মেহেরপুরে স্বামী হত্যার দায়ে স্ত্রীসহ ৪ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

তৌহিদ উদ দৌলা রেজা, মেহেরপুর : মেহেরপুর সদর উপজেলার পিরোজপুর ইউনিয়নের বলিয়ারপুর গ্রামের আলম হত্যার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় নিহত আলমের স্ত্রী সাফিয়া খাতুনসহ তিন আসামী খোকন, মুকুল ও আসাদুলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও প্রত্যেকের ১০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে মেহেরপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক রিপতি কুমার বিশ্বাস ওই রায় ঘোষনা করেন।

নিহত আলমের সাজাপ্রাপ্ত স্ত্রী সাফিয়া খাতুন মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার হিজলবাড়িয়া গ্রামের আহসান আলীর মেয়ে এবং মুকুল চুয়াডাঙ্গার শংকর চন্দ্রপুর গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে খোকন চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার জয়রামপুর গ্রামের আসির উদ্দিন মন্ডলের ছেলে ও আসাদুল চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার ফরিদপুর গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালের ৩১ জুলাই মেহেরপুর সদর উপজেলার বলিয়ারপুর গ্রামের আসামের পাটক্ষেত সংলগ্ন রাস্তার উপর থেকে অজ্ঞাত এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় মৃত ব্যক্তির দুই হাত কাঁচা পাট দিয়ে বাঁধা ছিল এবং গলায় ও ঘাড়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কোপানো অবস্থায় পড়েছিল। মেহেরপুর সদর থানা পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং অজ্ঞাত ব্যক্তির মরদেহ হিসেবে উদ্ধার করে মেহেরপুর মর্গে প্রেরণ করেন। পরে তার পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি বলিয়ারপুর গ্রামের হাতেম আলীর ছেলে আলম হোসেন।

ওই ঘটনায় মেহেরপুর সদর থানার তৎকালীন এসআই শওকত আলী বাদী হয়ে দন্ডবিধির ৩০২/৩৪ ধারায় অজ্ঞাত ৭-৮ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-২৪। তাং ৩১/০৭/২০০৭। পরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন বাড়াদী ক্যাম্প ইনচার্জ আব্দুস সালাম মিয়া প্রাথমিক তদন্ত শেষে ২০০৭ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। মামলায় মোট ১৫ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে নিহত আলমের স্ত্রী সাফিয়া খাতুন সহ অন্য তিন আসামী খোকন, মুকুল, আসাদুল দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাদের প্রত্যেকের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও প্রত্যেকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডদেশ দেন। মামলার রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত পিপি কাজি শহীদ এবং আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট কামরুল হাসান কৌশলী ছিলেন।