পাবনার বেড়া উপজেলার নগরবাড়ি ঘাটে খোলা আকাশের নীচে সার, স্বাস্থ্য ঝুঁকি ও নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সার

0

পাবনা প্রতিনিধি : বাফার গুদাম না থাকায় খোলা আকাশের নীচে বিদেশ থেকে জাহাজ ও কার্গোজাহাজের মাধ্যমে সরকারি বেসরকারি আমদানী করা হাজার হাজার মেট্টিক টন ইউরিয়াসহ বিভিন্ন ধরণের পাবনার নগরবাড়ি ঘাট এলাকায় উন্মুক্ত ভাবে স্তুপ করা হয়েছে। মাসের পর মাস সারগুলো এভাবে পড়ে থাকায় গুনগতমান নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। আর পড়ে খোলা আকাশের নীচে এভাবে সার রাখার কারণে ঝাঁঝালো গন্ধে স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে স্থানীয় ভূক্তভোগীরা এছাড়া বছরে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার সার। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিসিআইসি ও বিভিন্ন আমদানীকারক চীন, মিশর, সৌদি আরব, তিউনিশিয়াসহ বিভিন্ন দেশ থেকে ইউরিয়া, ডিএপি, এমওপি ও টিএসপি সার সমুদ্র পথে নিয়ে আসে চট্টগ্রাম সমুদ্র বন্দরে। সেখান থেকে নৌপথে বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট এজেন্সির মাধ্যমে বিসিআইসি উত্তরাঞ্চনের ১৪টি বাফার গুদামে এবং বিভিন্ন আমদানীকারকেরা উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পাঠানোর জন্য পাবনার নগরবাড়ী ঘাটে নিয়ে আসে।

বিসিআইসি সূত্র জানায়, উত্তরাঞ্চলের ১৪টি বাফার গুদামে বর্তমানে মজুদ রয়েছে প্রায় এক লাখ ২৫ হাজার টন ইউরিয়া সার। ফলে বাফার গুদামগুলোতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় নগরবাড়ীতে যমুনা নদীর পশ্চিম পাড়ে নদী তীরবর্তী এলাকায় খোলা আকাশের নিচে মাটিতে স্তুপ করে রাখা হয়েছে হাজার হাজর মেট্টিক টন সার। এছাড়াও আনলোডের অপেক্ষায় ঘাটে নোঙর করে আছে অনেক জাহাজ। মাটিতে স্তুপ করে রাখা এসব সারের ঝাঁঝালো গন্ধে পরিবেশ হচ্ছে দূষিত। স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে বসবাস করছে স্থানীয়রা।

স্থানীয় পুরান ভারেঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান এ এম রফিক উল্লাহ বলেন, পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি সার গোলে পার্শ্ববর্তী জমিতে মাত্রারিক্ত ছড়িয়ে পড়ার কারণে ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এ ব্যাপারে গুদাম নির্মান না হওয়া পর্যন্ত উপজেলা প্রশাসনের বিষয়টি হস্তক্ষেপ জরুরী বলে মনে করেন এই জনপ্রতিনিধি।

নগরবাড়ী ঘাটের সার ব্যবসায়ী ঈমান আলী বলেন, এই সমস্যা দীর্ঘদিনের। শুনেছি সরকারি ভাবে বাফার গুদাম নির্মাণে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের এই সমস্যার পরিত্রাণে ওই নির্মাণ কাজ দ্রুত বাস্তবায়ন জরুরী। স্থানীয় একাধিকজনের সাথে আলাপকালে তারা বলেন, এই স্থানে এসে দাঁড়ালে দম আটকে আসে। শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা দেখা দেয়। তারা বলেন, ১২ বার দিনের বেশি জাহাজগুলো নোঙর না করার কারণে এবং তাদের বাড়তি খরচ পড়বে কথা বলেই উন্মুক্ত স্থানে সারগুলো আনলোড করে চেল যায়। তাদের দাবী, সার ব্যবসায়ীরা ইচ্ছেমতো ডিলার ও পাইকারদের কাছে বিক্রি করার ফলে দীর্ঘদিন ধরেই এই সারগুলো খোলা আকাশের নীচে পড়ে থাকে।

সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বেড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আনাম সিদ্দিকী বলেন, খোলা আকাশের নীচে সার রয়েছে এবং সার সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না এমন কোন তথ্য আমার কাছে নেই। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ বা প্রয়োজন সংক্রান্ত তথ্য আসেনি। বাফার গোডাউন নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, উপজেলা এ বিষয়ে সম্পৃক্ত নয়। তাই এ বিষয় নিয়ে উপজেলা প্রশাসন কোন কাজ করে না।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.