হলুদ সোনালুর আঁচল তলে মেতেছে ইবি শিক্ষার্থীরা

0

আবির হোসেন, ইবি: গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদ, তীব্র গরমে জনজীবনে হাঁসফাঁস। জীবনের গতি মন্থর হয়ে গেছে চারিদিকে। খরতাপে পুড়ছে প্রকৃতির সবকিছু, সূচি হচ্ছে ধরা। এরই সাথে চারদিকে কৃষ্ণচূড়া, জারুল, রঙ্গন, কণকচূড়া ও সোনালু ছড়াচ্ছে স্নিগ্ধতা। কৃষ্ণচূড়ার রক্তচক্ষু প্রকৃতিকে দিয়েছে নবপ্রান, গাঢ় বেগুণী জারুল ফুলের মাঝের শ্বেত বর্ণের মায়ায় পড়ছে অনেকেই। হলুদ বর্ণের সোনালুর ঝাড়বাতিতে আলোকিত হচ্ছে প্রাঙ্গণ।

এরই মাঝে ক্লাস পরীক্ষার দৌঁড়ঝাপে অতিষ্ঠ জীবন। সকাল হতে না হতেই শুরু হয় জীবনের ব্যস্থতা। বেলা গড়িয়ে দুপুর হয়, ক্লান্তি আসে পরিশান্ত দেহে। একটুখানি সুখের পরশ পেতে মানুষের কতই না আয়োজন। সকালের বাস ধরে কাম্পাসে আসা, ক্লাস-পরীক্ষা শেষে আবারো শহরে ফেরা রীতিমতো যুদ্ধের শামিল। তবুও জীবন এভাবেই সুন্দর। ক্যাম্পাসের বন্ধু-বান্ধবীর সাথে আড্ডা মূহুর্তেই ভুলিয়ে দেয় জীবনের শত হতাশা-দুঃখ-দুর্দশা। তাই তো ক্লাস শেষে সবাই একসাথে গল্পের আসর না জমিয়ে ঘরে ফেরা হয় না।

তপ্ত দুপুরে যখন সূর্য ঠিক মাথার উপরে থাকে তখন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ডায়না চত্বর রূপ নেয় প্রানের মিলনমেলায়। ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে গল্পের আসর পেতে বসে শিক্ষার্থীরা। ভাগ করে নেয় একে অপরের সুখ-দুঃখ। তাদের আড্ডায় ভিন্ন মাত্রা যোগ করে ঝালমুড়ি, বাদাম ও আইসক্রীম। মাথার উপর ঝাড়বাতির মতো ছেয়ে আছে হলুদ সোনালু। প্রায় অর্ধশত গাছে ফুটেছে সোনালু, যা ইবির ডায়না চত্বরের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে বহুগুণ। দূর থেকে এগুলো দেখলে মনে হয়, হলুদ শাড়ি লেপ্তে আছে কোনো এক রূপসীর শরীরের পর।

সকালে ক্লাস শুরুর আগে শিক্ষার্থীদের গল্পের জায়গা এই ডায়না চত্বর। আবার দুপুরে ক্লাস শেষে বাসের জন্য অপেক্ষার স্থানও এই ডায়না। শিক্ষার্থীদের অপেক্ষার দমবন্ধকর এসব সময়গুলোকে সোনালু করেছে রঙিন। কেউ ফুলের ছবি তুলছে কেউবা সোনালুর সাথে নিজের সেলফি তুলে ফেসবুক স্টোরিতে শেয়ারে ব্যস্ত। এই চত্বরে এসে সোনালুর সাথে ছবি তোলেনি এমন মানুষের জুড়ি মেলা ভার। মাঝে মাঝে সহপাঠীরা ফুল নিয়ে কাড়াকাড়িতে মেতে ওঠে। তাদের সারাদিনের ক্লান্তি যেন নিমেষেই দূর করে দেয় এই সোনালু।

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী কাকন সরকার বলেন, ‘গ্রীষ্মকালের অসহ্যকর গরম ও অস্বস্তিকর দম বন্ধকর পরিবেশের মধ্যে কিছু জিনিস মনকে পুলকিত করে। গাছে গাছে হলুদ সোনালু ফুল এবং লালে পরিপূর্ণ কৃষ্ণচূড়া গাছের দেখা মেলে। প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য দেখে মন পুলকিত হতে বাধ্য।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের স্নাতক চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জামির হোসেন বলেন, ‘দীর্ঘদিনের ছুটি শেষে প্রথমদিন ক্যাম্পাসের গেইট দিয়ে ঢুকেই ডায়না চত্বরে সোনা রঙের সোনালু ফুল দেখে মুগ্ধ হয়েছি। এ ছাড়া ক্যাম্পাসজুড়ে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে জারুল, কৃষ্ণচূড়া সহ রঙ-বেরঙের ফুল। ক্লাস শেষে বন্ধুদের সঙ্গে এসব বৃক্ষের ছায়ায় আসলে মনে শান্তির সুবাতাস বইয়ে যায়।’

 

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.