পার্বত্যাঞ্চলে সেনাবাহিনীকে নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে

0

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার রাইখালীতে ৬ সেনা সদস্য কর্তৃক মারমা কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ পুরোটাই গুজব ও মিথ্যাচার বলে দাবী করেছে মারমা কিশোরী, পাশাপাশি তার পরিবার ও স্থানীয় উপজাতীয় জনপ্রতিনিধিরাও বলেন সোশ্যাল মিডিয়ায় শিক্ষার্থীর ধর্ষিত প্রচারিত সংবাদটি মিথ্যে বানোয়াট এবং গুজব। এ ব্যাপারে কিশোরীর লিখিত ও ভিডিও জবানবন্দী রয়েছে। তাতে যাচাই-বাছাই করে জানা যায় একটি অসাধুচক্র অবান্তর ঘটনা সাজিয়ে এ অপকৌশলটি প্রচারে গভীর ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে বলে এ তথ্যে নিশ্চিত হওয়া গেছে।

উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রামের আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠন সমর্থিত হিল ভয়েজ, সিএইচটি নিউজসহ কিছু স্বার্থান্বেষী ফেসবুক পেইজ কর্তৃক কাপ্তাই উপজেলার রাইখালী ইউনিয়নের মিতিংগাছড়ি আর্মি ক্যাম্পের ৬ জন সাদা পোশাকধারী সেনা সদস্য কর্তৃক একজন মারমা মেয়েকে ধর্ষণ করা হয়েছে বলে গত কয়েকদিন যাবত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার চালিয়ে আসছে এবং আন্দোলন করে আসছে বিষয়টি অনুসন্ধানের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মংকিউ মারমা’র সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩, মঙ্গলবার সকালে যে মারমা মেয়ের বিরুদ্ধে ধর্ষণের মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হয়েছে, বিষয়টি ব্যাপক প্রচারের ফলে মেয়েটি ও তার পরিবার সামাজিকভাবে চরম বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণের লক্ষে পরিবারটি স্থানীয় কারবারীকে সাথে নিয়ে ২ নং রাইখালী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কার্যালয় স্ব শরীরে এসে লিখিত বক্তব্য প্রদান করেছেন একটি স্বার্থান্বেষী মহল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ভাবমূর্তি বিনষ্ট এবং তাদের মারমা পরিবারটিকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য এই ধরনের মিথ্যা বানোয়াট গুজব সংবাদ প্রচার করছে।

মারমা মেয়েটি তার লিখিত বক্তব্যে আরো বলেন স্থানীয় সকল সুশীল সমাজ ও আইন শৃংখলা বাহিনীর নিকট অনুরোধ করেন, ঘটনাটির সরেজমিনে সত্যতা যাচাই বাছাই করা হোক, যারা মিথ্যা গুজব অপ-প্রচার করছে তাদের বিরুদ্ধে যেন আইনগত কঠোর ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়। মেয়েটি ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট লিখিত জবানবন্দী জমা প্রদান করেন। জবানবন্দীতে মেয়েটির ঠিকানা রয়েছে , আমি — মারমা(–), পিতা: — মারমা, মাতা: — মারমা, সাং: মিতিয়াছড়ি, ওয়ার্ড নং: ৭, ডাকঘর: রাইখালী বাজার- ৪৫৩১, থানা: চন্দ্রঘোনা, উপজেলাঃ কাপ্তাই, জেলা: রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলা।

গত ৩/৯/২০২৩ ইং সোশ্যাল মিডিয়ায় সেনাবাহিনীর সদস্যদেরকে নিয়ে একটি অপপ্রচার হয়। তাহা সম্পুর্ন মিথ্যা বানোয়াট ও সাজানো একটি ঘটনা। মূলত, একটি স্বার্থনেসী মহল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী মিতিঙ্গাছড়ি ক্যাম্পের সদস্যদের প্রতি ঈর্ষান্বিত হয়ে অপপ্রচার চালাচ্ছে। বরংচ সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যদের সুনজর থাকায় অত্র এলাকায় প্রতিটি বাড়ি ঘরের মানুষ নিরাপদে বসবাস করতে পারছি। আমাদের এলাকার প্রতিটি মানুষের সাথে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সু-সম্পর্ক রহিয়াছে, তা বিনষ্ট করার জন্য এই অপপ্রচার চালিয়েছে বলে আমি মনে করি। মূলত একজন সেনাবাহিনী সদস্য সাদা পোশাকে আমার বাড়ীর পাশে একটি উদাল গাছ হইতে কান্ড নিতে আসে ঔষুধ হিসেবে ব্যবহার করার জন্য। আমার সাথে একজন ছেলে বন্ধু যার নাম: — মারমা, পিতা: — মারমা, গ্রাম: পূর্ণবাসন, ও মেয়ে বন্ধু: — মারমা, পিতা: — মারমা, গ্রাম: মিতিয়াছড়ি ছিল। ছেলে বন্ধুটি ওনাকে চিনে এবং তার সাথে কথোপকথন হয়। এর পরে তিনি গাছের কান্ড নিয়ে চলে যায়। এই সম্বন্ধে আমার কোন অভিযোগ নাই। আমি সকলের সাথে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে বসবাস করতে চাই। এই আমার জবানবন্দী। এই করারে সুস্থ শরীরে স্বজ্ঞানে কাহারো বিনা প্ররোচনায় নিজ দস্তগত করিলাম।

— মারমা (–)
পিতা: — মারমা
সাং: মিতিয়াছড়ি, রাইখালী
কাপ্তাই, রাঙ্গামটি পার্বত্য জেলা।”

এ ছাড়াও ভিডিও জবানবন্দীতে দেখা যায়, মেয়েটি দাবী করছে, মাত্র ১ জন সেনা সদস্য তাদের বাড়িতে গিয়েছিল। তিনি সাদা পোশাকে বাড়ির বাইরে থেকে তার বন্ধুর সাথে কথা বলে চলে গেছে। কিন্তু তিনি বাড়ির ভেতরে থাকায় তার সাথে কোনো প্রকার দেখা বা কথাও হয়নি। ভিডিও জবানবন্দীতে পুরো ঘটনাকে মিথ্যা ও বানোয়াট বলে দাবী করে মেয়েটি।

এই ব্যাপারে চন্দ্রঘোনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব শফিউল আজম এর সাথে যোগাযোগ করা করা হলে তিনি জানান, রাইখালী ইউনিয়ন এলাকায় এই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি। তিনি বলেন আঞ্চলিক সশস্ত্র সংগঠনগুলো আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে বিশেষ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামে নিয়োজিত আইন শৃংখলা বাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যাচার ও গুজব প্রচার করছে।

তিনি আরো বলেন, রাইখালী ইউনিয়নে মিতিংগাছড়ি নামে সেনা ক্যাম্প নেই। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় মিতিয়াছড়ির কারবারী সাজাই ইউ মারমাসহ, স্থানীয় মারমা সম্প্রদায়ের নেতাগণ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে মিথ্যা গুজব প্রচার করে সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি বিনষ্টকারী স্বার্থান্বেষী আঞ্চলিক তথাকথিত কালো মিডিয়ার বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা ও ঘৃণা প্রকাশ করেন।

এসময় উপস্থিত মারমা সম্প্রদায়ের সদস্যরা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি সম্প্রতি বিনষ্ট করার জন্য আঞ্চলিক সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের একটি মহল এই ধরনের মিথ্যা গুজব প্রচার করে সাধারণ পাহাড়ি জনগোষ্ঠীদের মধ্যে নেতিবাচক মনোভাব তৈরির হেন উদ্দেশ্য লিপ্ত রয়েছে

আপনি এগুলোও দেখতে পারেন

উত্তর দিন

আপনার ইমেইল ঠিকানা প্রকাশ করা হবে না.