নীলফামারীতে অটিস্টিক লিমা আক্তার সব বাধা অতিক্রম করে এখন শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে

0

সত্যেন্দ্রনাথ রায়, নীলফামারী প্রতিনিধি : প্রতিবন্ধী যে কোন অক্ষমতা নয় তা প্রমান করে দেখালেন শ্বারীরিক প্রতিবন্ধী লিমা আক্তার। প্রতিবন্ধী হওয়া যতটা বাধা তারচেয়ে ও বড় বাধা হলো প্রতিবন্ধী কে নিয়ে সমাজের কিছু মানুষের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য, তবে সব বাধাকে অতিক্রম করে মনের প্রবল ইচ্ছা শক্তি আর মা বাবার দৃর প্রচেস্টায় আছ অন্য দশজনের মত আদর্শ শিক্ষিকা হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন লিমা আক্তার। পঞ্চম শ্রেনীর কাওসার, মরিয়ম চতুর্থ শ্রেনীর কাকুলী, শিমলা, দ্বিতীয় শ্রেনীর রাকিবুল ইসলাম , বলেন আপা যে আদর,ভালোবাসা দিয়ে আমাদের ক্লাসে পড়ান তাতে খুব আপন আপন লাগে নিজের মা বোনের মত,স্কুলের শিক্ষার্থীদের এভাবেই পাঠদান করে আপন করে নিয়েছেন লিমা আক্তার।লিমার প্রতিষ্ঠিত ও এগিয়ে যাওয়ার পথ খুব যে সহজ বা কুসুমাস্তীর্ণ ছিল তা কিন্তু

নয়। আমাদের গ্রাম বাংলার সমাজে প্রচলিত একটি নিয়ম আছে প্রতিবন্ধী সন্তান পরিবারে জন্মগ্রহন করা মানে পাপের ফসল (প্রায়শ্চিত্ত)নানা অপবাদ। কোন প্রতিবন্ধ কতা থামাতে পারেনি লিমা আক্তারকে, যারা তাকে দেখে নাক সিটকাত তারাই এখন প্রচুর সম্মান করে, নিজেকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন লিমা আক্তার।বর্তমানে পলাশবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা , তাদের ৫ সদস্যের পরিবারের লিমাই একমাত্র সরকারী চাকুরী জিবি, এখন নিজের খরচ টুকু রেখে সব বেতনের টাকা তুলেদেন মা-বাবার হাতে,যাকে ঘিড়ে দুঃখ, কস্ট, হতাশা অপমান জনক কথা শুনতে হয়েছে সেই সন্তান সংসারের জন্য আয় রোজগার করে মা বাবার হাতে চাকুরীর বেতন তুলে দেবে বলতে বলতে দুচোখের পানী খসে পড়লো বাবা দেলোয়ারের, কল্পনায় ছিলনা তাদের, এখন হাশি খুশি শান্তিতে ভরেগেছে লিমা আক্তারের পরিবার।সে নীলফামারী সদর লক্ষীচাপ ইউনিয়নের শালমারা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে,মাতা পারুল বেগম,তিন ভাই বোনের মধ্যে সে বড়, ২০১২ সালে শালমারা বিএন স্কুল এন্ড কলেজ হতে জিপিএ ৪ পয়েন্ট নিয়ে এসএসসি পাশ করে, জলঢাকা সরকারী কলেজ হতে ২০১৪ সালে ৩.৮০ পয়েন্ট এইচএসসি, ২০১৯ সালে বাংলায় অনার্স২য় ক্লাস অর্জন করে।২০১৯ সালে চাকুরী হয়, চাকুরির সাথে নীঃসরকারী কলেজে বর্তমানে প্রাইভেটে মাস্টার্স পরাশোনাও করছেন।কথা হলে তার বাবা বলেন জন্মের পড় হতে পরাশোনা করাতে গিয়ে এই মেয়ের জন্য শুনতে হয় গালমন্দ কথা, সমাজে অবলীলায় হতে হয়েছে ছোট,সব দুঃখ কস্ট অপমান বাবা হিসেবে দাঁত চেপে হজম করেছি।তবুও পড়াশোনা ছারতে দিইনি। নীলফামারী সদর উপজেলা প্রাইমারী শিক্ষা অফিসার এনামুল হক সরকার ও প্রধান শিক্ষিকা শামীম আরা বেগম এর কথা হলে বলেন শিশু শ্রেনী হতে,৪র্থ ও পঞ্চম শ্রেনী পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীদের যে মমতা ও দক্ষতার সহিত ক্লাসে পাঠদান করান তাতে অল্প দিনেই ছাত্র, ছাত্রী, শিক্ষক স্টাফ সহ সবার মনজয় করে নিয়েছেন লিমা আক্তার।তাছারাপ্রধানমন্ত্রীর মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল অটিস্টিক দের বিষয়ে অনেক আগেই ভেবেছেন তারাও আমাদের দেশের সমাজের কারো কারো সন্তান তাদের সঠিকভাবে পরিচর্যা করলে মুল শ্রোত ধারায় ও দেশ গঠনে তারাও যে অগ্রনী ভুমিকা রাখতে সক্ষম,লিমা আক্তার তার এক অনন্য উদাহারণ।

স্কুলে যে কজন শিক্ষক আছেন তাদের চেয়ে লিমা আক্তার কোন অংশে কমনয়, সবার আগে সঠিক সময়ে স্কুলে উপস্থিত হন ,ক্লাশে পাঠদান অফিসের নিয়ম শৃঙ্খলা মেনে চলা সহ সিনিয়র শিক্ষকদের সাথে রয়েছে লিমা আক্তারের মধুর সম্পর্ক। লিমা আক্তার বলেন আত্ম উপলব্ধি থেকে চাকুরি জীবন শেষে আমি অটিস্টিক মানুষের পাশে দাড়াতে চাই।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.