পদ্মা সেতু ঘিরে পর্যটন সুবিধা বৃদ্ধির উদ্যোগ

0

বিডি২৪ভিউজ ডেস্ক : স্বপ্নের পদ্মা সেতু ঘিরে পর্যটক টানতে আগ্রহী সরকার। পদ্মা সেতুর দুই পাড়ে পর্যটন সুবিধা বাড়াতে প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন। যমুনায় সেতু চালুর পরও পর্যটনের অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পরিকল্পিত বিনিয়োগের অভাবে সেখানে পর্যটন সুবিধা গড়ে ওঠেনি। তাই শুধু পদ্মা সেতুর দুই পারে পর্যটন সুবিধা সীমাবদ্ধ না রেখে, আশপাশের সব এলাকা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত বলে মনে করছে সংসদীয় কমিটি।

জানা গেছে, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয় পদ্মা সেতুকে কেন্দ্র করে পর্যটনে জোর দিয়েছে। একই বিষয়ে আগ্রহী এ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিও। কমিটির একাধিক বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

উদ্বোধনের আগ থেকেই পদ্মা সেতু ঘিরে তৈরি হয়েছে পর্যটনের সম্ভাবনা। পর্যটনের পাশাপাশি শিল্প বাণিজ্য সম্প্রসারণেও সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ। উদ্বোধনের পর দেশি-বিদেশি পর্যটকদের অন্যতম পছন্দের স্পট এখন পদ্মা সেতু। একই সঙ্গে পদ্মাপারের অপরূপ সৌন্দর্য আকৃষ্ট করছে সব বয়সের মানুষকে। শরীয়তপুরের জাজিরার নলডোবা থেকে শিবচরের মাদবরচর পর্যন্ত পদ্মা সেতুর ১০.৫ কিলোমিটার নদীশাসন এলাকাও দৃষ্টিনন্দন বিনোদন কেন্দ্র। বুড়িগঙ্গা-২ নম্বর সেতুর ওপার কেরানীগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত এবং পদ্মা সেতুর ওপারের ভাঙা মোড় পর্যন্ত নির্মিত দৃষ্টিনন্দন বিশ^মানের রাস্তাটিও একটি আকর্ষণীয় পর্যটন উপাদানে পরিণত হয়েছে।

পর্যটন করপোরেশনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, কেরানীগঞ্জ থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্ত এবং পদ্মা সেতুর ওপারের ভাঙা মোড় পর্যন্ত রাস্তাটিতে বৃক্ষরোপণ করা দরকার। রাস্তার উভয় পাশে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, পলাশ, শিমুল বা এ জাতীয় গাছ রোপণের পরিকল্পনা রয়েছে। বছরের বিভিন্ন সময় ফোটে এ রকম ফুলজাতীয় বৃক্ষ নির্বাচন করলে পর্যটক আকৃষ্ট হবে। যাত্রাবাড়ী থেকে ভাঙা মোড় পর্যন্ত নির্মিত এক্সপ্রেসওয়ে পর্যটকদের আকর্ষণে ভূমিকা রাখছে। দৃষ্টিনন্দন ভাঙা মোড় এলাকাটিও আকর্ষণীয় পর্যটন এলাকা। এখানে পর্যাপ্ত ফ্রেশ রুম, বিশ্রামাগার সুবিধাদি স্থাপন করা যায়। এলাকাটির কাছাকাছি স্থানে ফুড ভিলেজ এবং ওয়াচ টাওয়ার স্থাপনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। পদ্মা সেতুতে বর্ণিল সড়ক বাতি ব্যবহারের প্রস্তাব দিয়েছে পর্যটন করপোরেশন। সেতুর পিলারের পাটাতনসহ পিলার, রেলপথ ও সড়কপথ এবং সেই সঙ্গে সেতুটির চার পাশের পানিকে কেন্দ্র করে দুবাইয়ের বুর্জ আল খলিফার মতো আর্কিটেকচারাল লাইটিং ও লেজার শো থাকতে পারে। বৈচিত্র্যময় আলোকসজ্জার আয়োজনের ব্যবস্থা করে জাতীয় দিবস বা বড় কোনো উপলক্ষে পর্যটকরা আকর্ষণ অনুভব করবেন। এমনকি, সাপ্তাহিক ছুটির দিন ও সরকারি ছুটির দিনেও এ ধরনের আলোকসজ্জা পদ্মা সেতুর সৌন্দর্য উপভোগ্য করে তুলবে। রাতের পদ্মা সেতু দেখতেই অন্যরকম লাগে। বৈচিত্র্যময় লাইটিং এনে দেবে স্বকীয়তা।

পর্যটন করপোরেশন তাদের লিখিত প্রস্তাবে বলেছে, দেশি-বিদেশি পর্যটক এবং ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে সেতুর উভয় প্রান্তে সরকারি-বেসরকারি অথবা উভয় খাতের বিনিয়োগে মানসম্পন্ন রিসোর্ট করতে হবে। সেখানে কনফারেন্স সেন্টার, এমিউজমেন্ট সেন্টার, থিম পার্ক ইত্যাদি গড়ে তোলার ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কোনো অবস্থাতেই অপরিকল্পিত এবং ব্যাঙের ছাতার মতো কোনো স্থাপনা বা ব্যবসাকেন্দ্র গড়ে তোলা ঠিক হবে না। এ জন্য অনুমতি ও অনুমোদনপ্রাপ্তি বাধ্যতামূলক করা যেতে পারে। কেরানীগঞ্জ থেকে ভাঙার মোড় পর্যন্ত সরকারি-বেসরকারি স্থাপনা (বাড়িঘর, সরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্পাঞ্চল) নির্মাণে প্রথমেই গুরুত্ব দিতে হবে পর্যটন দৃষ্টিকোণ। এসব বিবেচনায় রেখে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করবে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।

এ বিষয়ে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী ও সচিব মোকাম্মেল হোসেনের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি। মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, পৃথক প্রোগ্রামে তারা বিদেশে অবস্থান করছেন।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.