শেখ ফজলুল হক মনির ৮৩তম জন্মদিনে ছিন্নমূল মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করলেন যুবনেতা তৌহিদুজ্জামান দোলন বিশ্বাস

0

এস এম রিমন হোসেন, ঈশ্বরদী, উপজেলা প্রতিনিধি : মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, মুজিব বাহিনীর অধিনায়ক ও যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান শহীদ শেখ ফজলুল হক মনির ৮৩তম জন্মদিন আজ।

মহান বীর নেতার জন্মদিনে পাবনা ৪ আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নুরুজ্জামান বিশ্বাসের পুত্র, ঈশ্বরদী করোনা প্রতিরোধ কমিটির যুগ্ম আহবায়ক, যুবনেতা তৌহিদুজ্জামান দোলন বিশ্বাস, আজ শনিবার রাত ৯ টার সময় ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশন স্টেশনে বুকিং অফিসে সামনে ছিন্নমূল অসহায় মানুষদের মাঝে প্রয়াত নেতার জন্মদিন উপলক্ষে রাতের খাবার বিতরণ করেন।

এই সময় উপস্থিত ছিলেন ছলিম পুর ইউনিয়নের যুবলীগনেতা রাশেদুল ইসলাম রাশেদ,যবলীগ নেতা মামুনুর রশীদ মামুন, সেলিম , শাকিল, এ আর মিথুন, সাবেক লীগনেতা মিজান মালিথা, ছাত্রলীগ নেতা আমজাদ হোসেন অবুজ, সাব্বির, অনিক ছাত্র নেতা আশিক হায়দার বিশাল, আসিফ সহ অনেকেই।

উল্লেখ্য, ৪ ডিসেম্বর। ১৯৩৯ সালের ৪ ডিসেম্বর টুঙ্গিপাড়ায় শেখ পরিবারে জন্মগ্রহন করেন তিনি। পিতা মরহুম শেখ নূরুল হক বঙ্গবন্ধুর নিকটতম আত্মীয় ও ভগ্নিপতি। মা শেখ আছিয়া বেগম বঙ্গবন্ধুর বড় বোন।

শেখ মনি ঢাকার নবকুমার ইন্সটিটিউট থেকে মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ১৯৫৮ সালে তৎকালিন জগন্নাথ কলেজ (জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়) থেকে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করেন। ১৯৬০ সালে তিনি বরিশালের বিএম কলেজ থেকে বিএ ডিগ্রি লাভ করেন। শেখ মনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ছাত্র ছিলেন। ১৯৬২ সালে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ এবং ১৯৬৩ সালে আইন বিষয়ে ডিগ্রি লাভ করেন।

বাংলাদেশের ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা আন্দোলন পর্যন্ত সকল আন্দোলন সংগ্রামে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে থাকা একটি নাম শেখ ফজলুল হক মনি। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলা বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালনের নিমিত্তে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্দেশে দেশের কল্যাণকামী যুবসমাজকে সাথে নিয়ে ১৯৭২ সালের ১১ নভেম্বর বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ প্রতিষ্ঠা করেন শেখ ফজলুল হক মনি এবং তিনি এই সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।

১৯৬০ থেকে ১৯৬৩ সাল পর্যন্ত শেখ মনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৬২ সালে হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশনের রিপোর্টের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার কারণে তাকে গ্রেফতার করা হয় এবং তিনি ছয় মাস কারাভোগ করেন। ১৯৬০-৬৩ সালে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক থাকা অবস্থায় তৎকালিন সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজের জোরালো আন্দোলনে বলিষ্ঠ হাতে নেতৃত্ব দেন শেখ মনি। ১৯৬২ সালে তৎকালিন পাকিস্তানী সামরিক স্বৈরাচার আইয়ুব খানের চাপিয়ে দেয়া শরীফ কমিশনের অগণতান্ত্রিক ও শিক্ষার্থী স্বার্থবিরোধী শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ায় তিনি গ্রেফতার হন এবং ছয় মাস কারাভোগ করেন।

বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা বাস্তবায়নে জোরালো ভূমিকা পালন করেন শেখ মনি। বঙ্গবন্ধু তখন কারাগারে। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে ১৯৬৬ সালের ৭ জুন ৬ দফার পক্ষে সারাদেশ ব্যাপী হরতাল সফল করে তোলার ভুমিকায় ছিলেন শেখ মনি। ছয় দফা আন্দোলনে এ অগ্রণী ভূমিকা পালনের দায়ে তার বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি হয় এবং তিনি কারারুদ্ধ হন। দীর্ঘ কারাবাস শেষে ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান সফল হওয়ার পর তিনি মুক্তি পান।

৭০ এর নির্বাচনে আওয়ামী লীগ জয়ী হলেও পাকিস্তানিরা ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করলে দেশ মাতৃকার টানে বঙ্গবন্ধুর ডাকে স্বাধীনতার যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন শেখ মনি। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন তিনি। হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে সশস্ত্র প্রতিরোধের লক্ষ্যে দেশের মুক্তিকামী যুবকদের নিয়ে গড়ে তোলেন মুজিব বাহিনী। তিনি ছিলেন মুজিব বাহিনীর অধিনায়ক।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে ঘাতকের বুলেটে নিহত হন শেখ ফজলুল হক মনি।

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.