথায় পাবেন অর্থ, কে দেবেন অর্থের জোগান- এ শঙ্কায় দিন কাটছে দরিদ্র পরিবারের মেয়ে মুন্নীর।

মুন্নী পাবনা জেলার সুজানগর উপজেলার তাঁতীবন্দ ইউনিয়নের উদয়পুর গ্রামের বাকীবিল্লাহ ও মোছা. রওশন আরা খাতুনের মেয়ে। ৪ সন্তানের মধ্যে মুন্নী বড়। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি মুন্নীর পিতা একজন দরিদ্র ভ্যানচালক। মুন্নীর পিতার নিজ বাড়ির ২ কাঠা জায়গা ছাড়া তেমন কিছুই নেই।

বাড়িতে রয়েছে একটি ছোট টিনের ঘর। সেই একটি ঘরেই থাকেন পরিবারের সবাই। পরিবারে নুন আনতে পান্তা ফুরায় মুন্নীর পিতার। মেডিকেলে ভর্তি ও পড়ার খরচ জোগানোর সামর্থ্য তার পিতার নেই।

মুন্নীর পিতা বাকীবিল্লাহ বলেন, ব্র্যাকের স্থানীয় শাখা থেকে ২০ হাজার টাকা লোন নিয়ে একটি ভ্যান ক্রয় করি। সেই ভ্যান চালিয়ে দিনে যে দুই-তিনশত টাকা আয় হয় সেই টাকা দিয়েই কোনোরকম কষ্টে পরিবারের ৬ জনের মুখের আহার তুলে দেওয়াসহ সংসারের অন্যান্য খরচ চালাতে হয়। তাই সংসার চালানো যেখানে দায়, সেখানে মেয়ের মেডিকেলে লেখাপড়ার খরচ চালানো আমার কাছে দুঃস্বপ্ন। তবে স্বপ্ন দেখি আমার মেয়ে ডাক্তার হবে। কিন্তু টাকার অভাবে মেয়েকে ভর্তি করাতে পারবেন কিনা এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছে।

সরকার ও প্রশাসনের সহযোগীতাই পারে মুন্নির মতো ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষাজীবন সহজ করে দিতে৷

এরই মধ্যে বেশকিছু মানবিক মানুষ মুন্নীর পড়াশোনার খরচ বহণ করতে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.