পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেনের কাছে সিলেট গণদাবী পরিষদের স্মারকলিপি ভ্যাকসিন পেতে আর বঙ্গবন্ধুর খুনীকে দেশে ফেরাতে প্রবাসীদের সহায়তা

0

বিশেষ প্রতিনিধি: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন দেশের জন্য আরো ভ্যাকসিন পেতে আর বঙ্গবন্ধুর খুনীকে দেশে ফেরত নিতে প্রবাসীদের সহায়তা কামনা করে বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র আমাদেরকে টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। আমরা অপেক্ষায় আছি। কিন্তু আমাদের চাহিদা আরও অনেক বেশি। তাই বাংলাদেশের মানুষের জন্য আরও বেশী টিকার ব্যবস্থা করতে প্রবাসীরা নিজ নিজ রাজ্য থেকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে পারেন। পাশাপাশি তিনি বঙ্গবন্ধুর খুনীদের বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে প্রবাসীদের সহায়তা কামনা করেন।

নিউইয়র্ক সিটির কুইন্স প্যালেসে বাংলাদেশ ক্লাব আয়োজিত স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মোমেন উপরোক্ত আহ্বান জানান। বিশিষ্ট শিল্পপতি জহিরুল ইসামের সভাপতিত্বে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও বিশেষ দোয়া পরিচালনা করেন মওলানা সাইফুল ইসলাম। মূল আলোনণায় অংশ নেন প্রবীণ সাংবাদিক সৈয়দ মোহাম্মদ উল্লাহ, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সউদ চৌধুরী এবং চিত্র পরিচালক কবির আনোয়ার। এছাড়াও একাত্তুরের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সিলেট পৌরসভার প্রথম চেয়ারম্যান বাবরুল হোসেন বাবুল। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শহীদ পরিবারের সন্তান ফাহিম রেজা নূর। শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ক্লাব ইউএসএ’র সভাপতি নূরুল আমিন বাবু ও ইফজাল আহমেদ চৌধুরী এবং কবিতা পাঠ করেন শিবলী সাদিক। অনুষ্ঠানে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কনসাল জেনারেল সাদিয়া ফয়জুন্নেসা সহ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ এবং বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশী উপস্থিত ছিলেন।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে, যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন স্টেটে ভ্যাকসিনের মজুদ পড়ে আছে। এক সময় এই মজুদ ব্যবহারের সময়সীমা পার হয়ে যাবে। তাই নিজ নিজ এলাকার নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে এই ভ্যাকসিন সংগ্রহ করে বাংলাদেশে পাঠালে মানুষের উপকার হবে। তিনি বলেন, আপনারা একত্রিত হয়ে ক্যাম্পেইন করেও ভ্যাকিসিন সংগ্রহ করতে পারেন। তিনি বলেন, দেশে যারা আগে টিকা দিয়েছেন তাদের আগে দ্বিতীয় ডোজের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। তবে বিদশগামী শ্রমিকদেরও আমরা প্রাধান্য দিচ্ছি। কারণ তাদের টিকা না দিয়ে পাঠালে সেইসব দেশে তাদের নিজ খরচে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হচ্ছে-যা তাদের সামর্থের বাইরে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ এক ডোজের জনসন এন্ড জনসন সংগ্রহের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

ড. মোমেন বলেন, বঙ্গবন্ধুর জীবিত পাঁচ খুনীর একজন এদেশে আছে। তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাতে প্রবাসীদের ক্যাম্পেইন আরও জোরদার করার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, আপনারা আপনাদের এটর্নী জেনারেলকে এই দাবির কথা জোরালোভাবে জানাতে পারেন। আমরা সরকারের তরফ থেকে জানিয়েছি। যুক্তরাষ্ট্রের এটর্নী জেনারেল অফিস এ ব্যাপারে কাজ করছে বলেও উল্লেখ করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ড. মোমেন বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সূবর্ণ জয়ন্তীতে এই খুনীকে বাংলাদেশে নিয়ে আইনের কাছে সোপর্দ করতে চাই।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী দু:খ প্রকাশ করে বলেন, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে বাংলাদেশ মানবিকতার উজ্জল দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেও তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো কার্যকর উদ্যোগ নিচ্ছেনা। বরং গোপনে তারা মিয়ানমারের সাথে ব্যবসায় বিনিয়োগ বাড়িয়ে চলছে। তিনি রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারের অভ্যন্তরে থাকার উপযোগী ব্যবস্থা করার আহবান জানান।

জলবায়ু ইস্যূতে বাংলাদেশ সামনের সারির একটি দেশ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পরিবেশের বিপর্যয় রোধে বাংলাদেশ তার বলিষ্ঠ ভূমিকা অব্যাহত রাখবে। খুব শীঘ্রই যুক্তরাষ্ট্রের এনআইডি কার্যক্রম শুরু করা হবে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে পররাষ্ট্র মন্ত্রীকে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানানো হয়। এবং আহ্বায়ক আজিমুর রহমান বুরহান ও অধ্যাপিকা রানা ফেরদৌস চৌধুরীর নেতৃত্বে সিলেট গণ দাবীর পক্ষ থেকে সিলেটের সার্বিক উন্নয়নে একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

সভাপতি হাজী আব্দুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক আবু তালেব চৌধুরীর নেতৃত্বে যুক্তরাষ্ট্র জাতীয় পার্টি, সভাপতি মাঈনুল হক চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান শেফাজের নেতৃত্বে জালালাবাদ এসোসিয়েশন অব আমেরিকা মন্ত্রীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান। এছাড়াও নিউইয়র্ক ষ্টেট আওয়ামী লীগ, সিটি আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ প্রভৃতি সংগঠনের পক্ষ থেকে ড. মোমেনকে শুভেচ্ছা জানানো হয়।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.