হৃদয় শীল কলেজে পড়েও কাজ করে সেলুনে

0

সাইফুর নিশাদ, মনোহরদী (নরসিংদী) প্রতিনিধি : সমবয়সীরা যখন গগনবিদারী আওয়াজ তুলে রাস্তায় বাইক দাপিয়ে বেড়ায় অথবা চুটিয়ে আড্ডা মারে হৃদয় সে সময় পিতার সাথে সেলুনে কাজ করে। আবার কলেজেও পড়ে সে। তার রোজগারে তার পড়াশোনার খরচ উঠে আবার পিতার সংসারেও যথেষ্ট সহায়ক হয়।

মনোহরদী বাজার সংলগ্ন হিন্দু পাড়ার মোড়ের সেলুন দোকানী নেপাল চন্দ্র শীলের একমাত্র পুত্র হৃদয় শীল(১৭)। মনোহরদী পৌর এলাকার ৭ নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা হৃদয়।এ বছর মনোহরদী সরকারী কলেজ থেকে এইচএসসি দেবে সে। তার সমবয়সী বন্ধুরা যখন পড়াশোনার ফাঁকে আড্ডা মারে, বাইক নিয়ে সড়ক দাপিয়ে বেড়ায় অথবা মোবাইলের আসক্তিতে পড়ে থাকে। হৃদয় সেদিকে চোখ তুলেও তাকায় না। সে সময় হয় শান্তশিষ্টভাবে পিতার পাশে দাঁড়িয়ে চুল কাটে ,নয় মুখ শেভে ব্যস্ত থাকে সে। কিংবা কাষ্টমারের অপেক্ষায় থাকে। আলাপকালে হৃদয় জানায়, অষ্টম শ্রেনীতে থাকতেই তার পড়াশোনার পাট চুকে যেতো। পারিবারিক অনটনের মুখে স্বর্ণের দোকানের শিক্ষানবীশি করতে তাগিদ ছিলো তার উপরে। যা’ থেকে দু পয়সা আয় হতো সংসারে।

কিন্তু বাবা নেপালের আগ্রহে পড়াশোনা এগিয়েছে তার। এখন এ কাজে ৪শ’ থেকে ৬শ’ টাকা আয় হয় তার দৈনিক।পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারে দু’ পয়সা সাহায্য করতে পেরে রিদয় নিজেও খুশী বলে জানালো সে। রিদয়ের পিতা নেপাল জানান, হৃদয় তার দৈনিক আয়ের সবটুকু দিনশেষে তার মায়ের হাতে তুলে দেয়। তার মা তা’থেকে সংসারে খরচ মেটান এবং হৃদয়ের জামা কাপড়সহ পড়াশোনার খরচ জোগান দেন। ১৫/২০ টাকা হাত খরচ লাগলেও তা’ মার কাছ থেকেই চেয়ে নেয় বলে জানান নেপাল। নেপাল বলেন, পিতৃ পিতামহের পেশা তার এটি। ছেলে অযথা বাইরে ঘুরাফেরা না করে পড়াশোনা ঠিক রেখে পাশে দাঁড়িয়ে সেলুনে কাজ করে এটি তার একটি মস্ত তৃপ্তি। সে তৃপ্তি পূর্ণতা পাবে যদি রিদয় লেখাপড়া করে ভবিষ্যতে ভালো কিছু করতে পারে ।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.