পুত্রের কিডনীতে নতুন জীবন পেলেন সৈয়দ ইলিয়াস খসরু ত্যাগের উজ্জল দৃষ্টান্ত নাহিদ

0

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): নিউইয়র্কে বাংলাদেশী কমিউনিটির পরিচিত মুখ, টাইম টেলিভিশন-এর বিজনেস বিভাগের পরিচালক সৈয়দ ইলিয়াস খসরুর কিডনী ট্রান্সপ্লান্ট সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (১৯ এপ্রিল) বেলা ১টার সময় নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটি হসপিটালে তার কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট সম্পন্ন হয়। ডা. এন্থনী ওয়াকটিন (Dr. Anthoni Walktin) এর নেতৃত্বে একটি চিকিৎসক টীম এই অস্ত্রোপচার করেন। সৈয়দ ইলিয়াস খসরু এবং কিডনীদাতা তার ২২ বছরের সন্তান নাহিদ ইলিয়াস দু’জনেই সুস্থ আছেন। আর পিতার জীবন রক্ষার জন্য কিডনী দান করে সমাজে উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন পুত্র নাহিদ। খবর ইউএনএ’র।

জানা যায়, সোমবার অপারেশনের পর সৈয়দ খসরু’র অক্সিজেন লেভেল উঠানামা করে। শরীরে প্রচন্ড ব্যথা অনুভূত হয়। কিন্তু নতুন স্থাপিত কিডনী কাজ শুরু করার পর থেকেই তিনি শারীরিকভাবে ভালো অনুভব করতে থাকেন। এদিকে সোমবার সন্ধ্যার পর তার পরিবারের ঘনিষ্ট সদস্যরা তাদের দু’জনের সাথে সাক্ষাৎ করেন বলে পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে। অপরদিকে কিডনীদাতা পুত্র নাহিদ বুধবার হাসপাতাল ছেড়ে বাসায় গেছেন। তিনি সুস্থ আছেন এবং ইলিয়াস খসরুর সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তিনি শুক্রবার (২৩ এপ্রিল) হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে।

বুধবার অপরাহ্নে ইউএনএ প্রতিনিধির সাথে হাসপাতাল থেকে ফোনে সৈয়দ ইলিয়াস খসরু তার কিডনী ট্রান্সপ্লান্ট সফল হওয়ায় মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহতায়ালার প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার পাশাপাশি তার জন্য যারা দোয়া করেছেন তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে বলেন, সবার দোয়ায় আমি সুস্থ হতে চলেছি। কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা নেই। আর আমার ছোট পুত্র আমার জন্য যা করেছে তা আর কি বলো। পিতা হিসেবে আমি গর্বিত। ‘এমন ছেলে যেনো ঘরে ঘরে জন্ম নেয়’ এমন কামনাই করেন সকল পরিবারের জন্য। তিনি আবেগ-আপ্লুত কন্ঠে বলেন, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর যেখানে চিকিৎসকরা আমার বাঁচার আশা সৃষ্টিকর্তার উপর ছেড়ে দিয়েছিলেন, সেখানে দীর্ঘদিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে বেঁচে উঠলেও আমার দুটি কিডনী অকেজো হয়ে যায়। চলতে থাকে ডায়ালাইসিস। এরমধ্যে মধ্যে পরিবারের বয়োবৃদ্ধ মা, স্ত্রী, বড় পুত্র কিডনী দেয়ার জন্য রাজী হলেও ছোট পুত্র নাহিদের কথা তার কিডনীই তাকে নিতে হবে।

‘বাবার জন্য প্রয়োজনে হাত-পা কেটে দেবে, জীবন দেবে’- এমন দাবীতে অবশেষে সফল হলো। আর এই সংগ্রামে স্ত্রীর রাত-দিনের লাগাতার সেবা-শুশ্রুষার কথাও স্মরণ করলেন সৈয়দ খসরু। তিনি কান্না জড়িত কন্ঠে বললেন- ‘আমার তিন সন্তানের মধ্যে (দুই পুত্র, এক কন্যা) ছোট পুত্র নাহিদ দুষ্ট প্রকৃতির, কথাও শুনুতে চায়নি। আজ সেই পুত্রই তার জীবন বাজী রেখে তার কিডনী দিয়ে আমাকে বাঁচিয়ে তুললো। এমন পুত্র ঘরে ঘরে জন্ম হউক।’

সৈয়দ ইলিয়াস খসরুর পরিবার এবং টাইম টিভি ও বাংলা পত্রিকা পরিবারের পক্ষ থেকে পিতা-পুত্র দু’জনের আশু সুস্থতার জন্য দেশ-বিদেশে সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করা হয়েছে। এছাড়াও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকেও তাদের দ্রুত সুস্থতার জন্য সবার দোয়া কামনা করা হয়েছে। উল্লেখ্য, সৈয়দ খসরু নিউইয়র্ক বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের কার্যকরী পরিষদ সদস্য।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.