স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই রেড তালিকার অন্তর্ভুক্ত দিনাজপুর জেলায়

0

মোঃ আসাদুল্লাহ আল গালিব দিনাজপুর প্রতিনিধি : বৈশ্বিক মহামারী করোনার ভাইরাসের আতঙ্কে রয়েছে সারাবিশ্ব। বাংলাদেশের এই মহামারি ব্যাপক হারে সংক্রমণের কারণে বেশ কয়েকটি জেলাকে রেড বা লাল অঞ্চল ঘোষণা করা হয়েছে।

দেশের উত্তরের বৃহত্তর জেলা দিনাজপুরকেও রেড তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।ব্যস্তময় শহরে সকলেই ব্যস্ত নিজ নিজ কাছে।কেউই মেনে চলছে না স্বাস্থ্যবিধি, নেই কোন সামাজিক দূরত্ব। অর্ধেকের বেশি মানুষ ব্যবহার করছে না মাস্ক। এভাবেই চলছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রন সংক্রমণ রোধে সরকারের ঘোষিত বিধিনিষেধের বাস্তবায়ন।

জেলায় সকল স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের টিকা প্রদানের কার্যক্রম চলছে কিন্তু সেখানেও নেই কোন স্বাস্থ্যবিধি।সেখানে ব্যাপক অব্যস্থাপনার অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোনো ধরনের শৃঙ্খলা ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ না করায় শিক্ষার্থীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। এতে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। ফলে টিকা নিতে এসে প্রতিরোধের পরিবর্তে করোনা সংক্রমণের আশঙ্কা বেড়ে যাচ্ছে।

এদিকে দিনাজপুর জেলায় আবারও বেড়েছে করোনা শনাক্তের সংখ্যা। শুক্রবার নতুন করে ৬৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। আগের দিন (বৃহস্পতিবার) শনাক্তের সংখ্যা ছিল ৩৭ জন। তার আগের দিন বুধবার করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৪৮ জন।

শনাক্ত সংখ্যা বিবেচনায় রংপুর বিভাগের জেলাগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে দিনাজপুর। এখানে ১৫ হাজার ১৫৬ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে।

দিনাজপুর শহরের প্রাণকেন্দ্র বাহাদুর বাজার মোড়,লিলির মোড় ও স্টেশন রোডসহ বিভিন্ন স্থানে দেখা যায়, ব্যস্ত সময় পার করছেন শহরে আসা মানুষ। এদের অধিকাংশের মুখেই নেই মাস্ক,নেই কোন স্বাস্থ্যবিধি।স্বাভাবিকভাবেই চলাচল করছে সকল মানুষ। মার্কেটের দোকানগুলোতেও রয়েছে উপচে পড়া ভীড়।

অপরদিকে চরম অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে দিনাজপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে স্কুল শিক্ষার্থীদের করোনার টিকা প্রদান করা হচ্ছে। একদিনে ১৪০০ স্কুল শিক্ষার্থীর প্রথম ডোজ টিকা দেওয়া হয়।

টিকা কেন্দ্রে এক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। তাকে নিয়ে সকাল ৯টা থেকে অপেক্ষা করছি। দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা পর দুপুর ২টায় টিকা দিতে পেরেছে। এখানে কোনো নিয়ম-নীতি নেই।নেই কোন স্বাস্থ্যবিধি। চরম অব্যবস্থাপনা ও বিশৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে এ টিকা প্রদান করা হচ্ছে। কারো যেন কোনো দায় নেই। এ বিষয়ে তারা স্বাস্থ্য বিভাগ এবং স্থানীয় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

করোনাভাইরাসের বিস্তার রোধে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালন নিশ্চিতকরণে জেলার বিভিন্ন স্থানে মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট। এছাড়াও দিনাজপুর জেলা প্রশাসক খালিদ মোহাম্মদ জাকি এবং পুলিশ সুপার মোঃ আনোয়ার হোসেন নিজেও শহরে ঘুরে ঘুরে মানুষকে মাস্ক পরিয়ে দিচ্ছেন এবং বিনা মূল্যে মাস্ক বিতরণ করছেন।

দিনাজপুর সিভিল সার্জন ডা. এ এইচ এম বোরহান-উল ইসলাম সিদ্দিকি বলেন, সারাদেশে করোনা সংক্রমণ বেড়েছে। স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অনীহা, একস্থানের মানুষ অন্য স্থানে যাতায়াত, মাস্ক না পরাসহ বিভিন্ন কারণে সংক্রমণ বাড়ছে। চলতি মাসের শুরু থেকে করোনা সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে। জেলায় গত বুধবার ৩৪ দশমিক ৫৬ এবং গতকাল বৃহস্পতিবার ২১ দশমিক ৬৩ শতাংশ সংক্রমণ রয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনে চললে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.