আজ ১৩’ই নভেম্বর উলিপুরে “হাতিয়া গণহত্যা দিবস”

0

আল এনায়েত করিম রনি : আজ ১৩ নভেম্বর কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ৫ লড়্গ্যাধিক মানুষের অবিষ্মরণীয় দিন “হাতিয়া গণহত্যা দিবস”। নিজের চোখে দেখা হয়নি, প্রত্যড়্গদর্শীদের কাছে জানা গেছে, উলিপুর উপজেলা সদর থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরে কড়ালগ্রাসী ব্রহ্মপুত্রই শুধু নিজ বড়্গে জাপটে ধরে আছে হাতিয়া ইউনিয়নের সেই দাগারকুঠি নামক গ্রামটি। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধের বিজয়ের প্রাক্কালে ১৩ নভেম্বর হানাদার বাহিনী জঘন্য, নৃশংস ও নারকীয় হত্যাকান্ড চালিয়ে ৬৯৭জন নিরপরাধ লোককে জড় করে পাখির ঝাঁকের মত গুলি করে হত্যা করেছিল। ৭১’ এর সেই রক্তঝড়া দিনই ছিল ২৩শে রমজান শনিবার। ঐ দিন ফজরের আযানের ধ্বনি মসজিদ থেকে সুরেলা কণ্ঠে ভেসে আসছিল। কোথাও কোথাও প্রস’তি চলছিল নামাজের। হায়নাদের মটারের শব্দে আকষ্মিক ভাবে সবকিছুই যেন সত্মব্ধ হয়ে পড়ে। পরড়্গণেই হাতিয়া ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের আত্মচিৎকারে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা। বাড়ীঘর, সহায় সম্বল এমনকি বাপ, ভাই, বোনকে ছেড়ে নিজ নিজ জীবন বাঁচাতে অজানার উদ্দেশ্যে এলোপাথারী দৌড়াতে থাকে সকলে। পুরো এলাকায় যেন বৃষ্টির মতো গুলি পড়েছিল। সেদিন মানুষের আহাজারী আর গুলির শব্দ আজও সেখানে অনেকের কানে বাঁজছে। বৃষ্টির মতো গোলাগুলিতে দৌড়ে পালানোর চেয়ে বাড়ীর পাশেই ঝোঁপ জঙ্গলে এবং ধানড়্গেতে শুঁয়ে জীবন বাঁচানোই যেন ঐ দিন এলাকার জনগন নিরাপদ মনে করেছিল। এরই মধ্যে অনেকে ব্রহ্মপুত্র নদী সাতরিয়ে চরাঞ্চলে গিয়ে জীব বাঁচিয়েছে। পাকিসত্মানি সেনাদল সেদিন গ্রামের পর গ্রাম পুড়িয়ে ভষ্মিভূত করে দিয়েছিল। ঝোঁপে জঙ্গলে লুকিয়ে থাকা মায়ের কোলের শিশুসহ শতশত লোককে টেনে হেঁচড়ে বের করে হাতমুখ বেঁধে বধ্যভূমি দাগারকুঠি নামক স’ানে এনে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে তারা। সারাদিনব্যাপী চলে এ হত্যাযজ্ঞ ও অগ্নিসংযোগ। পুড়ে যায় হাতিয়া, অননত্মপুর, দাগারকুঠি, নীলকণ্ঠ, হাতিয়া বকসী, রামখানা ও নয়াদাড়া নামক গ্রামগুলির শতশত বসতঘর। গণহত্যা দিবস উদযাপনে প্রতিবারের ন্যায় হাতিয়া গণহত্যা দিবস উদযাপন করবে উপজেলাবাসী। মানবতাবিরোধী এই হত্যার বিচার, ড়্গতিগ্রস’ পরিবারকে শহীদ পরিবার হিসেবে স্বীকৃতি ও পুনঃবাসনের দাবীতে আলোচনা সভার আয়োজনেরও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন তারা।
গনহত্যা ও মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার এবং ড়্গতিগ্রস’ পরিবারকে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও পুনবার্সনের দাবী নিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় এ দিবসটি পালনে হাতিয়া গনহত্যা দিবস পালন কমিটি গ্রহন করেছে বিভিন্ন কর্মসূচী । এ কর্মসূচী গুলির মধ্যে রয়েছে র‌্যালী,মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.