সড়কে গাড়ী বৃদ্ধির দাবীতে ধলঘাটাবাসির মানববন্ধন মহেশখালীর মাতারবাড়ী-ধলঘাটা প্রকল্প সড়কে গাড়ী সংকট! দূর্ভোগে অর্ধ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী

0

ইয়াছিন আরাফাত,মহেশখালী : কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ী -ধলঘাটা কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প সংলগ্ন সড়কে প্রকল্পের কোলপাওয়ার জেনারেশন কর্তৃপক্ষের ভূল সিন্ধান্তে অর্ধেক গাড়ী বাতিল করায় অর্ধ লক্ষাধিক বাসিন্দাদের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে । দুর্ভোগ দূর করতে উক্ত সড়কে পূর্বের মত টমটম সহ বিভিন্ন গাড়ী বৃদ্ধির দাবীতে মানববন্ধন করেছেন ধলঘাটা-মাতারবাড়ী ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও সর্বস্তরের জনসাধারণ । ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দাদের আয়োজনে উক্ত মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয় । গতকাল রবিবার বিকেল ৩ টার সময় ধলঘাটা-মাতারবাড়ী সংযোগ সড়কের কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের সীমান্ত এলাকা ধলঘাটা নাছির মোহাম্মদ ডেইল সড়কে দাবি আদায়ে শত শত ক্ষতিগ্রস্ত জমির মালিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা এ মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করে ।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, ধলঘাটার স্থানিয় মেম্বার নবীর হোসেন, আব্দুল হান্নান, জহিরুল ইসলাম, মীর কাশেম, ওয়াজ উদ্দিন, শফি উল আলম, জবর মল্লুক, ফরিদুল আলম, বাপ্পি, ফরহাদ, বশর, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা খাইরুল আমিন ,নুর মোহাম্মদ ও মোঃ হোসাইন, জুবাইর, কাইছার, জালাল আহমদ, মোস্তফা, প্রমূখ । মানববন্ধনে তারা জানান, মাতারবাড়ী-ধলঘাটা দুইটি গুরুত্বপূর্ণ ইউনিয়ন । এখানকার লবণ,চিংড়ি বাংলাদেশের জন্য বিখ্যাত । আমাদের মালিকানাধীন চাষাবাদের জমিতে সরকারের পক্ষ থেকে অধিকগ্রহণ করে গড়ে তোলা হচ্ছে তাপভিত্তিক কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প, গভীর সমুদ্র বন্দরসহ বিভিন্ন মেগা প্রকল্প । এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ দিয়ে পুরোদেশ আলোকিত হবে । আমাদের দুর্ভোগ লাগবে পূর্বের ন্যায় গাড়ীর সংখ্যা বাড়ালে আমরা উপকৃত হব । কমবে যাতায়াতে দূর্ভোগ । বক্তারা আরও বলেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও প্রকল্প কর্তৃপক্ষ জনগণের কথা চিন্তা করে উক্ত সংকট নিরসনের একটি বিহিত ব্যবস্থা নিবেন । যদি পূর্বের ন্যায় গাড়ী বৃদ্ধি না করা হলে পুরাতন সড়ক দিয়ে গাড়ী চলাচলের অনুমতি দিলে আমরা অল্প সময়ে গন্তব্যে পৌছব । উল্লেখ্য, উপজেলার মাতারবাড়ী-ধলঘাটা ইউনিয়নের মধ্যবর্তীস্থানে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পটি স্থাপন করার কারণে সড়ক দিয়ে জনগণের যাতায়াত ব্যবস্থার চরম দৈত্য দূর্ভোগ সৃষ্টি হয়েছিল ।

এছাড়াও প্রকল্পটি দুই ইউনিয়নের পূর্ব থেকে পশ্চিশ সীমানা পর্যন্ত স্থাপনের কাজ চলমান থাকার ফলে দুই ইউনিয়নের লক্ষাধিক বাসিন্দাদের নিজ গন্তব্যে পৌঁছতে দীর্ঘ পথ পাড়ী দিতে হয় । পরবর্তী জনগণের দূর্ভোগ দেখে মানবিক কারণে এগিয়ে এসে প্রকল্পের নির্মাণ ঠিকাদার জাপানের সুমিতোমো- সকাল -বিকাল এক নাগাড়ে ১৭ টি ভাড়াবিহীন (ফ্রি) টমটম গাড়ী যোগাযোগ সহজ লভ্যতার জন্য নিজেদের অর্থায়ানে দেয় । যা দুই ইউনিয়নের লোকজনের চলাচলের জন্য পর্যাপ্ত ছিলনা । কিন্ত ইতিমধ্যে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের কোলপাওয়ার জেনারেশন কর্তৃপক্ষের অদক্ষতা ও ভূল সিন্ধান্তের কারণে অর্ধেক টমটম গাড়ী বাতিল করেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন । যার কারণে পূর্বের ন্যায় দুই ইউনিয়নের লোকজনের মাঝে যোগাযোগের চরম দুর্ভোগের দেখা দিয়েছে । অনেকে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প সংড়কে গাড়ীর জন্য দ্বীর্ঘক্ষণ দাড়িয়ে অপেক্ষা করেও গাড়ীর দেখা মিলেে না । তারা অভিযোগ করে বলেন , জরুরী রোগী নিয়ে হাসপাতালে যেতে চাইলেও অনেক সময় গাড়ী পাওয়া যায় না । এতে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হলে হিমশিম খেতে হয় স্বজনদের । তারা আরো বলেন , বর্তমানে যে সড়ক দিয়ে গাড়ী চলাচল করছে এই সড়ক দিয়ে একজন স্বাভাবিক মানুষও রোগীর অবস্থা পরিনত হয়ে যাবে । দ্বীর্ঘ দিন আবেদন করেও আমরা ধলঘাটাবাসি এখনো একটা উন্নত সড়কের দেখ পাচ্ছি না । বর্তমান সড়কে ধুলোবালির কথা বলতে গেলে আরো নাজুক অবস্থা । ধলঘাটা – মাতারবাড়ী সংযোগ সড়কে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্প কর্মকর্তা পানি না ছিটানোর কারনে এই সড়কে ধুলোবালির প্রকোপ বেড়ে গেছে ।

এতে সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী মানুষ গুলোর নাকে মুখে সড়কের ধুলোবালি ঢুকে শ্বাসকষ্ট রোগীর সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করেন স্থানীয়রা । ধলঘাটার অনেকে অভিযোগ করে বলেন , মাতারবাড়ী থেকে ধলঘাটা আসার পথে কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে নিয়োজিত বিভিন্ন কোম্পানীর সিকিউরিটি লোকজনের কাছে অনেক সময় নাজেহাল হতে হয় । এতে অনেক সময় তারা গাড়ী আটকে রাখলে ক্ষোভে হেঁটে গন্তব্যে পাড়ী দিতে বাধ্য হয় । জানাগেছে, গাড়ী না পাওয়া ডেলিভারী রোগি,শিক্ষার্থী ও নিম্ম আয়ের মানুষের সীমাহীন কষ্ট হচ্ছে দীর্ঘপথ পাড়ী দিতে । ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করেও গাড়ী পাওয়া যেন সোনার হরিণ এখন । এছাড়াও প্রকল্পের লাগায়ো সড়ক দিয়ে গাড়ী চলাচল করলেও এখন সাময়িক ভাবে প্রকল্পের ভিতর দিয়ে ধলঘাটা যাতায়াত করতে গাড়ী চলাচলের অনুমতি দিয়েছেন কোল পাওয়ার কৃর্তপক্ষ । প্রকল্পে ভিতরে দেশ বিদেশী কর্মকর্তা কর্মচারী কর্মরত থাকায় যে কোন সময় প্রকল্পের ভিতর দিয়ে গাড়ী চলাচল বন্ধ হতে পারে এমনটা মনে করছেন অত্র এলাকার বাসিন্দারা । কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পে দায়িত্বরত জাপানের সুমিতোমো একাউন্টিং মহসিন বলেন, যদি গাড়ী স্বল্পতার কারনে জনদূর্ভোগ সৃষ্টি হলে উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবহিত করা হবে । মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎ প্রকল্পের কোলপাওয়ার লিমিটেডের সাইড ইনর্চাজ মনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ভাড়াবিহীন গাড়ী আগের নিয়মে চলছে । গাড়ী কমানো হয়েছে কিনা খোঁজ নিয়ে দেখব ।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.