ইবি শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা গ্রহণ শুরু
ইবি প্রতিনিধি: নানা জটিলতার পর ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীদের করোনা টিকা গ্রহণ শুরু হয়েছে। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সুরক্ষা ওয়েবসাইট/অ্যাপে নিবন্ধন সম্পন্ন করে নিজ নিজ এলাকায় টিকা গ্রহণ করছেন শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার (১৩ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
জানা গেছে, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) নির্দেশনার ১০ দিন পর টিকা গ্রহণের লক্ষ্যে গত রবিবার (১১ জুলাই) থেকে সুরক্ষা ওয়েবসাইট/অ্যাপ এ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিবন্ধন শুরু হয়েছে। তবে শুধু জাতীয় পরিচয়পত্রধারী শিক্ষার্থীরা সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধন করতে পারছেন। একইসাথে ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকায় যেসব শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ নেই তাদের পুনরায় নিবন্ধনের নির্দেশনা দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
এর আগে ১ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ওয়েবসাইট/অ্যাপের মাধ্যমে নিবন্ধনের জন্য নির্দেশনা দেয় ইউজিসি। এরপর ২ জুলাই শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা ওয়েবসাইট/অ্যাপের মাধ্যমে (জাতীয় পরিচয় পত্রের নম্বরসহ) নিবন্ধনের নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। নির্দেশনার পরপরই শিক্ষার্থীরা নিবন্ধনের চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিক্ষার্থীরা। পরে ৫ জুলাই নিবন্ধনকৃত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশের নির্দেশনা দেয় ইউজিসি। নির্দেশনার ৬ দিন পর গত রবিবার (১১ জুলাই) নিবন্ধন করা শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
পঞ্চগড় থেকে চীনের সিনোফার্ম টিকার প্রথম ডোজ গ্রহণ করেছেন বায়োমেডিকেল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী মাসুদুর রহমান। তিনি বিডি২৪ভিউজ কে বলেন, ‘সরকারের কার্যকরী সিদ্ধান্তের সাথে তাল মিলিয়ে ভ্যাকসিন গ্রহণ করলাম। শুধু ভ্যাকসিনই যথেষ্ট মনে হচ্ছে না। নিজের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার দিকে নিজেকে আরো বেশী খেয়াল রাখতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি আরো বেশী জোড়ালো করতে হবে।’
বরিশাল থেকে টিকা গ্রহণ করা আল-কুরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাইফুদ্দিন বলেন, ‘প্রথমে কিছুটা ভয় ভয় লাগছিল বিভিন্ন গুজব শুনে। তারপরও সাহস করে গেলাম টিকা নিতে। ব্যথা লাগার যেই ব্যাপারটা আগে শুনেছিলাম,তা আমি মোটেই অনুভব করিনি। আলহামদুলিল্লাহ, এখন কিছুটা হলেও সেফ লাগছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে ধন্যবাদ, আমাদের জন্য টিকা গ্রহণ সহজ করে দেওয়ার জন্য।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের টিকা গ্রহণ কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার, টিকা সরবরাহকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আশা করছি দ্রুততম সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীকে টিকার আওতায় আনা হবে বলে।’
তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক প্রকাশিত তালিকায় যাদের নাম নেই কিংবা ইতিপূর্বে যারা রেজিস্ট্রেশন করেনি তাদের দ্রুততম সময়ে নির্ধারিত গুগল ফর্মে রেজিস্ট্রেশন করতে বলা হচ্ছে। যাদের জাতীয়পরিচয় পত্র নেই তারা আপাতত রেজিস্ট্রেশন করতে পারছে না। সে ব্যপারে সরকারি সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছি। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
প্রসঙ্গত, ২ মার্চ ইউজিসির নির্দেশনা অনুযায়ী আবাসিক শিক্ষার্থীদের করোনার ভ্যাক্সিন নিশ্চিত করতে তালিকা চেয়েছিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। পরে ১৪ মার্চ আবাসিক ও অনাবাসিক সকলের তালিকা চেয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তবে রেজিস্ট্রেশন কম সম্পন্ন হওয়ায় তৃতীয় বার ২৫ মে পর্যন্ত সময় বৃদ্ধি করে।
সর্বশেষ চতুর্থ বারেরমতো ৩০ মে পর্যন্ত রেজিস্ট্রেশনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। চার বার সময়সীমা বৃদ্ধি করার পরেও টিকা নিতে ৫৭ ভাগ শিক্ষার্থী নিবন্ধন করেনি। বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ হাজার ৩৮৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে নিবন্ধন করেছিল ৬ হাজার ৬০৭ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে যাদের তথ্যগত ভুল রয়েছে যেসব শিক্ষার্থী বাদে ওয়েবসাইটে নতুনভাবে ৫ হাজার ৫৭৭ জন শিক্ষার্থীর একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।