কুমারখালী খাদ্য গুদামে নিম্নমানের চাল বিতরণের অভিযোগ

0

নিজস্ব প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে সরকারের খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা এবং ওএমএস এর ৩০ টাকা দরের চালে নিম্ন মানের পঁচা, ছত্রাকযুক্ত, দুর্গন্ধ মাছি চাল প্রদানের অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত সোমবার বিকেলে ভুক্তভোগীরা চাল উত্তোলেন পর সাংবাদিকদের কাছে এমন অভিযোগ করেছেন।

এবিষয়ে উত্তলনকারী কুমারখালীর কলেজ পাড়ার বাসিন্দা রোকেয়া বেগম (৪৫), সরকারীভাবে যে চাউল দিচ্ছে তা কোন ভাবেই খাওয়ার উপযোগী নয়, বাড়িতে নিয়ে গিয়ে রান্নার করার সময় মাছি চাউলের সাথে বাজারের ভালো চাউল মিশিয়ে রান্না করতে হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ভুক্তভোগী বলেন, পচাঁ, ছত্রাকযুক্ত, পোকামাকড় ও দুর্গন্ধ চাল দেওয়া হচ্ছে। গরীব মানুষ আমরা। বাধ্য হয়ে এখান থেকে কার্ডের মাধ্যমে কম টাকায় চাল কিনি। কিন্তু তা খাওয়া যায়না।

জানা গেছে কুমারখালী পৌরসভার দুইটি পয়েন্টে সরকারি চাল বিক্রয় করা হয়। সোমবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে উপজেলার পৌর এলাকার দুইটি ওএমএস চালের ডিলার পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, কুমারখালী খাদ্য গুদাম থেকে সরবরাহকৃত চালে মধ্যে বেশ কয়েক বস্তা
পঁচা,ছত্রাকযুক্ত,দুর্গন্ধযুক্ত মাছি চাল। কার সাথে ভাল চালনসাথে মিশিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে।

এবিষয়ে ও,এম,এস চাউলের ডিলার মিজানুর রহমান বলেন, আমরা ডিলাররা ফুড অফিস থেকে চাউল সংগ্রহ করি। মাঝে মধ্যেই দেখি ভালো চালের মধ্যে খারাপ চাউলের মিশানো পাওয়া যায়। সব বস্তাতো আর দেখে নেওয়া যায় না। তিনি আরো বলেন, খাদ্য গুদাম যা দেয়, তাই বিতরণ করি। কিন্তু জনগণ নিতে চাইনা।

আরেক ডিলার মোতালেব হোসেন বলেন, ডিলাররা অসহায়, কিছু বলতে গেলে যদি ডিলারশীপ বাতিলেরর ভয়ে কিছু বলতে পারি না। খাদ্য গুদাম সার্চ করলে এরকম বহু বস্তা নষ্ট মাছি চাউল পাওয়া যাবে।

চাউল উত্তলন করতে আসা মালিয়াট গ্রামের আকলিমা খাতুন (৪০) বলেন, আমরা গরীব মানুষ, পেটের দায়ে এই সরকারী চাউল কিনে খায়, মাঝে মধ্যেই পঁচা লাল চাউল দেয় কিন্তু কিছু বলতে পারিনা। কারণ গরীবের কথা শুনবে কে??

আরেক ভুক্তভোগী উপজেলার বাটিকামারা এলাকার শাহনাজ বেগম জানান, ঘন্টা পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে যখন পঁচা চাউল পায় তখন আর মনে চায়না সরকারী চাউল নিতে আসি। কিন্তু নিরুপায় হয়ে পেটের দায়ে আসি।

উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা এরশাদ আলী বলেন, খাদ্য গুদামের চালের অনেক অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভবিষ্যতে নিম্ন মানের চাউল যাতে গুদামে না আসে। তার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

এবিষয়ে খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) জামশেদ ইকবাল বলেন, চাল ডিলাররা দেখে শুনে বুঝে নিয়ে যায়। চালের মান নিয়ে কোন অভিযোগ আমার জানা নেই।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিতান কুমার মন্ডল বলেন, ওসি-এলএসডির বিরুদ্ধে কয়েকমাস আগে অভিযোগ শুনেছিলাম। চালের মান নিয়ে ডিলারদের প্রত্যয়ন দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু কোন ডিলার প্রত্যয়ন দেয়নি। তিনি আরো বলেন, আগের মতই সব চলতে থাকলে ওসি-এলএসডির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.