বিল দখলে আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল লাঠিয়াল বাহিনী

0

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার ভাঙ্গুড়ায় উন্মুক্ত বিলের শনিবার বাউৎ উৎসবে মাছ ধরতে এসে বাউৎরা মারধরসহ রোষানলের শিকার হয়েছেন পারভাঙ্গুড়া ইউপির প্যানেল চেয়ারম্যান, ৬ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য এবং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম খান ও তার লাঠিয়াল বাহিনীর হাতে। স্থানীয় সংবাদ কর্মি সংবাদ সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গিয়ে তিনিও মারধরের শিকার হয়েছেন বলে অভিয়োগ পাওয়া গেছে। থানা পুলিশের কোন ধরণের অভিযোগ দিলে সাংবাদিক ও বাউৎ উৎসবে আসা মৎস্যজীবীদের দেখে নেওয়ার হুমকিও দিয়েছেন এই প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ নেতা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বন্যার পানি নেমে গেলেই ভাঙ্গুড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকার উন্মুক্ত বিলে আশপাশসহ নানা উপজেলা থেকে লোকজন আসেন মৎস্য শিকারে। আর এই মাছ ধরাকে স্থানীয়রা বাউৎ উৎসব হিসেবে রুপ দিয়েছেন। এই উৎসব যুগ যুগ ধরেই চলে আসছে। শনিবার (১৪ নভেম্বর) সকালে উপজেলার পারভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পাথরঘাটা গ্রামের ছাতিয়ানের বিলে বাউৎ উৎসবে শতাধিক মৎস্যশিকারী পলো নিয়ে মাছ শিকারে আসে।

স্থানীয়রা একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, এই বিলের আধিপত্য ও দখল নিয়ে রেখেছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্য ও ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম খান। এদিন বাউৎরা বিলে নামার সাথে সাথে নুরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে শতাধিক লাঠিয়াল তাদের উপর হামলা চালিয়ে বেধরক মারপিট করে। বাউতদের নিয়ে আসা বিভিন্ন ধরণের যানবাহন ভাংচুর করে। সংবাদ সংগ্রহে যাওয়া দৈনিক মানবজমিনের ভাঙ্গুড়া উপজেলা প্রতিনিধি শাহিবুল ইসলাম পিপুল ছবি তোলার সময়ে নুরুল ইসলাম খান তাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এ সময় পিপুলের হাতের একটি আঙ্গুল ভেঙ্গে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ফোর্স ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
বাউত আব্দুর রহিম বলেন, প্রতিবারই এই বিলে বন্যায় পানি আসলে সরকারি ভাবে মাছ অবমুক্ত করা হয়। পানি নেমে গেলে দরিদ্র মৎস্যজীবীরা এই বিলে মাছ ধরতে আসেন। কিন্তু এবারে বাউতরা মাছ ধরতে এসে স্থানীয় মেম্বার ও প্রভাবশালী নেতা এবং তার গুন্ডা বাহিনীদের হাতে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তারা ইঞ্জিনন চালিত নছিমন-করিমনসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করেছে। আমরা বাউতরা দোষীদের বিচার দাবী করছি।

অভিযুক্ত নুরুল ইসলাম খান বলেন, আমার নিজস্ব জমিতে পুকুর খনন করে লক্ষ লক্ষ টাকা দিয়ে মাছ চাষ করি। আমার পুকুরে আমি কাউকে নামতে দিতে পারিনা। জোরপূর্বক মার ধরার সময়ে দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতান্ডা হয়েছে। তিনি দাবী করেন, আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা রটানো হচ্ছে। অভিযোগগুলো সঠিক না। অন্যদিকে মারধরের শিকার সংবাদকর্মি শাহিবুল ইসলাম পিপলু বলেন, তার সাথে আমার কোন বিরোধ নেই। আমি সংবাদ সংগ্রহে গেলে তিনি আমাকে মারপিট করেন। এমনকি বাউৎ যারা এসেছেন তাদেরকেও মারধর করে নানা ধরনের হুমকি ধামকি দিয়ে তাড়িয়ে দেন।

ভাঙ্গুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিত্বেই জরুরী ভাবে এএসআই মুকিম হোসেনকে ফোর্সসহ ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়। পরে আমি নিজেও ঘটনাস্থল পরিদর্শণ করেছি। তিনি বলেন, এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। সংবাদকর্মিসহ বাউতদের মারধর করা ও গাড়ি ভাংচুরসহ সার্বিক ঘটনা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.