‘আরএলবি গ্রুপ’-এর আরো একটি শাখার উদ্বোধন আমেরিকান ব্যবসায় সফলতার প্রতীক বাংলাদেশী বাদল

0

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): নিউইয়র্ক সহ যুক্তরাষ্ট্রের মূলধারায় বাংলাদেশী কমিউনিটি ক্রমশ: গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে শুরু করে মূলধারার রাজনীতিতে এখন অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বে পরিণত। অনেক বাংলাদেশী-আমেরিকানের সাফল্যও এখন অনেকের জন্য ঈর্ষনীয় হয়ে উঠেছে। এমনি একজন বাংলাদেশী-আমেরিকান ব্যবসায় সফলতার প্রতীক হয়ে উঠছেন। নাম তার আখতার হোসেন বাদল। যিনি তার শ্রম, মেধা, পরিশ্রম, বুদ্ধি, যোগ্যতা আর সততার মধ্য দিয়ে গড়ে তুলেছেন সফল নির্মাণ ব্যবসায়ী/ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘আরএলবি গ্রুপ’। যেটি এখন ‘আরএলবি গ্রুপ’ নামেই পরিচিত। একটি নয়, দুটি নয় চার চারটি শাখা নিয়ে ‘আরএলবি গ্রুপ’ আমেরিকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান হিসেবে এখন সকল মহলেই প্রতিষ্ঠিত। খবর ইউএনএ’র।

চাঁদপুরের সন্তান আখতার হোসেন বাদল। দেশ থেকেই শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান প্রতিষ্ঠিত বিএনপি’র রাজনীতির সাথে জড়িত। যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক। ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি’র সর্বশেষ পূর্ণঙ্গ কমিটির অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক। প্রবাসী জীবনের শুরুতে ‘অড জব’ করার পাশাপাশি সক্রিয় রাজনীতির মধ্য দিয়ে আজ তিনি প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। আমেরিকান ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘আরএলবি গ্রুপ’-এর চেয়ারম্যান।

ব্যবসায়ী-রাজনীতিক আখতার হোসেন বাদল ইউএনএ প্রতিনিধি-কে জানান, অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে আজ থেকে ৮/১০ বছর আগে ব্যবসা করার সিদ্ধান্ত নেই। বিগত ২০১৫ সালে পুরোপুরি ব্যবসায় মনোনিবেশ করি। এই বছর ব্যবসায়র প্রথম শাখা চালু করি লিকে। গলো সপ্তাহে ‘আরএলবি গ্রুপ’-এর চতুর্থ শাখার উদ্বোধন হলো। এ উপলক্ষ্যে গত ২৪ জুন শুক্রবার সন্ধ্যায় অনাড়ম্বর এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এই চারটির দুটি সাফোক কাউন্টি এবং অপর দুটি নাসাউ কাউন্টিতে প্রতিষ্ঠিত। লং আইল্যান্ডের কপিয়েগ সিটিতে ১২১০ বি মন্টোক হাইওয়েতে ফিতা কেটে চতুর্থ শাখার উদ্বোধনের সময় নাসাউ এবং সাফোক কাউন্টির এক্সিকিউটিভসহ চেম্বার অব কমার্সের শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ছিলেন সাফোক কাউন্টির প্রধান নির্বাহী স্টিভেন বেলোন, লেজিসলেচার কেভিন জে ম্যাককেফরী, লিন্ডেনহার্স্ট চেম্বার অব কমার্স’র প্রেসিডেন্ট যোয়্যান বয়েটশার, বেবীলন টাউনের সুপারভাইজার রিচার্ড বি শেফার, ডেপুটি সুপারভাইজার টনি মার্টিনেজ, কপিয়েগ চেম্বার অব কমার্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট শ্যারন ফ্রোটেজ, টুলি কন্সট্রাকশনের মালিক টম টুলি, চীফ ইঞ্জিনিয়ার ডীন ডিভোস প্রমুখ। এছাড়াও বেশ কিছু গ্রাহক ও আমেরিকান ব্যবসায়ীও ছিলেন অনুষ্ঠানে। তারা সকলেই আখতার হোসেন বাদলের ব্যবসার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।

এদিকে ব্যবসার প্রসারের মধ্যেই দুই কাউন্টিতেই আমেরিকান ব্যবসায়ী সহ এলাকার চেম্বার অব কমার্সের দৃষ্টি কেড়েই ক্ষান্ত হননি আখতার হোসেন বাদল। এখন তিনি স্থানীয় চেম্বার অব কমার্সেও নেতৃত্বের অংশীদার হয়েছেন। জানা যায়, মহামারী করোনার সময় যখন অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ তখন ‘আরএলবি গ্রুপ’-এর স্টোরগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় খোলা রেখে ন্যূনতম লাভে জরুরী পণ্য বিক্রি করেছেন। যাদের কাছে অর্থ ছিল না তাদেরকে ফ্রি দেওয়া হয়েছে স্বাস্থ্য-সুরক্ষার নানা সামগ্রী। ফলে স্থানীয় জনগণ, ব্যবসায়ী, মূলধারার রাজনীতিক আর চেম্বার অব কমার্স-এর দৃষ্টি কাড়েন ব্যবসায়ী আখতার হোসেন বাদল। নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ তার কর্মকান্ডের জন্য শুধু প্রশংসাই করেনি, তার কাজের স্বীকৃতি স্বরূপ ‘অভিনন্দনপত্র, সাইটেশন, প্রক্লেমোশন’ প্রদান করেছেন। যা তাকে অনুপ্রাণিত করেছে। বছর দুয়েক আগে আখতার হোসেন বাদল কপিয়েগ কাউন্টি চেম্বার অব কমার্সের পরিচালনা পর্ষদের অন্যতম সদস্য হয়েছেন। সেই চেম্বারে একমাত্র তিনিই অশ্বেতাঙ্গ ব্যবসায়ী। অতি সম্প্রতি ‘দ্য লিন্ডেনহার্স্ট চেম্বার অব কমার্স’র সদস্যপদ পেয়েছেন।

আখতার হোসেন বাদল বলেন, ব্যবসার পাশাপাশি মানুষের সেবাই আমার মূল লক্ষ্য। গত ৫ বছরে কঠোর পরিশ্রম আর সততার সাথে ব্যবসার সুফল পেয়েছি। নির্মাণ ব্যবসায়ী/ঠিকাদাররা একবার এলে আর কখনো অন্য পথে পা বাড়াননি। তাঁরাই আমার ব্যবসা প্রসারে বিশ্বস্ত বন্ধুতে পরিগণিত হয়েছেন। এজন্য তিনি সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

আখতার হোসেন বাদল জানান, কুমিল্লা ক্যাডেট কলেজের ছাত্রাবস্থায় ১৯৮৮ সালে স্টুডেন্ট ভিসায় তিনি যুক্তরাষ্ট্রে প্রবাসী হন। লেখাপড়ার পর ১৯৯০ সালের ১৩ মার্চ নিউইয়র্কের ব্রঙ্কসে বসতি গড়েন। চাকরি নেন ‘ফ্লোরশিম শো’ (জুতার স্টোর) তে। সেই স্টোরের সেলসম্যানের কাজের সময়েই পরিচয় ঘটে এলাকার একজন স্টেট অ্যাসেম্বলীম্যানের সাথে। সেই সূত্রে কন্সট্রাকশন ব্যবসার লাইসেন্স করেন বাদল। সিটি, ষ্টেটের ঠিকাদারি নেন। সবকিছুই ছিল ইউনিয়ন জব। ফলে আর তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। কাস্টমার সার্ভিসকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আর নিষ্ঠার সাথে ছোট ছোট কাজ সম্পন্ন করি। এক পর্যায়ে ছোট ছোট কাজ বড় কাজ কারার পথ সুগম করে।

প্রসঙ্গক্রমে আখতার হোসেন বাদল বলেন, আমি মনে প্রাণে বাংলাদেশী জাতীয়তাবেদে বিশ্বাসী। বাংলাদেশ আমার মাতৃভূমি। দেশ আমাদের অনেক কিছুই দিয়েছে। তাই আমিও দেশের জন্য সাধ্যমত করদে চাই। এজন্য রাজনীতিই মুখ্য পথ বলে তিনি মনে করেন এবং বিএনপি’র রাজনীতির ঝান্ঠা যুক্তরাষ্ট্রে তুলে ধরতে চান। ফলে ব্যবসার ফাঁকে দলের প্রয়োজনেও শ্রম ও মেধার পাশাপাশি অর্থের বিনিয়োগও ঘটাচ্ছি। বিএনপির রাজনীতির পরিপূরক তদ্বিরের জন্যে ইউএস কংগ্রেসম্যান, সিনেটরগণের সাথে মাঝেমধ্যেই বৈঠকে মিলিত হচ্ছি। বিএনপির একজন কর্মী হিসেবে টেলি কনফারেন্স করেও যেগাযোগ অব্যবত রাখছি। আমেরিকার মূলধারার রাজনীতিকদের দেশ, দল আর ম্যাডাম খালেদা জিয়ার বর্তমান অবস্থা তুলে ধরছি। তিনি বলেন, প্রয়োজনে মূলধারার চেম্বারের সাথের সম্পর্ককেও দল ও দেশের জন্য কাজে লাগাবো। ভবিষ্যত লক্ষ্য কি এমন এক প্রশ্নের উত্তরে আখতার হোসেন বাদল বলেন, বাংলাদেশী-আমেরিকার ব্যবসায়ী হিসেবে আমেরিকার চেম্বার অব কমার্সে নেতৃত্ব দেয়া, মূলধারার রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা এবং যুক্তরাষ্ট্র বিএনপি-কে শক্তিশালী করা। আর দল চাইলে চাঁদপুর-৫ আসন থেকে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সদস্য পদে প্রার্থীতা।

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.