বাংলাদেশের গণতন্ত্র-বাক্-স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের জন্য তথাকথিত ফেরিওয়ালাদের মায়াকান্না । হীরেন পণ্ডিত

0

বাংলাদেশের গণতন্ত্র, বাক্-স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের জন্য তথাকথিত ফেরিওয়ালা ও সোল-এজেন্টদের মায়াকান্না ও অকৃত্রিম ভালোবাসা দেখে হাসবে না কাঁদবে তা ভেবে ভেবে অস্থির এ দেশের জনগণ। এসব তথাকথিত ফেরিওয়ালা ও সোল-এজেন্টদের মায়াকান্না ও অকৃত্রিম ভালোবাসা উতলে উঠে এই বলে, কখনো দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নাকি শূন্যের কোঠায়, বাক্-স্বাধীনতা মৃত্যুমুখে পতিত হবার উপক্রম, আর বাংলাদেশের গণতন্ত্র সেই সমস্ত দেশে ইমিগ্রেন্ট বা অভিবাসী হওয়ার চেষ্টা করছে! প্রায় সব ঠিক এখন নাকি শুধু ভিসার জন্য অপেক্ষা। এসব তথাকথিত প্রতিবেদনের সব সূচক তারা নিজেরাই নির্ধারণ করেন! গণতন্ত্র, বাক্-স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের প্রশ্নে বাংলাদেশ ১০০ এর মাঝে ১০০ পাবে এমন দাবী কেউ করবে না সমস্যা কিছু না কিছু পৃথিবীর সব দেশেই আছে। তবে আমাদের অবস্থান অনেকের চেয়ে ভালো। এ সমস্ত ফেরিওয়ালাদের দেশে আরো বেশি সমস্যা রয়েছে। তবে সে সব স্ব-ঘেষিত মোড়লদের কথা তো আলাদা।

এই সমস্ত ফেরিওয়ালাদের আসল উদ্দেশ্য হলো এদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে ব্যাহত করা। বাংলাদেশের মানুষ ভালো আছে, সুখে আছে এ সমস্ত ফেরিওয়ালাদের এগুলো দেখে সহ্য হয়না তাই এটা তাদের গাত্রদাহের কারণ। বাংলাদেশের অর্থনীতি অনেক আশাব্যঞ্জক মাইলফলক ছুঁয়েছে। নানা প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার বেশ কিছু মেগা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। সরকার ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে দেশের ৭৫ ভাগ মানুষকে টিকা প্রদান করেছে এবং সকলকেই পর্যায়ক্রমে এই টিকার আওতায় নিয়ে আসা হবে। নিজ খরচে পদ্মা বহুমুখী সেতুর কাজ প্রায় শেষের দিকে। এ বছর সেতুটি যান চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে। এতে বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব ঘটবে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ সকল নাগরিককে বিস্তৃত টেলিযোগাযোগ সেবা (সরাসরি ঘরে ঘরে টিভি, রেডিও, টেলিমেডিসিন, শিক্ষা, এবং ইন্টারনেট ব্যবহার), রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র, ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্প, মাতারবাড়ি প্রকল্প দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে অবদান রাখছে। গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ প্রকল্প, রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, বঙ্গবন্ধু টানেল নির্মাণ প্রকল্প, ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের কাজ চলছে, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, তিন ডজনেরও বেশি হাই-টেক পার্ক এবং আইটি গ্রাম নির্মাণ করা হচ্ছে। অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা গৃহীত হয়েছে। গ্রামগুলোকে সব ধরনের নাগরিক সুবিধা দিয়ে সজ্জিত করা হচ্ছে। আজ আমরা এমন একটি দেশে পরিণত হয়েছি যে মাথা উঁচু করে রাখার সময় এসেছে।

সরকার ষষ্ঠ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা, এমডিজি এবং প্রথম প্রেক্ষিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে। আশ্রয়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৩,২০,০৭২টি পরিবারকে আশ্রয় দিয়েছে। মুজিব জন্মশতবর্ষে সরকার বছরের উপহার হিসেবে ৬৬ হাজার ১৮৯টি পরিবারকে একটি করে ঘর দেয়া হয়েছে। জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের জন্য প্রায় ১৪,৫০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক জনগণের দোরগোড়ায় রয়েছে। সরকার তিন কোটির বেশি শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও উপবৃত্তি, ছয় লাখ মানুষকে বিভিন্ন ভাতা, ৫০ লাখ পরিবারকে ১০ লাখ টাকার চাল, কৃষি খাতে কৃষকদের ভর্তুকি প্রদান করে। কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন সরকার ১,২১,০০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে যা দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

এখন বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী দেশ এবং মাছ, মাংস, ডিম ও শাকসবজিতেও স্বয়ংসম্পূর্ণ অভ্যন্তরীণ জলসীমায় মাছ উৎপাদন বৃদ্ধির হারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়। আমার গ্রাম আমার শহরের মাধ্যমে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ-এর সুফল শহর থেকে গ্রামাঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ছে। বাংলাদেশকে এলডিসি থেকে একটি উনয়নশীল দেশে রূপান্তরের ঘোষণা দেয়া হয় স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে, জাতিসংঘ বাংলাদেশকে একটি উন্নয়শীল দেশে পরিণত করার জন্য চূড়ান্ত সুপারিশ করেছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের মতে, ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতি। দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩১ সালে, বাংলাদেশে এমন কেউ থাকবে না যাকে অত্যন্ত দরিতদ্র বলা যাবে।

মাথাপিছু আয় মানব সম্পদ, এবং অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা- এই তিনটি সূচক উন্নয়নশীল দেশগুলির যোগ্যতা নির্ধারণ করে। এই তিনটি সূচকে বাংলাদেশ প্রায় কাঙ্ক্ষিত যোগ্যতা অর্জন করেছে। কোভিড-১৯ এর মধ্যেও বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় এখন ২৫৫৪ অর্থনৈতিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখে সারা বিশ্বকে স্তম্ভিত করেছে। যা গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুণ। নারী শিক্ষা, নারীর ক্ষমতায়ন, স্বাস্থ্যসেবা, মা ও শিশুমৃত্যুর ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। নারীরা এখন সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিকসহ সকল স্তরে অবদান রাখছে। প্রযুক্তির ছোঁয়ায় গ্রামাঞ্চলের নারীরাও পিছিয়ে নেই। তারাও এগিয়ে চলেছেন পুরুষ মানুষের সাথে সমানতালে। এতে বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার পথে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

আজকের তরুণরাই আগামীর কর্ণধার। তরুণ প্রজন্মকে মানবসম্পদে পরিণত করতে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল, কলা ও গণিত (স্টিম) শিক্ষা ব্যাপকভাবে চালু করা হচ্ছে। সমসাময়িক বিশ্বে ক্যারিয়ার ভিত্তিক শিক্ষা অপরিহার্য। রাষ্ট্রকে অবশ্যই তরুণদের জ্ঞান, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, আকাঙ্ক্ষা এবং মতামতের যথাযথ মূল্য দিয়েই এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। এগুলোই কি বাংলাদেশ নিয়ে গণতন্ত্র-বাক্-স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের ফেরিওয়ালাদের গাত্রদাহ ও মায়াকান্নার কারণ হয়েছে?

প্রধানমন্ত্রী দেশের জন্য অর্জনের জন্য চারটি মাইলফলক নির্ধারণ করেছেন। প্রথমটি ২০২১ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকল্প যা এখন একটা ভালো অবস্থানে রয়েছে, দ্বিতীয়টি ২০৩০ সালে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জন, তৃতীয়টি ২০৪১ সালে উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা এবং চতুর্থটি ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান। সকল নাগরিককে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত (এসডিজি-১ দারিদ্র্য অবসান এবং এসডিজি-২, জিরো হাঙ্গার অর্জন) একটি উন্নত বাংলাদেশের জন্য কাজ করতে হবে এবং বঙ্গবন্ধু যে স্বপ্ন দেখেছিলেন সেই মুক্তিযুদ্ধ ও ধর্মনিরপেক্ষতার চেতনাকে সমুন্নত রাখতে হবে। বাংলাদেশের সম্পদ সীমিত, ভূমির তুলনায় জনসংখ্যা বেশি। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশ আজ বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেল।
কোভিড-১৯ মহামারির কারণে বিশ্বের বেশিরভাগ অর্থনীতি গত বছরে নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি দেখেছে। এর মানে এই দেশগুলোর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) আগের বছরের তুলনায় কম। এমনকি প্রতিবেশী ভারতের মতো উচ্চ-বৃদ্ধির দেশগুলোতেও জিডিপির আকার প্রায় ৮ শতাংশ কমেছে। বাংলাদেশ এই ধারার অন্যতম ব্যতিক্রম ছিল। অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কিন্তু আগের বছরের তুলনায় আকারে সঙ্কুচিত হয়নি। ২০১৯-২০ সালে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও বাংলাদেশের অর্থনীতি পিছিয়ে যায়নি।

আগামী অর্থবছরে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি আরও বেশি হবে বলে মনে করছে বিশ্বব্যাংক। ২০২২-২৩ অর্থবছরের জন্য সংস্থার পূর্বাভাস ৭.৯ শতাংশ। রপ্তানি ও ভোগে ধারাবাহিকতা থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। অর্থনীতির পুনরুদ্ধার অব্যাহত থাকবে কি না এবং দারিদ্র্য হ্রাস পাবে তা নির্ভর করবে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও ব্যবসায়িদের সাহায্য করে অর্থনীতির ক্ষতি মোকাবেলার ওপর।

বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) সম্প্রতি জন্ম, মৃত্যু, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহ ২০২০ সালের ‘ভাইটাল স্ট্যাটিস্টিকস প্রকাশ করেছে। দেখা যায় বাংলাদেশের আয়ু বা গড় আয় এখন ৬৩ বছর। ত্রিশ বছর আগে, ১৯৯০ সালে, গড় আয়ু ছিল মাত্র ৫৬ বছর। পাকিস্তানি দুঃশাসনের কারণে রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশের গড় আয়ু গত ৩০ বছরে ১৫ বছর বেড়েছে। ভারতের গড় আয় বাংলাদেশের তুলনায় কম। ২০২০ সালে এটি ৭০ বছর ছিল। বাংলাদেশে গত বছর পাঁচ বছরের কম বয়সী প্রতি এক হাজার শিশুর মধ্যে ৩১ জন মারা গেছে। ১৯৯০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১৪৪। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে ছাত্র-ছাত্রীদের ভর্তির হারেও অনেক উন্নতি হয়েছে। মাধ্যমিক স্তরের বয়স বিবেচনায় এখন ৬৩ শতাংশ শিশু স্কুলে যায়।

বিশ্বব্যাংকের মতে, ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৩২০ মার্কিন ডলার। ২০২০ সালে, এটি ২,১৩৯ ডলারে দাড়িয়েছে। ১৯৯০ সালে বাংলাদেশের অর্থনীতি বা জিডিপির আকার ছিল মাত্র ৩২ বিলিয়ন ডলার। ২০২০ সালে, জিডিপি ৩২৪ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। গত এক দশকে বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতিতে পরিণত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বিশ্ব অর্থনীতির গতিশীলতার উপর তার সর্বশেষ বিশ্ব অর্থনৈতিক আউটলুকে বলেছে যে বাংলাদেশের মাথাপিছু জিডিপি এ বছরও ভারতকে ছাড়িয়ে যাবে।
দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের সাফল্য বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, ১৯৭৩-৭৪ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৭২ শতাংশ। সর্বশেষ প্রকাশিত পারিবারিক আয় ও ব্যয় জরিপ অনুযায়ী, ২০১৬ সালে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। এর ভিত্তিতে, ২০১৯ সালে আনুমানিক দারিদ্র্যের হার ২০.৫ শতাংশ। গত বছর কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়। সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপ অনুসারে, এর অনেকটাই এখন উদ্ধার করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক সম্প্রতি দক্ষিণ এশিয়ার অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে হালনাগাদ প্রতিবেদনে বলেছে, কোভিড-১৯-এর কারণে বাংলাদেশে দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি ঘটছে, কিন্তু বর্তমানে পরিস্থিতি উল্টে যাচ্ছে।

অর্থনীতিবিদরা এসডিজি, অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা এবং টেকসই ট্রানজিটের জন্য পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনার সাথে সমন্বয় করে শক্তিশালী ট্রানজিট কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের পরামর্শ দিচ্ছেন। আগামী দিনে অগ্রগতির জন্য স্থানীয় বাজার ও জনগণের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি, রপ্তানি বহুমুখীকরণ, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি, অবকাঠামোর উন্নয়ন, দুর্নীতি হ্রাস, মানসম্মত শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণে বিশেষ মনোযোগ দেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

প্রতিবছরই গণতন্ত্র-বাক্-স্বাধীনতা ও মানবাধিকারের তথাকথিত কিছু দেশি-বিদেশী ফেরিওয়ালা ও সোল এজন্টদের দৌড়-ঝাঁপ শুরু হয়। কখনো গণতন্ত্রের সূচকে, কখনো বাক্-স্বাধীনতার সূচকে আবার কখনো মানবাধিকারের সূচকে বাংলাদেশকে নিচের সারিতে রেখে দেশকে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়। এসব ফেরিওয়ালারা কিভাবে তাদের সূচক নির্ধারণ করে তারাই জানে। ফেরিওয়ালাদের এসব পক্ষপাতমূলক ও ভিত্তিহীন প্রতিবেদন এর প্রতি উত্তর সরকারের দেওয়া উচিত। এ সমস্ত তথাকথিত ফেরিওয়ালাদের কিছু এ দেশীয় তথাকথিত দোসর রয়েছে প্রোপাগান্ডা মেশিন হিসেবে কাজ করার জন্য।

অভিযোগ রয়েছে পুলিশের খাতায় থাকা চিহ্নিত অপরাধীরাও এখন বনে যাচ্ছেন মানবাধিকারের বড় ফেরিওয়ালা! সমাজের অসাধু কিছু মানুষ মানবাধিকার, বাক্ স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র এ শব্দগুলোকে পচিয়ে ফেলেছেন প্রায়। অথচ প্রায় প্রতিদিনই কোন না কোন নতুন মিডিয়া আত্মপ্রকাশ করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণতন্ত্র, বাক্ স্বাধীনতা ও মানবাধিকার সুরক্ষার কাজে নিয়োজিত আছেন এবং অত্যন্ত নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনসহ সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, জাতীয় ও উন্নয়ন সহযোগী, সিভিল সোসাইটি, গণমাধ্যম, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্ট সবাই নিরলসভাবে কাজ করছেন। মানবাধিকার সুরক্ষায় বাংলাদেশের সাফল্য সর্বমহলে প্রশংসিত। মিয়ানমারে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়া হয়েছে। সরকারের উন্নয়নের সুফল দেশের তৃণমূল পর্যায়ের জনগণও উপভোগ করছে। মাদক, সন্ত্রাস ও দুর্নীতিমুক্ত সমাজ গঠনে বর্তমান সরকারের জিরো টলারেন্স নীতি মানবাধিকার সমুন্নত রাখার ক্ষেত্রে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করছে। স্বাধীনতার ৫১ বছরের মাথায় এসে বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। ৫১ বছরে অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দেশ আবার ঘুরে দাঁড়ানোর জায়গায় এসেছে। ঘুরে দাঁড়ানোর এই অর্জন ১৭ কোটি মানুষের অদম্য পরিশ্রমের ফল।

শিক্ষায় উন্নতি, যোগাযোগের অবকাঠামো, নারীদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বই বিতরণ, সামাজিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত, অসহায়, বয়স্ক, বিধবা, প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য সুরক্ষার সোশ্যাল সেফটি নেট সাপোর্ট প্রদান, সর্বজনীন পেনশন স্কীম, স্বামী পরিত্যক্তা নারীদের সহযোগিতা, অটিজম, প্রধানমন্ত্রীর সরকারের প্রধান উদ্যোগসমূহ বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রধান ভূমিকা পালন করছে। মুক্তিযোদ্ধাদের জাতীয় বীর হিসাবে মর্যাদা প্রদান, আশ্রয়ণ প্রকল্প, একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প, নারীর ক্ষমতায়ন এবং বিভিন্ন সেক্টরের সামগ্রিক উন্নয়ন তাঁর সরকারেরই অবদান। একটি ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আধুনিক বাংলাদেশ গড়ে উঠেছে আধুনিক রাষ্ট্র হিসেবে এটিই আশার কথা।

লেখক: প্রাবন্ধিক ও গবেষক

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.