পাবনার ভাঙ্গুড়ায় দুই পক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু

0

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়া সরকারি জলাশয় দখল নিয়ে পূর্ব বিরোধের জেরে সংঘর্ষে আহত তোরাব আলী (৭৫) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। বুধবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। এর আগে সকালে উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের দাসবেলাই গ্রামে জলাশয় দখল ও এক নারীকে উত্ত্যক্ত করার ঘটনা নিয়ে দুই পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে তোরাব আলী গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশ চারজনকে আটক করেছে। পুলিশ ও  স্থানীয়রা জানান, ভাঙ্গুড়া উপজেলার দাসবেলাই গ্রামে প্রায় দেড় একর আয়তনের সরকারি জলাশয় দীর্ঘদিন ধরে গ্রামের মসজিদের নামে ডিসিআর কেটে ভোগ দখল করা হয়। মসজিদের কমিটির পক্ষে নেতৃত্ব দেন গ্রামের প্রবীণ ব্যক্তিত্ব ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি বেলাল হোসেন। কিন্তু এবছর এপ্রিল মাসে হাফিজুর গ্রুপ সংশ্লিষ্ট ভূমি অফিস থেকে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকা দিয়ে আগামী তিন বছরের জন্য জলাশয়টি ইজারা নেয়। একারণে বেলাল গ্রুপের সঙ্গে হাফিজুর গ্রুপের বিরোধের সৃষ্টি হয়। এরপর সম্প্রতি বেলাল গ্রুপের মহিদুল নামে একজন ব্যক্তি হাফিজুর গ্রুপের এক সদস্যের স্ত্রীকে কুপ্রস্তাব দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বিরোধ আরো তুঙ্গে ওঠে।  একপর্যায়ে বুধবার সকালে দুই পক্ষের অর্ধশতাধিক লোকজনের মধ্যে লাঠিসোটা সহ বিভিন্ন ধরনের দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষ হয়। এতে বেলালের পক্ষের ৪ জন ও হাফিজুরের পক্ষে  ৯ জন আহত হয়। এদের মধ্যে হাফিজুরের পক্ষের তোরাব (৭৫) ও তার ছেলে ফজলু (৪০) মুমূর্ষ অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। পরে সন্ধ্যা সাতটার দিকে তোরাব আলী মারা যান।

এদিকে নিহতের ঘটনায় বেলাল গ্রুপের শহিদুল, মফিদুল, আনিসুর ও রুহুলকে ভাঙ্গুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আটক করেছে। দাসবেলাই গ্রামের ইউপি সদস্য আলমগীর হোসেন বলেন, হাফিজুর রহমানের লোকজন ডিসিআর কেটে সরকারি জলাশয় ভোগ দখল করতে যান। তবে বেলাল হোসেনের বাধার মুখে জলাশয় দখল করতে পারেননি হাফিজুরের লোকজন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বেশ কিছুদিন ধরে ঝামেলা চলছে। এরপর শুনেছি এক নারীকে উত্যক্ত করা নিয়ে দ্বন্দ্ব আরও বেড়ে যায়। এক পর্যায়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি (তদন্ত) নাজমুল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সরকারি জলাশয় দখল করা নিয়ে গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে প্রায় ১৩ জন আহত হয়। তবে দুই জনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় রাজশাহীতে পাঠানো হয়। পরে একজন মারা যায়। এরইমধ্যে পুলিশ চারজনকে এ ঘটনায় আটক করেছে। তবে একটি পক্ষের একজন নারী তাকে উত্যক্ত করার ঘটনা উল্লেখ করে সংঘর্ষ হয়েছে বলে ভাঙ্গুড়া থানায় মামলা দায়ের করেছেন।  কিন্তু প্রাথমিক তদন্তে উত্ত্যক্ত করার বিষয়টির সত্যতা মেলেনি। তাই তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা উন্মোচন করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.