‘হারুন-ফাহাদ’ নেতৃত্বাধীন নতুন কমিটির পরিচিতি সভা অনুষ্ঠিত প্রকৃত ব্যবসায়ীদের নিয়ে জেবিবিএ-কে শক্তিশালী করার উপর গুরুত্বারোপ
নিউইয়র্ক (ইউএনএ): অতি সম্প্রতি গঠিত ‘হারুন ভুইয়া ও ফাহাদ সোলায়মান’ নেতৃত্বাধীন জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ)-এর নতুন কমিটির পরিচিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিটির জ্যাকসন হাইটসের নবান্ন পার্টি হলে বৃহস্পতিবার (২০ জানুয়ারী) সন্ধ্যায় দুই পর্বে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসময় জেবিবিএ নেতৃবৃন্দ সংবাদ সম্মেলন করেন এবং উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নেরও উত্তর দেন। উল্লেখ্য, দুই পর্বের এই অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপবিষ্ট অধিকাংশই জেবিবিএ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। খবর ইউএনএ’র।
অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে সভাপতিত্ব করেন জেবিবিএ’র আহ্বায়ক ও নতুন কমিটির অন্যতম উপদেষ্টা মোহাম্মদ পিয়ার। এসময় মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন জেবিবিএ’র নতুন কমিটির প্রধান উপদেষ্টা এম আজীজ, উপদেষ্টা মহসীন ননি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী মন্টু, নবনির্বাচিত সভাপতি হারুন ভূইয়া, বিদায়ী কমিটির সভাপতি আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ কামরুজ্জামান কামরুল এবং বিদায়ী ও নতুন কমিটির কোষাধ্যক্ষ সেলিম হারুন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত করেন নতুন কমিটির সমাজকল্যাণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন নতুন কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যের পর ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট ২০২২-২০২৪ সালের নতুন কমিটির কর্মকর্তা এবং ১৫ সদস্য বিশিষ্ট উপদেষ্টা পরিষদ এবং ১৫ জন পরিচালকদের পরিচয় করিয়ে দেন সভার সভাপতি মোহাম্মদ পিয়ার।
দ্বিতীয় পর্বে সভাপতিত্ব করেন নব নির্বাচিত সভাপতি হারুন ভূইয়া। এসময় মঞ্চে উপবিষ্ট ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা এম আজিজ, উপদেষ্টা মইনুল ইসলাম, আব্দুর রউফ দিলীপ, জাকির এইচ চৌধুরী, পরিচালক মোহাম্মদ পিয়ার, কাজী মন্টু, আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, মহসীন ননি, হোসেন রানা, রাশেদ আহমেদ ও মোহাম্মদ কামরুজ্জামান কামরুল, সহ সভাপতি মোহাম্মদ আজাদ।
এই পর্বে নব নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ফাহাদ সোলায়মান, উপদেষ্টা জাকির এইচ চৌধুরী, পরিচালক হোসেন রানা প্রমুখ সংক্ষিপ্ত শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। পরে নতুন কমিটির কর্মকর্তা, উপদেষ্টা ও পরিচালকদের নিয়ে ফটো সেশন করা হয়। স্বাগত বক্তব্যে মোহাম্মদ পিয়ার জেবিবিএ প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তার কথা সংক্ষেপে তুলে ধরেন এবং যোগ্যতাসম্পন্ন ও প্রতিশ্রুতিশীল ব্যবসায়ীদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কোভিড-১৯ নামক মহামারীর নাজুক সময়ে জ্যাকসন হাইটসের বাংলাদেশী ব্যবসায়ীরাও চ্যালেঞ্জিং সময় অতিবাহিত করছেন। প্যান্ডামিকের ভয়াবহতায় জেবিবিএ’র সদস্যরা মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। জেবিবিএ একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক, কল্যাণমুখী সংগঠন এবং যোগ্যতা সম্পন্ন, প্রতিশ্রুতিশীল ও পরীক্ষিত ব্যবসায়ীদের নিয়ে নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। জেবিবিএ-কে আরো শক্তিশালী করার জন্য তিনি প্রকৃত ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে জেবিবিএ নেতৃবৃন্দ বলেন, নির্বাচনের নামে অহেতুক ‘অর্থ অপচয়’ আর অর্থের বিনিময়ে তথা কথিত ব্যবসায়ী বানিয়ে সদস্য/ভোটার প্রক্রিয়া বন্ধে নির্বাচন নয় ‘সিলেকশনের মাধ্যমে কমিটি’ গঠন সহ প্রকৃত ব্যবসায়ীদের নিয়ে সংগঠনকে শক্তিশালী সংগঠন গড়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষা করার উপর গুরুত্বারোপ এবং গঠনতন্ত্র সংশোধন করে সাংগঠনিক ভিত্তি আরো মজবুত করার কথাও বলেছেন জেবিবিএ নেতৃবৃন্দ। ফলে জেবিবিএ’র এই অংশের গঠনতন্ত্রে আমুল পরিবর্তন আসছে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে জেবিবিএ নেতৃবৃন্দ বলেন, জেবিবিএ’র গঠনতন্ত্র পরিবর্তন করা হচ্ছে, প্রকৃত ব্যবসায়ীরাই জেবিবিএ’র সদস্য থাকবেন এবং ব্যক্তিস্বার্থে যাতে কেউ জেবিবিএ-কে ব্যবহার করতে না পারেন তার জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। নেতৃবৃন্দ বলেন, নারী ব্যবসায়ীদের কথা বিবেচনা করে এই প্রথম ‘মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা’র পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। কার্যকরী কমিটির পরিধি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে সবকিছুই করা হয়েছে প্রস্তাবিত ও সংশোধিত গঠনতন্ত্রের আলোকে।
কাজী মন্টু বলেন, ব্যবসায়ীদের স্বার্থ রক্ষায় ১৯৯৭ সালে জেবিবিএ প্রতিষ্ঠার পর ভালোভাবেই এর কর্মকান্ড চলছিলো। পরবর্তীতে ২০০০ সালের দিকে একটি মহলের স্বার্থের শিকার হয়ে পড়ে জেবিবিএ। তাদের ষড়যন্ত্র থেক জেবিবিএ-কে মুক্ত করতেই গঠনতন্ত্র সংশোধন সহ নানা উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, গঠন করা হয়েছে নতুন কার্যকরী কমিটি। এসময় তিনি গভীর শ্রদ্ধার সাথে জেবিবিএ’র সাবেক সভাপতি মান্নান রহমান-কে স্মরণ এবং জেবিবিএ প্রতিষ্ঠা ও প্রসারে তার অবদানের কথাও তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের অন্যান্য বক্তারা তাদের সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে অতীতের ভুল-ত্রুটি ভুলে প্রকৃত ব্যবসায়ীদের নিয়ে জেবিবিএকে আরো শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, কতিপয় তথা কথিত সিজনাল ব্যবসায়ীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে আমাদের এই সংগঠন। এই চক্র থেকে জেবিবিএ-কে রক্ষা করতে হবে। বক্তারা বলেন, কেউ কেউ অর্থের জোরে পদ-পদবি কিনে নিতে চান। নিজের গাটের অর্থে সদস্য বানান। এটা অনৈতিক। অনুষ্ঠানে এক বক্তা জেবিবিএ’র পাল্টা কমিটির কাছে প্রশ্ন রেখে বলেন, তাদের কমিটির সদস্যদের মধ্যে একই ঠিকানায় ১৭ জনের নাম রয়েছে, এটা কি করে সম্ভব। তাছাড়া জেবিবিএ’র কার্যকরী পরিষদের কর্মকর্তা না হয়ে সভাপতি/সম্পাদক হওয়ার কোন সুযোগ বা নিয়ম নেই।
অনুষ্ঠানে হারুন ভূইয়া ও ফাহাদ সোলায়মান তাদের বক্তব্যে জেবিবি’র নতুন দায়িত্ব পালনে মিডিয়া ও ব্যবসায়ীসহ সকল মহলের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করেন। উল্লেখ্য, জ্যাকসন হাইটস বাংলাদেশী বিজনেস এসোসিয়েশন (জেবিবিএ) বিভক্ত হয়ে পড়েছে। মূলত: নির্বাচন ঘিরে সংগঠনের এই বিভক্তি। জেবিবিএ’র বিভক্তি নিয়ে চলছে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ। উদ্ভুত পরিস্থিতে একটি অংশ নির্বাচনের মাধ্যমে কমিটি গঠন করেছে। অপর অংশ আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে সাংগঠনিক প্রক্রিয়ায় সিলেকশন কমিটির মাধ্যমে অপর একটি পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করেছে।
জেবিবিএ’র পূর্ণাঙ্গ কমিটির নিম্মরূপ: সভাপতি- হারুন ভূইয়া, সিনিয়র সভাপতি- মনসুর চৌধুরী, সহ সভাপতি- বাবু খান, আবু নোমান সাকিল, মোহাম্মদ আলম নমি, জেড আর চৌধুরী লিটু, নুরুল আমিন বাবু ও মোহাম্মদ আজাদ, সাধারণ সম্পাদক- ফাহাদ সোলায়মান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক- মোহাম্মদ আবুল কাশেম ও শাহরিয়ার আরিফ, কোষাধ্যক্ষ- সেলিম হারুন, সাংগঠনিক সম্পাদক- মোহাম্মদ হোসাইন বাদশা, সাংস্কৃতিক সম্পাদক- এম আর খন্দকার শান্টু, সমাজকল্যাণ সম্পাদক-আনোয়ার হোসাইন, দপ্তর সম্পাদক- মাসুদ রানা তপন, প্রকাশনা সম্পাদক- শাহ্ চিস্তি, প্রচার সম্পাদক- সুবল দেবনাথ, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক- নীলুফার শিরিন। কার্যকরী সদস্য- কামরুজ্জামান বাচ্চু, সাজ্জাদ হোসেন, ইসতিয়াক রুমি, সনাতন শীল, মোর্শেদ এসএম মাসুদ, মোহাম্মদ ইদ্রিস, আব্দুল হামিদ, সাখাওয়াত বিশ্বাস, মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির, শফিউদ্দিন মিয়া, এফইএমডি রকি, তৌহিদুল ইসলাম রুনি, আমিন ম্যাক, শ্যামল সি নাথ, আফতাব জনি, জসি চৌধুরী।
এছাড়াও উপদেষ্টা কমিটিতে আছেন প্রধান উপদেষ্টা- এম এ আজিজ, উপদেষ্টা- ফারহাদ রেজা, মইনুল ইসলাম, আব্দুর রউফ দিলীপ, এটর্নি মঈন চৌধুরী, সোহাগ আজম, তৌহিদ শিবলী এমডি, জাকির এইচ চৌধুরী, বদরুল হক, মীর নিজামুল হক, সামিউর রহমান, সরোয়ার চৌধুরী সিপিএ ও আলমগীর উদ্দিন।
জেবিবিএ’র পরিচালকগণ হচ্ছেন: মোহাম্মদ পীয়ার, কাজী মন্টু, মহসিন মিয়া, আবুল ফজল দিদারুল ইসলাম, মহসিন ননী, কাজী শামসুদ্দোহা, আনোয়ার জাহিদ, হোসেন সোহেল রানা, রাশেদ আহমেদ, মোশাররফ হোসেন, ড. রফিক আহমেদ, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান, এম কে রহমান, রুহুল আমিন সরকার ও ফয়সাল আজিজ ফারহান।