অবৈধ উচ্ছেদের নামে ভুমিহীন হতদরিদের অস্থায়ী ঘর ভাঙ্গলো সহকারী ভুমি কর্মকর্তা

0

মেহেদী হাসান আকন্দ: গত সোমবার নেত্রকোণার সদর উপজেলার হাটখলা বাজারে ফইচকা ব্রীজ সংলগ্ন শফিকুল ইসলামের নবনির্মিত টিনের চালা ঘরটি মৌগাতী ইউনিয়ন ভুমি অফিসার মোফাজ্জল হোসেন গ্রাম পুলিশের সহায়তায় ভেঙ্গে উচ্ছেদ করে। এ বিষয়ে শফিকুল ইসলামের বাবা আরজ আলী জানান, আমার বাবা ও চাচা এক একর জায়গা বিনা পয়সায় বাজারের নামে লিখে দিয়ে বাজার সৃস্টিতে সহায়তা করেছিলেনে। আমি এখন অসুস্থ ভুমিহীন। জীবিকার তাগিদে স্থানীয় বিত্তবানদের আর্থিক সহায়তায় চায়ের দোকান করার জন্য আমার ছেলে শফিকুল ইসলামকে দিয়ে কিছু টিন ও বাঁশ দিয়ে ছোট্ট একটি চালা ঘর নির্মাণ করেছিলাম। ইউনিয়ন ভুমি অফিসার আমাকে কিছু না জানিয়ে গ্রাম পুলিশের সহায়তায় ঘরটি ভেঙ্গে ফেলে। তিনি বলেন, আমরা বহুবছর পূর্ব হইতে এখানে শুকনো মৌসুমে জালা ক্ষেত চাষ করি। সম্প্রতি সরু ব্রীজ ভেঙ্গে নতুন ব্রীজ করার সময় কিছু মাটি পড়ে জায়গাটি চাষের অনুপযুগী হয়েছে। স্থানীয় ব্যবসায়ী নেত্রকোণা সেনা কল্যাণ সংস্থার সদস্য মাহবুব আলম জানান, বাজার মসজিদের ইমাম শফিকুল ইসলাম সরকারি জায়গায় অবৈধভাবে ঘরটি নির্মাণ করায় ভুমি অফিসার ঘরটি ভেঙ্গে দেয়। স্থানীয় বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল জোব্বার জানান, আরজ আলী দীর্ঘদিন যাবৎ অসুস্থ। মানবিক দিক বিবেচনা করেই স্থানীয় বিত্তবানদের সহযোগীতায় অস্থায়ী চালা ঘরটি নির্মাণ করেছিল। কিছু স্বার্থনৈষী মহলের ষড়যন্ত্রে ভুমিহীন আরজ আলীর ঘরটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। যারা সরকারি জায়গা অবৈধভাবে দখল করে আছে তাদেরকে কিছু করার সাহস নাই। আরজ আলী দরিদ্র হওয়ার কারণেই তার ঘরটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। মৌগাতী ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক বদিরুজ্জামান পিপুল দুঃখ প্রকাশ করে জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। তিনি বলেন, আরজ আলী একজন ভুমিহীন দরিদ্র মানুষ। তার বাবার অবদানেই এই বাজারটি গড়ে উঠেছিল। জায়গাটি যদি সরকারিও হয়ে থাকে তবুও ঘরটি না ভাঙ্গা বিকল্প ব্যবস্থা করা যেত। বাজার বণিক সমিতির সভাপতি আনিসুর রহমান হাসিম জানান, আরজ আলীর বাবার অবদানের কারণেই আমরা আজ এই বাজারে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তিনি আজ ভুমিহীন। ব্রীজের পাশে তিনি আগেও চায়ের ব্যবসা করতেন। তাই স্থানীয় ব্যবসায়ীরা কিছু আর্থিক সহায়তা করে অস্থায়ী দোকান ঘরটি নির্মাণে পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। ভুমি অফিসার কিছু অসাধূ লোকের প্ররোচনায় নির্মিত চালা ঘরটি ভেঙ্গে ফেলে। যা সম্পূর্ণ অনাকাঙ্খিত। অথচ এই বাজারে অনেকেই সরকারী জায়গায় স্থায়ীভাবে পাকা ঘর নির্মাণ করে দখল করে আছেন। সে ব্যাপারে ভুমি অফিসার কোন পদক্ষেপ নেন না। মৌগাতী ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হোসেন জানান, হাটখলা বাজারে সরকারি জায়গা পরিমাপ করা হয়নি। অবৈধভাবে নির্মিত টিনের চালা ঘরটি দৃশ্যত: সরকারি জায়গা হওয়ায় উর্দ্ধতন কর্মকর্তার নির্দেশে গ্রাম পুলিশের সহায়তায় ভেঙ্গে দেওয়া হয়েছে। আগামী একমাসের মধ্যে বাজারের জায়গা পরিমাপ করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন বলে তিনি জানান।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.