পল্লীচিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় মৃত্যুর মুখে মাদ্রাসা শিক্ষার্থী

0

নেত্রকোণা প্রতিনিধি : চর্ম রোগের সমস্যা নিয়ে পল্লী চিকিৎসকের কাছে যান রহিমা আক্তার (১৩) নামে ষষ্ঠ শ্রেণির এক শিক্ষার্থী। পরে চিকিৎসক পরপর ছয়টি ইনজেকশন দেন ওই শিক্ষার্থীকে। ইনজেকশন দেওয়ার পরেই রহিমার শরীর ফুলে যেতে শুরু করে। অবস্থার অবনতি হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। নেত্রকোনার কলমাকান্দার খারনৈ ইউনিয়নের বাউসাম এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রহিমা আক্তার উপজেলার খারনৈ ইউনিয়নের বাউসামপুর গ্রামের রফিকুল ইসলামের মেয়ে। সে স্থানীয় একটি মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী।

আর অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক আবুল হাসেম উপজেলার বাউসাম গ্রামের বাসিন্দা। বাউসাম বাজারে তার একটি ফার্মেসি রয়েছে। সেখানে রোগী দেখার চেম্বার রয়েছে তার।

শনিবার বিকেলে কলামাকান্দা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আল মামুন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, একজন পল্লী চিকিৎসক চর্ম রোগের চিকিৎসার এখতিয়ার নেই। ওই শিক্ষার্থীকে যে ধরণের ইনজেকশন দেওয়া হয়েছে এ ধরণের হাই সেনসেটিভ ইনজেকশন তিনি দিতে পারেন না। ইনজেকশনের ফলে রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ হয়ে গিয়েছিল। গত চার-পাঁচদিন থেকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এতে রহিমার অবস্থা কিছুটা উন্নতি হয়েছে। অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসককে খোঁজা হচ্ছে। এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী রহিমার দাদী ফাতেমা আক্তার জানান, নাতনী রহিমার সারা শরীরে চুলকানি ও ছোট ফুলা গোটা গোটা দেখা দেয়। তাই তাকে নিয়ে দুই মাস আগে বাউসাম বাজারে পল্লী চিকিৎসক আবুল হাসেমের চেম্বারে যাই। কয়েকদিন বিভিন্ন ট্যাবলেট দিয়েছে, কোনো কাজ না হওয়ায় ডাক্তার রহিমাকে ছয়টি ইনজেকশন দেয়। একপর্যায়ে রহিমার শরীর ফুলে উঠতে থাকে। শরীরে দেখা দেয় নানা সমস্যা। অবস্থার অবনতি হলে ৫ ডিসেম্বর স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় রহিমাকে।

পাঁচ দিনের চিকিৎসায় রহিমা কিছুটা সুস্থ্য হয়েছে। আবুল হাসেমের চিকিৎসায় আমার নাতনী মৃত্যু মুখে চলে গিয়েছিল। অভিযুক্ত আবুল হাসেমসহ পড়াশোনা না করে যারা এভাবে খেয়াল খুশি মতো চিকিৎসা করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি।

অভিযুক্ত পল্লী চিকিৎসক আবুল হাসেম ভুল চিকিৎসার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, এ ধরণের রোগের চিকিৎসার এখতিয়ার আমার নেই। এই চিকিৎসা আসলে আমার করা ঠিক হয়নি। তারপরও রহিমাদের পুরো পরিবার ২০ বছর ধরে আমার কাছে চিকিৎসা নেয়। এলাকার জটিল কোন রোগী আমার কাছে এলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে হাসপতালে রেফার্ড করে থাকি।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.