সরাসরি লড়াইয়ে ‘রব-রুহুল’ ও ‘নয়ন-আলী’ প্যানেল বাংলাদেশ সোসাইটির নির্বাচন ১৮ সেপ্টেম্বর : ১৯টি পদে ৩৭জন প্রার্থী সকল প্রস্তুুতি সম্পন্ন : সিইসি জামাল আহমেদ জনি

0

নিউইয়র্ক (ইউএনএ): মামলা-মোকদ্দমার মাঝেই বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচনের নতুন তারিখ নির্ধারিত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর রোববার নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণা করেছে। একের পর এক মামলার ফলে চূড়ান্ত প্রস্তুতি ও নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণার পর কয়েক দফা তা বাতিল যায়। নিউইয়র্ক স্টেট সুপ্রিম কোর্টের স্থগিতাদেশে বন্ধ হয়ে যায় সব ধরনের নির্বাচনী কার্যক্রম। এর মাঝে দেখা দেয় করোনা মহামারি। করোনা কাটিয়ে উঠার পর আবার মামলা। এসবের মধ্যেই ২০১৮ সালের নির্বাচন ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২১ অক্টোবর, রোববার সোসাইটির দ্বি-বার্ষিক (২০২২-২০২৩) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। বাংলাদেশ সোসাইটির এবারের নির্বাচনে দু’টি প্যানেল সহ কার্যকরী পরিষদের ১৯টি পদে ৩৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ‘রব-রুহুল’ প্যানেল থেকে সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের ১৯ পদে ১৯জন আর ‘নয়ন-আলী’ প্যানেল থেকে ১৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এছাড়াও সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন সভাপতি পদে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। নিউইয়র্কের ৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে এবং এজন্য নির্বাচন কমিশন (ইসি) সকল প্রস্ততিও নিয়েছে। খবর ইউএনএ’র।

বাংলাদেশ সোসাইটির প্রধান নির্বাচন কমিশনার জামাল আহমেদ জনি বলেছেন, আশা করছি আমরা সকল বাধা পেরিয়ে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন সম্পন্ন করতে পারবো। কমিশনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স, ব্রুকলীন, ব্রঙ্কস, ওজনপার্ক এবং জ্যামাইকার মোট পাঁচটি কেন্দ্র নির্বাচনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ১৮ সেপ্টেম্বর রোববার সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ চলবে।
জামাল ইউ আহমেদ বলেন, অবশেষে আমরা নির্বাচন করতে পারছি এটাই বড় কথা। আমরা অতীতের ভুল-ভ্রান্তি ভুলে যেতে চাই। নির্বাচন কমিশন শতভাগ নিরপেক্ষ থেকে সোসাইটির গঠনতন্ত্র ও বাইলজ অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করছে। আশা করছি সবাই মিলে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দিতে পারবো। এজন্য তিনি সকল মহলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, সিটির ৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। কুইন্সের গুলশান ট্যারেসে প্রধান ভোট কেন্দ্র হবে। এছাড়াও জ্যামাইকার ইকরা সেন্টার, ব্রুকলীনের পিএস ৭৯, ওজোনপার্কের দেশী সেন্টার আর ব্রঙ্কসের গোল্ডেন প্যালেসে অন্যান্য ভোট কেন্দ্র হবে।

অপরদিকে সোসাইটির নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রতিদ্বন্দ্বি রব-রুহুল এবং নয়ন-আলী প্যানেল সহ স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পুনরায় নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। চলছে দুই প্যানেলের প্রার্থীদের ব্যক্তিগত আর যৌথ সভা-সমাবেশ। রং বে রং এ পোস্টারে ছেয়ে গেছে কমিউনিটির গুরুত্বপূর্ণ এলাকার দেয়াল, সাটার। এখন নির্বাচনী মাঠে মুখোমুখী ‘রব-রুহুল’ ও ‘নয়ন-আলী’ দুই প্যানেল। প্রার্থীদের পরিচিত সভা ছাড়াও খন্ড খন্ড সভা, ফোন আর ফেসবুকের মাধ্যমেও চলছে গণ সংযোগ।

নির্বাচনে ‘রব-রুহুল’ প্যানেল থেকে বৃহত্তর নোয়াখালী সমিতি ইউএসএ’র সাবেক সভাপতি আব্দুর রব সভাপতি পদে ও সোসাইটির বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন সিদ্দিকী পুনরায় একই পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেল থেকে চট্টগ্রামের মিরেশ্বরাই এসোসিয়েশন ইউএসএ’র সভাপতি, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাজী আশরাফ হোসেন নয়ন সভাপতি পদে ও সোসাইটির বর্তমান কোষাধ্যক্ষ মোহাম্মদ আলী সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। উভয় প্যানেলে রয়েছেন কমিউনিটির বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তা। এছাড়াও সভাপতি পদে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সোসাইটির সাবেক সাধারণ সম্পদক জয়নাল আবেদীন এবং সাধারণ সম্পাদক পদে স্বতন্ত্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন সোহেল। ফলে সব মিলিয়ে নির্বাচন জমে উঠেছে। নির্বাচনে জয়নাল আবেদীন ও সোহেলের প্রচারণা না থাকলেও ‘রব-রহুল’ ও ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের মধ্যে নির্বাচনে হড্ডাহাড্ডির লড়াইয়ের সম্ভাবনাও দেখছেন কেউ কেউ। তবে নিয়ম অনুযায়ী সোসাইটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে কোন সংগঠনের নেতৃত্ব থাকা কেউ প্রার্থী হওয়ার সুযোগ নেই। ফলে ‘রব-রুহুল’ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী আব্দুর রব নোয়াখালী সমিতির সভাপতির পদ ত্যাগ করে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সোসাইটির কার্যকরী পরিষদের ১৯টি পদের মধ্যে ‘রব-রুহুল’ প্যানেল থেকে ১৯ পদেই প্রার্থী রয়েছেন। অপরদিকে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেল থেকে ১৭জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতিপূর্বে প্রার্তীদের মনোনয়নপত্র বাছাইকালে ‘নয়ন-আলী’ প্যানেলের কার্যকরী সদস্য পদের দু’জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।

সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশ সোসাইটি’র নির্বাচনে ইতিপূর্বে সদস্য/ভোটার নিবন্ধিত হয়েছেন ২৭,৫১৩। যা রেকর্ড ভোটার। এরমধ্যে ৪৮৮ জন আজীবন সদস্য/ভোটার রয়েছেন। সাধারণ ভোটার হচ্ছে ২৭,০২৫ জন। সোসাইটির ইতিহাসে এতো সংখ্যক সদস্য/ভোটার হওয়ার নজির নেই। এতো ব্যাপক ভোটার নিয়ে ১৮ সেপ্টেম্বর রোববার অনুষ্ঠিতব্য সোসাইটির নির্বাচন জমে উঠবে বলে সংশ্লিরা আশা প্রকাশ করছেন।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.