কোনোদিন কারও কাছে মাথানত করিনি: প্রধানমন্ত্রী

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : আন্দোলন ও চাপে বাধ্য হয়ে এক-এগারোর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার তাকে মুক্তি দিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কোনো দিন কারও কাছে আমি মাথানত করিনি, জীবনও ভিক্ষা চাইনি। শনিবার তার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে দলীয় নেতাকর্মীরা গণভবনে গেলে তাদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

শেখ হাসিনা আরও বলেন, যতবার গ্রেফতার হয়েছি ততবারই নেতাকর্মীদের চিঠি দিয়েছি। চিঠির মাধ্যমে তাদের নির্দেশনা দিয়েছি। দেশবাসীকে চিঠি দিয়েছি। আওয়ামী লীগের সাধারণ নেতাকর্মীরা সব সময় ঠিক থাকে। এটা বাবার (বঙ্গবন্ধু) সময়ও দেখেছি। তিনি বলেন, ১৯৮৩ সালে আমাকে গ্রেফতার করা হয়। ডিজিএফআই অফিসে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কারও কাছে কোনো দিন মাথানত করিনি, জীবন ভিক্ষাও চাইনি। আমি পরিবার থেকে, বাবার কাছ থেকে এটা শিখেছি যে-কারও কাছে, কোনো অন্যায়ের কাছে মাথানত করব না। তাই আওয়ামী লীগকে সব সময় উজানে নাও (নৌকা) ঠেলে চলতে হয়েছে।

তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবাক হয় যে, ১৫ দিনে আমার মুক্তির জন্য ২৫ লাখ স্বাক্ষর সংগ্রহ করা হয়। এটাই আওয়ামী লীগ। জনগণই হলো আমাদের শক্তি। বিএনপির ক্ষেত্রে জন্মই হলো আজন্ম পাপ। জনগণ বিএনপির শক্তি নয়। তিনি আরও বলেন, জেলে বসে দেশ কীভাবে চালাব, দল কীভাবে চালাব, সেসব লিখে রেখেছিলাম। কীভাবে উন্নয়ন করব সেসব পরিকল্পনা লিখে রাখি। আজ প্রতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ।

বাংলাদেশের কোনো উন্নয়ন ও অর্জনকে দেশের কিছু মানুষ কেন মেনে নিতে পারছে না-এমন প্রশ্ন উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখে কেন একদল মানুষ মনে কষ্ট পায় কেন তারা কোনো অর্জনকে বাংলাদেশের অর্জন বলে মেনে নিতে পারছে না আন্তর্জাতিকভাবে এত বাধা, তবুও নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু করেছি। এরপরও কিছু মানুষ এটিকে অর্জন হিসাবে নিতে পারে না। কেন তাদের এ দৈন্য কোথায় তাদের সমস্যা সে প্রশ্নও তোলেন তিনি। তিনি বলেন, অনেক উন্নত দেশে প্রবৃদ্ধি যখন নেতিবাচক তখন দেশে মহামারির সময় জিডিপি প্রবৃদ্ধি পাঁচ শতাংশের বেশি অর্জিত হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগকে সব প্রতিকূলতা ও প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ একটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা যাতে ক্ষমতায় আসতে না পারে সেজন্য সর্বদাই তৎপর রয়েছে। ২০০১ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ একটি আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করে, যা প্রতিটি নেতাকর্মীর মনে রাখতে হবে এবং কোনো লোভের জন্য দেশকে কারও হাতে তারা তুলে দিতে পারে না।

উল্লেখ্য, ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে সংসদ ভবন চত্বরে স্থাপিত বিশেষ কারাগারে রাখা হয়। এর ১১ মাস পর ২০০৮ সালের ১১ জুন শেখ হাসিনা মুক্তি পান। দিনটি উপলক্ষ্যে গণভবনে গিয়ে শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রথমে শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। দিবসটি উপলক্ষ্যে বিভিন্ন সংগঠন নানা কর্মসূচি পালন করে।

গণভবনে গিয়ে শেখ হাসিনাকে শুভেচ্ছা জানান ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ এবং ঢাকা উত্তর (ডিএনসিসি) ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) দুই মেয়র। এছাড়া সহযোগী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে শেখ হাসিনাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শেখ হাসিনার কারামুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে বাদ আসর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সভায় সহসভাপতি শরফুদ্দিন আহমেদ সেন্টু, হেদায়েতুল ইসলাম স্বপন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোর্শেদ কামাল, মিরাজ হোসেন, মহিউদ্দিন আহমেদ মহি, সাংগঠনিক সম্পাদক গোলাম সারোয়ার কবির প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ বাদ মাগরিব কলাবাগান ক্রীড়া চক্র মিলনায়তনে (কলাবাগান মাঠ প্রাঙ্গণ) শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে দোয়া এবং মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করে। এছাড়া শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু ও সুস্থতা কামনা করে মসজিদে দোয়া এবং মন্দির, গির্জা, প্যাগোডাসহ অন্যসব ধর্মীয় উপাসনালয়ে প্রার্থনা সভার আয়োজন করে যুবলীগ।

আজ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আলোচনা সভা : দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে যুবলীগ। এতে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.