বর্ণাঢ্য আয়োজনে নোবিপ্রবিতে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা ও মহান শিক্ষা দিবস উদযাপন

0

রহমত উল্যাহ, নোবিপ্রবি প্রতিনিধি : ‘পরিবর্তনশীল ও শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে সাক্ষরতার প্রসার’—এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে নানা আয়োজনে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (নোবিপ্রবি) আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ও মহান শিক্ষা দিবস পালিত হয়েছে। শিক্ষা বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত নোবিপ্রবি এডুকেশন ক্লাবের উদ্দ্যোগে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস অডিটোরিয়ামে শিক্ষা বিজ্ঞান অনুষদের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে দিবসটি উদযাপন করা হয়।

দিনব্যাপী আয়োজনের শুরুতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি সম্মুখ থেকে একটি বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের করা হয়। পরবর্তীতে এটি লাইব্রেরীর পিছনের সড়ক ঘুরে প্রশাসনিক ভবন হয়ে অডিটোরিয়ামের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

দিনব্যাপী আয়োজনের অংশ হিসেবে আরও ছিলো ব্লাড ক্যাম্পেইন ও বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক সামাজিক কার্যক্রম,শিক্ষা সম্পর্কিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন এছাড়াও ছিলো লিফলেট বিতরণ ও সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে নিয়ে স্বল্প দৈর্ঘ্যর নাটক প্রদর্শনী।

নোবিপ্রবির বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিস অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর ও শিক্ষা বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. বিপ্লব মল্লিক। মুখ্য আলোচক ছিলেন মালালা ফান্ডের কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ-বাংলাদেশ জনাব মোশাররফ তানসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন এডুকেশন ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাফিউজ্জামান।

আলোচনা সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ দিদআলম বলেন, সনদ কিংবা ডিগ্রি অর্জন শিক্ষার মূল লক্ষ্য হতে পারে না। শিক্ষার মাধ্যমে আমাদের আচরণ, অভ্যাস, দক্ষতায় ইতিবাচক পরিবর্তন আসলে সেটাই সুশিক্ষা। সুশিক্ষা প্রসার ও প্রয়োগে আমাদের নজর দেয়া প্রয়োজন। বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে খুব অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষা খাতের উন্নয়নে বেশকিছু পদক্ষেপ নেন। যা এখনো আমাদের পথ দেখিয়ে চলেছে। বঙ্গবন্ধুর হাতে করা শিক্ষা কমিশন এখন পর্যন্ত দেশের একমাত্র পূর্ণাঙ্গ শিক্ষা কমিশন।

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য বলেন, ‘মানুষ ভুলের উর্দ্ধে নয়। তবে চেষ্টা করতে হবে, যত কম ভুল করে জীবন পরিচালনা করা যায়। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে হবে। সরকার কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিয়ে তোমাদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করেছে। তোমরাও নিজেদের দক্ষ জনগোষ্ঠী হিসেবে গড়ে তুলে জাতীয় উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে, সেটাই প্রত্যাশা। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’

উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল বাকী বলেন, একজন নাগরিকের ন্যূনতম অধিকার বুঝে নেয়ার ক্ষেত্রে সাক্ষর জ্ঞান থাকাটা অনেক জরুরি। তাই সাক্ষরতার হার বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।

কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. নেওয়াজ মোহাম্মদ বাহাদুর বলেন, শিক্ষিত হওয়ার পাশাপাশি ভালো মানুষ হওয়াটা অনেক জরুরি। বর্তমান সরকার শিক্ষাকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে প্রান্তিক অঞ্চলে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করেছে যার সুফল আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা পাচ্ছে।

মুখ্য আলোচক জনাব মোশাররফ তানসেন বলেন, ‘উন্নয়নের সুফল মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে হলে সাক্ষরতার বিকল্প নেই। সাক্ষর না হলে হাতে থাকা মুঠোফোনটিরও কার্যকর ব্যবহার করা সম্ভব নয়। তাই শিক্ষাজীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে যারা ঝরে পড়েছে এবং যারা ঝরে পড়ার ঝুঁকিতে আছে সে সকল শিক্ষার্থীদের সাক্ষরতা ও জীবনমুখী শিক্ষার আওতায় আনতে হবে।

সভাপতি বক্তব্য ইমরান হোসেন রিয়াজ বলেন,আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে এবারই প্রথম এডুকেশন ক্লাব, শিক্ষা বিজ্ঞান অনুষদের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক সাক্ষরতা দিবস ও মহান শিক্ষা দিবস পালিত হচ্ছে। আমরা সকলের প্রতি কৃতজ্ঞ আমাদের প্রোগ্রামগুলো সফল ও সার্থক করে তোলার জন্য। আমরা আশা রাখি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা কার্যক্রমগুলোকে ছড়িয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.